টি-টোয়েন্টির এক ম্যাচে ৪৫৮ রান! রোজকার কোনো ঘটনা নয়। মানে দুই দল মিলে রীতিমত রানের উৎসবই করেছে।
আর ভারতের গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচের ফলটা ভারতের পক্ষে আসায় যেন আর কথাই নেই। উৎসেবের মৌসুমে এটাকে ভারতের রান উৎসবের রাতও বলাই যায়। ফলাফল নিজেদের হাতে আসার থেকেও বড় ব্যাপার হল রীতিমত ব্যাটিংয়ে পিকচার পারফেক্ট একটা দিন কাটাল ভারত।
লোকেশ রাহুল ২৮ বলে ৫৭, স্ট্রাইক রেট ২০৩.৫৭ – অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৩৭ বলে ৪৩, স্ট্রাইক রেট ১১৬.২২ – বিরাট কোহলি ২৮ বলে ৪৯, স্ট্রাইক রেট ১৭৫, সুরিয়াকুমার যাদব ২২ বলে ৬১, স্ট্রাইক রেট ২৭৭.২৭, দীনেশ কার্তিক ৭ বলে ১৭, স্ট্রাইক রেট ২৪২.৮৬; যে পাঁচজন ব্যাটার ভারতের হয়ে ব্যাট করতে নেমেছেন পাঁচজনই রান পেয়েছেন। একমাত্র রোহিতের স্ট্রাইক রেট নিয়ে সামান্য কথা হতে পারে – বাকিদের ক্ষেত্রে তেমন সমালোচনারও জায়গা নেই।
বিশেষ করে আলাদা ভাবে বলতে হয় সুরিয়াকুমার যাদবের কথা। তাঁর ২২ বলের ইনিংসটাতে বাউন্ডারিই ১০টা। এর মধ্যে পাঁচটি চার ও পাঁচটি ছক্কা। মানে, ৫০ রানই তিনি করেছেন বাউন্ডারি থেকে। এর বাদে বাকি ১২ বলে নিয়েছেন ১১ রান। টি-টোয়েন্টির জন্য এর চেয়ে মানানসই ইনিংস আর সম্ভব নয়। তিনিই এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টির সেরা ব্যাটার কি না – সে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। তাকে আরও ওপরে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর দাবি দিনকে দিন জোরদার হতে চলেছে।
গুয়াহাটিতে ডেথ ওভারে দু’দলই পাল্লা দিয়ে রান তুলেছে। শেষ পাঁচ ওভারে ভারত তুলেছে ৮২ রান, আর একই সময়ে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৭৮। মানে মোট ১৬০ রান। ডেথ ওভারে কোনো টি-টোয়েন্টিতেই এর আগে এত রান দেখা যায়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন চাইলে দুষতে পারে নিজেদের অধিনায়ককেই। টেম্বা বাভুমা রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন সাজঘরে। যদিও, এর আগে খেলেন সাতটা ডেলিভারি। দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছে ১৬ রানে। এই রান বন্যার ম্যাচে সাত বলে ১৬ রান তোলাটা আহামরি কিছু নয়।
টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মত কোনো ব্যাটার পাঁচ নম্বর কিংবা এরপর নেমে দু’টো সেঞ্চুরি পেলেন। তিনি ডেভিড মিলার। এই রাতে খেলেন ৪৭ বলে ১০৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। পাঁচ বছর আগে পচেফস্ট্রমে বাংলাদেশের বিপক্ষেও ৩৬ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। সেই ম্যাচে দলের জয় নিশ্চিত করতে পারলেও এবার আর পারেননি।
এই রাতটা শুধুই ভারতের!