ফাইনালের আগে ফাইনাল

অবশেষে শেষের পথে। একটা মোটামুটি লম্বা গোছের সময় শেষেই এখন অপেক্ষা সেই লড়াইয়ের। শিরোপার লড়াই। তবে তা তো হবে দিন দুই বাদে। অবশ্য এর আগেই ফাইনালের একটা ঝলক দেখার সুযোগ হয়ে গেল। ফাইনালের দুই দল রাউন্ড রবিনের শেষে ম্যাচে মুখোমুখি ফাইনালের আগে। মাঠের লড়াইটা জমবে!

শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তান, এই দুই দল নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামার আগেই নির্ধারণ করে ফেলেছে ফাইনালের টিকিট। স্রেফ নিয়ম রক্ষার একটা ম্যাচ হয়ে রইলো। তবুও দুই ফাইনালিস্টের মধ্যকার ম্যাচে তো খানিকটা হলেও উত্তাপ ছড়াবার কথা। যোগ্য দুই দল হিসেবেই তাঁরা খেলছে এবারের এশিয়া কাপের ফাইনাল। তবে শুরুটা দুই দলই করেছিল ব্যাকফুটে থেকে।

ফাইনালে খেলা দুই দলই টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে। সম্ভবত এটা একটা কাকতাল। শ্রীলঙ্কার জন্যে শুরুটা যেন ছিল রীতিমত ভুলে যাওয়ার মত। আফগানিস্তান তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল দাসুন শানাকার দলকে। অবাক নয়নে শুধু চেয়ে দেখা ছাড়া যেন কিছুই করার ছিলনা লংকানদের। এমন বাজে হারই যেন তাঁদের উজ্জীবিত করেছে ঘুরে দাঁড়াতে। তাঁরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, দুর্দান্ত কিছু ম্যাচ জয়ের সাক্ষী করেছে এশিয়ার ক্রিকেট সমর্থকদের।

গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচটার ফলাফলটাও এসেছে শেষ ওভারে। আর ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচটা তো ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। শেষওভারের পঞ্চম বল অবধি শ্রীলঙ্কাকে করতে হয়েছে অপেক্ষা। অন্যদিকে পাকিস্তানের গল্পটাও প্রায় একই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শারজাহতে হওয়া লো স্কোরিং ম্যাচটাও গড়িয়েছিল শেষ ওভারে। তাঁর থেকে ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল হাতে থাকা কেবলমাত্র এক উইকেট।

দশম উইকেটে নাসিম শাহর ভয়ডরহীন দুই ছক্কা হাঁকানো শটে ভর করেই পাকিস্তান পৌঁছে যায় ফাইনালে। তাঁরাও শ্রীলঙ্কার মত করে টুর্নামেন্টটা শুরু করেছিল ম্যাচ হেরে। ম্যাচটা তাঁরা আবার হেরেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের বিপক্ষে। ব্যাকফুটে থেকে শুরু করা মানেই যে একেবারে পিছিয়ে যাওয়া তা নয়, সেটাই প্রমাণ করল বাবর আজম আর শানাকার দল।

ফাইনালের আগের নিয়ম রক্ষার ম্যাচটায় পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই দুই দল নামবে কি না সে প্রশ্ন থেকেই যায়। অবান্তরও নয়। শিরোপা জেতায় যেখানে মূল লক্ষ্য সেখানে হেয়ালির সুযোগটা খুব কম। পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই নিশ্চয়ই ফাইনালটা খেলতে চাইবে, জিততে চাইবে দুই দলই। সেদিক বিবেচনায় ইনজুরিমুক্ত রাখতে হবে দলের প্রধান শক্তির জায়গাগুলোকে।

বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়দেরই তো সুযোগটা পাওয়া উচিৎ। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার একটা ভাল সুযোগ হয়ত হতে পারে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচ। তবুও ম্যাচের উত্তেজনা কোন অংশেই তো কমবার কথা। দুই সেরাদল ঠিক কেমন প্রস্তুতি নিয়ে ফাইনালে মাঠে নামবে তাঁর একটা আভাস তো পাওয়া যাবে নিশ্চয়ই। আবার হয়ত জয়ী দলের রসায়নে কোন ধরণের পরিবর্তন হয়ত আনতে চাইবে না দুই দল।

সেক্ষেত্রেও ম্যাচের উত্তেজনা বা লড়াইয়ের তীব্রতা কমবার কোন সুযোগই নেই। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবারও হয়ত দেখা যাবে টস জয়ের ভেলকি। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। এই স্লোগানে দখল বসাতে সম্ভবত চলেই আসবে টস জয় মানে ম্যাচ জয়। তবে তা আরব আমিরাতের প্রেক্ষাপটে হয়ত খাটে। তবে যাই হোক ফাইনালের আগে ডেস রিহার্সেলের দিকে নজর রাখতেই হচ্ছে। হয়ত শিরোপা জয়ী দলের একটা ছায়াও দেখা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link