সত্তর আশি দশকের ক্রিকেট। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ডেনিস লিলি, জেফ থমসন, ক্রেইগ ম্যাকডারমেটদের মতো বাঘা বাঘা পেসারদের ভীড়ে তখন তেমন কোনো স্পিনার নেই বললেই চলে৷ সুনীল গাভাস্কার থেকে দিলীপ ভেঙ্গসরকার, ক্লাইভ লয়েড থেকে গর্ডন গ্রিনিজ, জিওফ বয়কট থেকে ডেভিড গাওয়ার, গ্রেগ চ্যাপেল থেকে অ্যালান বোর্ডার, জহির আব্বাস থেকে জাভেদ মিয়াঁদাদ- সবাই সে সময় পেস বোলিং সামলাতে অভ্যস্ত।
এরপর ক্রিকেটে ওয়ানডে ফরম্যাট আসলো। ক্রিকেট পাড়ায় নতুনত্বের জোয়ার বয়ে গেল। স্পিনাররা আস্তে আস্তে সুযোগ পেতে শুরু করলো। কিন্তু কোনো বৈচিত্র্যতার দেখা মিলল না। ফ্লাট পিচে তো তেমন কার্যকারীই ছিল না৷ তাই দলে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছিলেন না স্পিনাররা। বোলিংয়ে স্পিন নামক টার্মটাই যেন তখন অনাস্থার নাম হয়ে পড়লো।
এর মাঝে স্পিন বোলিংয়ের আলোর দিশারী হয়ে আবির্ভূত হলেন লাহোরের এক ছেলে। যে ছেলেটির কোনো কোচ ছিল না। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করতেন, একজন ব্যক্তি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বোলিং করলেও দিনশেষে তাঁর ব্যাগে কিছু একটা থাকা উচিত। যদি থাকে তাহলে সে লেগস্পিনার। আর কিছু না থাকলে সে লেগস্পিনার নয়।
ফ্রেঞ্চকাট দাঁড়িওয়ালা সেই ছেলেটার নাম আব্দুল কাদির খান। যিনি প্রায় আঁধারে মিশে যাওয়া লেগস্পিন শিল্পকে দিয়েছিলেন নব জীবন।
রাহুল ভট্টাচার্য তাঁর পন্ডিতস ফ্রম পাকিস্তান বইয়ে লিখেছিলেন, ‘আব্দুল কাদিরের বোলিং অ্যাকশন এখনো আমার চোখে ভাসে। সামনে থেকে ওর বোলিং দেখা দারুণ আনন্দের বিষয় ছিল।’
আব্দুল কাদিরের ন্যাচারাল বোলিং অ্যাকশনে অভিভূত ছিলেন রাহুল ভট্টাচার্য। এ জন্য তিনি এ বোলারকে খুব কাছ থেকে ফলো করতেন। কিন্তু হঠাতই একদিন জানতে পারলেন, আব্দুল কাদিরের এটা ন্যাচারাল অ্যাকশন না। তাঁর ন্যাচারাল অ্যাকশন এর চেয়েও ভাল। কিন্তু তিনি ব্যাটারের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার লক্ষ্য করে আর্টিফিশিয়াল বডি ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করেন। যেটার কারণে তিনি বেশ সফলও হতেন।
ভিন্ন সময়ে ভিন্ন অ্যাকশনে বোলিং করার কারণে আব্দুল কাদিরকে অনেক সময় অনেক দর্শক চিনেও উঠতে পারতো না। এ নিয়ে আছে মজার এক কাহিনীও। ইংল্যান্ডে একবার কাদিরের ভিন্নধর্মী অ্যাকশন দেখে ইংল্যান্ডের এক নারী দর্শক চেঁচিয়ে বলে উঠলেন, ‘আব্দুল কাদির। এটা কি তুমি? আমার মেয়ে ক্রিকেট বুঝে না। কিন্তু তোমার বোলিং অ্যাকশন ও খুব পছন্দ করে। এখন যেমন ও বলছে, দেখো মা, আব্দুল কাদির এমনভাবে বল করছে যেন মনে হচ্ছে, ডান্সিং ফ্লোরে কোনো মেয়ে ডান্স করছে।’
বোলার হিসেবে আব্দুল কাদির ছিলেন খুবই এগ্রেসিভ মাইন্ডসেটের। লেগ ব্রেক আর গুগলি, দুটোই তিনি ভাল করতে পারতেন। আর তাঁর ফ্লিপার ছিল আরো ভয়ংকর। এগ্রেসিভ আউটলুকের সাথে বিরামহীন স্ট্যামিনায় কাদিরকে দারুণ এক বোলার হিসেবে তৈরি করেছিল। লেগস্পিনের কথা আসলে আরেকটা নাম মাথায় আসতে বাধ্য। তিনি শেন ওয়ার্ন। মূলত লেগ স্পিনকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আব্দুল কাদির আর লেগস্পিনকে পরিণত রূপ দিয়েছিলেন শেন ওয়ার্ন।
সেই শেন ওয়ার্ন নিজেও আব্দুল কাদিরের লেগস্পিনে অনুপ্রাণিত ছিলেন। এমনকি একবার কাদিরের বাসাতেও তিনি গিয়েছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, সেখানে তারা এক কার্পেটের উপরে কমলা দিয়ে লেগস্পিন বল করেছিলেন।
আব্দুল কাদির গুগলি করতেন দু’ভাবে। একটিতে তিনি বেশি জোরে বল ডেলিভারি করার চেষ্টা করতেন যাতে ব্যাটার পেসে পরাস্ত হয়ে আউট হতে পারে। আর আরেকটিতে তিনি স্লো গুগলি করতেন যাতে ব্যাটার বলের লাইন না বুঝে বোকা বনে যেতে পারেন।
লেগস্পিন নিয়ে বরাবরই উচ্চাকাঙ্খার কথা বলে এসেছেন আব্দুল কাদির। একবার তিনি বলেছিলেন, কোনো কিছুতে সফল না হলেও লেগস্পিন দিয়ে সফল হওয়া যায়। ব্যাটিং পিচ, কিন্তু সেখানেও লেগ স্পিনাররা কার্যকরী হতে পারে। কারণ লেগস্পিনারদের মতো ভেরিয়েশন অন্য কোনো বোলারের থাকে না৷ এমনকি আমি ১০ টা বল ১০ ভাবে করতে পারি। ১০ টা গুগলি, ১০ টা লেগ ব্রেক, ১০ টা ফ্লিপার- সব করতে পারব।
ক্যারিয়ারে ৬৭ টি টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ২৩৬ টি। এর মধ্যে ১৫ বার নিয়েছেন এক ইনিংসে ৫ উইকেট। আর একদিনের ক্রিকেটে ১০৪ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩২ উইকেট। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়েছেন ৯৬০ টি উইকেট। ব্যাট হাতেও করেছেন ২ টি সেঞ্চুরি। ১৮.৩৩ গড়ে করেছেন ৩৭৪০ রান।
আব্দুল কাদিরের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে। সে বারের ভুট্টো কাপে হাবিব ব্যাংকের হয়ে প্রথম ইনিংসেই তুলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। পরের ম্যাচেও বাহাওয়ালপুরের বিপক্ষে ৬ উইকেট নেন। সব মিলিয়ে সে মৌসুমে ৮ ম্যাচে ৩১ উইকেট নিয়েছিলেন আব্দুল কাদির।
এরপর পাকিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ২৯ রানে ৮ উইকেটসহ পুরো ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে জাতীয় দলের রাডারে চলে আসেন কাদির। লাহোরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তাঁর টেস্ট ক্রিকেট অভিষেক হয়।
টেস্ট অভিষেকে ৩২. ৭ ওভার বল করলেও উইকেট পেয়েছিলেন মাত্র একটি। কিন্তু পরের টেস্টেই দেখান ঝলক। ব্রায়ান রোজকে ক্লিন বোল্ড, ডেরেক রান্ডালয় এবং গ্রাহামকে ফ্লাইট দিয়ে পরাস্ত করে সে ইনিংসে কাদির একাই তুলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট।
আব্দুল কাদিরের ফ্রেঞ্চকাটে দাঁড়ি রাখার পিছনেও রয়েছে একটি গল্প। ১৯৮২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফয়সালাবাদ টেস্টের পরে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ঐ বছরেই আবার ফিরে আসেন কাদির। ইংল্যান্ড সফরের জন্য ডাক পান তিনি। পাকিস্তান দলে তখনকার অধিনায়ক ছিলেন ইমরান খান।
তিনি তখন কাদিরকে ফ্রেঞ্চকাটে দাঁড়ি রাখার রাখার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন কাদির। সে সময়ের দর্শকদের মতে, কাদিরকে নাকি তখন জাদুকরের মতো দেখাতো। অবশ্য লেগস্পিনারদের আঙ্গুলে যে জাদু থাকে তাতে চোখেমুখের আবহে জাদুকর হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।
সাল ১৯৮৩। তখন পর্যন্ত আব্দুল কাদির একটিও ওয়ানডে ম্যাচ খেলেননি। তাই বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাবেন না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু অধিনায়ক ইমরান খান আব্দুল কাদিরকে বিশ্বকাপ দলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন।
এজবাস্টনে নিজের ওয়ানডে অভিষেক, একই সাথে বিশ্বকাপেও অভিষেক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আব্দুল কাদির সে ম্যাচে দারুণ বোলিং করলেন। ১২ ওভার বল করে মাত্র ২১ রানেই নিলেন ৪ উইকেট। যদিও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তান সে ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল। কিন্তু ৪ উইকেটের পাশাপাশি অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংসের কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি গিয়েছিল আব্দুল কাদিরের হাতে।
নিজের তৃতীয় ওয়ানডেতেই পাঁচ উইকেটের মুখ দেখেছিলেন কাদির। হেডিংলিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৪৪ রানে ৫ উইকেট। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে সে সময় একজন লেগস্পিনার যে দলের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটকে সেটিরই জানান দিয়েছিলেন আব্দুল কাদির।
আব্দুল কাদিরের সাথে জড়িয়ে আছে ওভালেরও নাম। ১৯৮৭ সালের ওভাল টেস্ট। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে করলো ৭০৮ রান৷ এমন পিচ বোলারদের জন্য বেশ কঠিন। তারপরও ইংল্যান্ড ব্যাটারদের একে একে আউট করছিলেন আব্দুল কাদির। ইংল্যান্ড ৯৯.৪ ওভারে ২৩২ রানে অলআউট হয়ে যায়। কিন্তু ঐ ৯৯.৪ ওভারের মধ্যে কাদির একাই করেছিলেন ৪৪.৪ ওভার। উইকেট নিয়েছিলেন ৭ টি।
কিন্তু ইংল্যান্ড ফলোঅনে পড়ায় আবারো বল হাতে তুলে নিতে হয় তাকে। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। পরের ইনিংসে ৫৩ ওভার বল করার পর দেহ অসাড় হয়ে আসে কাদিরের। অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও তাকে ফিরে যেতে হয় ড্রেসিংরুমে। এর আগে এ ম্যাচ চলাকালীনই ওয়াসিম আকরামকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এমনকি সে ম্যাচেই ইমরান খানও অস্বস্তিতে পড়ে মাঠে থেকে বেরিয়ে যান তিনি৷ দুই খেলোয়াড় বাইরে চলে যাওয়ায় আব্দুল কাদির একাই লড়াই করছিলেন। কিন্তু তিনিও একসময় থামতে বাধ্য হন। আর এভাবেই ওভাল ম্যারাথনে জড়িয়ে পড়ে আব্দুল কাদিরের নাম।
লেগ স্পিন ভেলকির পাশাপাশি আব্দুল কাদির পাকিস্তানের হয়ে বেশ কিছু কীর্তিও গড়েছেন। যা এখনো অক্ষত। পাকিস্তানের হয়ে টেস্টে এক ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডটি তাঁর। ১৯৮৭ সালে লাহোর টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬ রানে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। সব মিলিয়ে সে ম্যাচে ১০১ রানে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। যা এখন পর্যন্ত পাকিস্তানি স্পিনার হিসেবে এক টেস্টে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড।
আব্দুল কাদির সে বারের সিরিজে ৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩০ উইকেট। ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ৩০ উইকেট! প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি ছাড়া এ কীর্তি গড়েছেন মাত্র দুজন। একজন রিচার্ড হ্যাডলি, আরেকজন হরভজন সিং।
জাভেদ মিয়াঁদাদের অনুপস্থিতিতে ইংল্যান্ডের ৫ ম্যাচে ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন আব্দুল কাদির। সেখানেও গড়েছিলেন অনন্য এক রেকর্ড। ৫ ম্যাচে ১২.৬৯ গড়ে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। এর আগে কোনো অধিনায়কের এত কম বোলিং গড়ে সিরিজে দশের বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ছিল না।
আব্দুল কাদির তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিলেন লাহোরে। ওয়েস্ট বিপক্ষে সে ম্যাচে ২ ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছিলেন মাত্র ১ টি উইকেট। কিন্তু সেই একটি উইকেট ছিল আরেক গ্রেট ব্রায়ান লারার। ব্রায়ান লারাই হলেন আব্দুল কাদির শেষ টেস্ট উইকেট।
টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর ওয়ানডেতেও অনিয়মিত হয়ে পড়েন কাদির। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, ১৯৯৩ পেপসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সুযোগ পান। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই আবার ম্যাচ। একটি উইকেটও নিলেন। কিন্তু পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের অষ্টম ওভারে বল করতে গিয়ে গোড়ালিতে আঘাত পান তিনি। আর সেখানেই থেমে যায় কাদিরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার। এরপরে আর কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়নি তাঁকে।
তবে ৪ বছর বাদে আবারো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফেরেন আব্দুল কাদির। প্রত্যাবর্তনেই বাজিমাত। প্রথম ৬ ম্যাচেই নিলেন ৪৮ উইকেট। যদিও পরে মৌসুমে ২ ম্যাচ খেলেই বিদায় নেন তিনি। হাবিব ব্যাংকের হয়ে ক্রিকেটের শুরু, সেই হাবিব ব্যাংকের হয়েই শেষ ক্রিকেট ম্যাচ খেলেন আব্দুল কাদির।
ক্রিকেট থেকে অবসরের পরে কোচিংয়ে মনোনিবেশ করেন কাদির। তিনি মুশতাক আহমেদ আর দানেশ কানিরিয়াকে কোচিং করিয়েছেন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলকেও কোচিং করানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। আর এ প্রস্তাবটি এসেছিল সে সময়ের অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ এবং কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের কাছে থেকে।
কোচিং ক্যারিয়ার ছাড়াও আব্দুল কাদির পিসিবি’র এক্সপার্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে ন্যাশনাল সিলেক্টরস কমিটির প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও ছয় মাস পরে সে পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
আব্দুল কাদিরের পরিবারের পুরোটাই ক্রিকেট আবহে আবদ্ধ। তাঁর নিজের ভাই বাহাদুর ছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার। ৪ ছেলে, রেহমান, সুলাইমান, উসমান, ইমরানও ছিলেন ক্রিকেটার। এমনকি নিজের একমাত্র কন্যা নূরকেও বিয়ে দিয়েছেন একজন ক্রিকেটারের সাথে। এই ক্রিকেটার হলেন উমর আকমল।
আব্দুল কাদিরের যে সমগ্র জীবনই কেটেছে ক্রিকেটের প্রতি অসীম নিবেদনে তা বুঝা যায় তাঁর ক্রিকেট একাডেমির দিকে তাকালে। তরুণ ক্রিকেটার তুলে আনার উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আব্দুল কাদির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট একাডেমি। এই একাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন এ কালের পেসার নাসিম শাহ।
শেন ওয়ার্ন কিংবা অনিল কুম্বলে, দুজনই পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে আব্দুল কাদিরের চেয়ে অনেক এগিয়ে। কিন্তু আজকের লেগস্পিন শিল্পটাকে দাপটের সাথে প্রথম তুলে এনেছিলেন এই আব্দুল কাদির। আব্দুল কাদিরের মুনশিয়ানায় সে সময় মুগ্ধ হয়েছিল ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সহ পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে তো পেয়েছিলেন সরাসরি ব্ল্যাংক চেকের অফার। কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অকপটে। কারণ তাঁর হৃদয়টা জুড়ে ছিল লেগস্পিন আর স্বত্ত্বাজুড়ে ছিল পাকিস্তান। এজন্যই তিনি সবসময় বিশ্বাস করে বলতেন, ‘আমি পাকিস্তানের জন্য, আমার জন্য পাকিস্তান না’।