টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ ওপেনিং জুটি খুঁজে পাচ্ছে না কোনভাবেই। তাহলে কী অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ স্বীকৃত কোন ওপেনিং জুটি ছাড়াই মাঠে নামবে? নাকি হাঁটবে কোন মেকশিফট ওপেনারের দিকে। বাংলাদেশ কী নতুন কোন ওপেনার খুঁজে আনবে নাকি ভরসা করা হবে পুরনো কাউকে? এই সব প্রশ্নের উত্তরই আপনি পেতে পারেন এই ফ্রেমটা থেকে।
মিরপুরে একসাথে ফ্রেমবন্দী হয়েছেন লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকার। দুজনই অমিত সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে হাজির হয়েছিলেন। শুরুটা লিটনের চেয়ে বরং সৌম্যরই বেশি উড়ন্ত ছিল। তবে সেই ধারটা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলেন সৌম্য এখন লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলেও নেই। নিজেকে ফিরে পাবার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
ওদিকে লিটন দাস এখন দেশের ক্রিকেটের বড় তারকা। ধীরে ধীরে নিজেকে অনেক বেশি পরিপক্ক করে তুলেছেন লিটন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে ইনফর্ম ব্যাটসম্যানও তিনি। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লিটনের জায়গাটা পাকা। বাংলাদেশের হয়ে এক প্রান্তে তিনিই ওপেন করবেন।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে আরেকপ্রান্তে কে থাকবেন লিটনের সাথে? এটাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের শিবিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। একজন ওপেনারের খোঁজ বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই। তবে এবার বিশ্বকাপটা অস্ট্রেলিয়ায় বলে সেই চিন্তাটা আরো তীব্র হয়েছে। কেননা কঠিন কন্ডিশনে ম্যাচের শুরুটা যে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আর অস্ট্রেলিয়ায় পেসারদের সামলানোর জন্য প্রয়োজন সাহসী ও প্রমাণিত ওপেনারই।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচটায় বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করেছেন এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখ। তবে দুজনই ছিলেন ব্যর্থ। এনামুল হক বিজয় এ দফায় জাতীয় দলে আসার পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছেন। তবে কোনটাই কাজে লাগাতে পারেননি। বরং তাঁর ব্যাটিং এপ্রোচ নিয়েও আছে প্রশ্ন।
এছাড়া নাঈম শেখও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছেন। তবে ওপেন করতে নেমেও তাঁর স্ট্রাইক রেট মাত্র একশো ছুঁইছুঁই। এছাড়া ব্যাট হাতে ফর্মটাও খুব একটা সুখকর ছিল না। ফলে টি-টোয়েন্টি দলে আপাতত আর তাঁর বিবেচনায় থাকার কথা নয়।
ওদিকে দলের সাথে ছিলেন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। তরুণ এই ক্রিকেটার একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন। তবে বিশ্বকাপের মত আসরে তাঁকে নামিয়ে দেয়া হবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
সেজন্যই আবার সৌম্য সরকারের কাছে ফিরে যেতে পারে বাংলাদেশ। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেকে খুব একটা প্রমাণ করতে পেরেছেন এমন নয়। তবুও তাঁকে ঘিরে কেন এই আলোচনা? প্রথমত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ওপেনারই খুঁজে পাচ্ছেনা।
আরেকটি বড় কারণ অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন। পেস বোলিং কন্ডিশনে ভালো খেলেন এমন ব্যাটার বাংলাদেশে খুব কমই আছে। যেই কয়েকজন এই ধরনের কন্ডিশনে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারেন তাঁদেরই একজন সৌম্য সরকার। সৌম্য সরকার নিজেকে হারিয়ে খোঁজার পেছনেও অনেক বড় কারণ বাংলাদেশের মন্থর উইকেট।
তবে অস্ট্রেলিয়ার মত কন্ডিশনে সৌম্য কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন সেটা সবারই জানা। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে একজন ওপেনারের কাছ থেকে যে ধরনের শুরু চাওয়া হয় সেটা সবচেয়ে ভালো সৌম্যই এনে দিতে পারেন। ফলে এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লিটনের সাথে সৌম্যের বিধ্বংসী ব্যাটিংটাই ব্যবহার করতে চাইবে বাংলাদেশ।