টি-টোয়েন্টিতে বা সীমিত ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পছন্দের ব্যাটিং পজিশন তিন নম্বর। ক্যারিয়ারে খেলা ৯৯ ইনিংসের মধ্যে ৪০ ইনিংসেই এখানে ব্যাটিং করেছেন তিনি। এই ৪০ ইনিংসে বেশ সফলও তিনি। ২৮.৭২ গড়ে করেছেন ১০৩৪ রান। আবার ১০ ফিফটির ৭ টি করেছেন তিনে ব্যাটিং করে। নতুন খবর হলো, দলের স্বার্থে এই পজিশন ছেড়ে দিতে হচ্ছে তাঁকে। আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজ ও বিশ্বকাপে খেলতে পারেন চার নম্বরে।
তিন নম্বরে সামগ্রিকভাবে সফল হওয়া স্বত্ত্বেও কেন সাকিবকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? মূলত নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে আসার পর বাঁ-হাতি এই ব্যাটার ব্যাট হাতে তিন নম্বরে ছিলেন বেশ বিবর্ণ। ২৫ ম্যাচে ১১১.৬৮ স্ট্রাইক-রেটে করেছেন ৪৭৮ রান। যেখানে তাঁর ফিফটি ছিল মাত্র একটি। এ ছাড়া সদ্য শেষ হওয়া সিপিএলে সাকিব ব্যাট করেছিলেন ৪ নম্বরে। একমাত্র পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসটি তিনি চারে ব্যাট করেই পেয়েছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্টও তাই এই মুহূর্তে মনে করছে সাকিব চারেই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত হতে পারেন।
এ ব্যাপারে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘সাকিব তিনে ব্যাট করবে কিনা তা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি । সিপিএলে সে চারে ব্যাট করেছে এবং ভালো খেলেছে। আমি মনে করি অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে সাকিব চারেই ভাল করবে। আর এ ধরনের আলাপ সাকিবের সাথে খোলামনেই করা যায়। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আমরা তাঁর সাথে কথা বলেছিলাম। তিন বা চারে ব্যাটিং করতে তার কোন সমস্যা হবে না বলেই সে জানিয়েছে।’
যদিও, কিছুদিন আগেই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু চার নম্বরের জন্য বলেছিলেন লিটন দাসের কথা। আর চার নম্বরে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে ‘পারফেক্ট’ বলেই মনে করে টিম ম্যানেজমেন্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও তিনিই নেমেছেন চারে। লিটন ছিলেন তিনে। এখন তাহলে সাকিবকে জায়গা দিতে কি লিটনকে নেমে যেতে হবে পাঁচে?
সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো সাকিব যে কোনো জায়গায় ব্যাট করতে প্রস্তুত। অনেকেই মনে করে ও তিন নম্বর ছাড়া কোথাও ব্যাট করবে না। কিন্তু সত্যিটা হল দলের প্রয়োজনে সে যে কোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় তাই সাকিবকে চারেই দেখা যাবে আর অন্য কেউ তিন নম্বরে ব্যাট করবে।’
তিনে সাকিবের ব্যর্থ হওয়া নিয়েও হাবিবুল বাশার সুমন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মূলত তিনে ব্যাট করতে নামলে সাকিবকে একই সাথে রান ও রানের গতি সামলে ব্যাট করতে হয়। কারণ বাংলাদেশ পাওয়ার প্লে তেই বেশি প্রেশার সিচুয়েশনে থাকে। আর এই প্রেশারটা সাকিবের কাছেই বেশিরভাগ সময় এসে পড়ে। এজন্য কিছু শট খেলে দারুণ শুরু করার পরও ওকে হঠাৎই আউট হতে যায়। আর একারণেই ব্যক্তিগত ইনিংস বিল্ড আপ হয় না। তাই আমরা ওকে দিয়ে চারে ট্রাই করতে যাচ্ছি যাতে মিডল অর্ডার ব্যাটারদের সাথে ওর সমন্বয় থাকে।’
সাকিবের জন্য অবশ্য চার নম্বর পজিশন নতুন নয়। তিনের পর বেশি ইনিংস খেলেছেন এই পজিশনে ব্যাট করেই। ৩৫ ইনিংসে রান করেছেন ৬৮২। ৭ অক্টোবর, শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। সেখান থেকেই হয়তো চার নম্বরে ব্যাট হাতে দেখা যাবে সাকিবকে। যদিও চার নম্বর পজিশন তাঁর চেনা জায়গা তারপরও পুরনো জায়গাতে কেমন নতুনত্ব আনতে পারেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।