মিডল অর্ডার ক্রাইসিস ইজ সলভড!

সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের বিশ্বকাপের ঠিক আগেভাগে পাকিস্তান দলের উপর থাকা শঙ্কার কালো মেঘগুলো একে একে সরে গিয়ে যেন সৌভাগ্যে পরিণত হতে শুরু করেছে। প্রথমে ইনজুরি কাটিয়ে প্রধান পেসার শাহীন আফ্রিদির মাঠে ফিরে আসা, এরপর এতোদিনের সমালোচিত মাথাব্যথা মিডল অর্ডারের সমস্যারও একটা সূরাহা হয়ে গেল।

সম্প্রতি পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ড মিলে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। শেষমেশ এই ত্রিদেশীয় সিরিজের চ্যাম্পিয়ন হলো মেন ইন গ্রিনরা। তাও মিডল অর্ডারে ভর করেই পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল ম্যাচটি জিতে নেয় বাবর আজমের দলটি।

এশিয়া কাপের পর থেকে এই অবধি মিডল অর্ডার ক্রাইসিস দলটিকে ভুগিয়েছে বেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলটির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো সমস্যাটির সমাধানের পথ খোঁজা। সেইজন্যে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক ফর্মূলা প্রয়োগ করছিলো দেশটির টিম ম্যানেজমেন্ট।

এশিয়া কাপের পর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজে ফর্মে থাকা শান মাসুদকে সুযোগ দিয়ে দেখেছিলো, যদিও তাঁর স্ট্রাইক রেট সন্তুোষজনক ছিল না। তাছাড়া একে একে ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, আসিফ আলী সবাইকেই খেলিয়ে দেখেছে দেশটির টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু কোন ফর্মূলাই যেন কাজে দিচ্ছিলো না।

শেষমেষ ত্রিদেশীয় সিরিজে সাফল্য পেয়েছে পাকিস্তান। মিডল অর্ডার ব্যাটার হায়দার আলী ও মোহাম্মদ নওয়াজ দারুণ চমক দেখিয়েছেন। এতোদিন পাকিস্তান দল যে সহজ সমীকরণে জিততো তা থেকে অবশেষে বেরিয়ে এসেছে দলটি। সমীকরনটি এতোদিনে সবার জানা।

টপ অর্ডার ব্যাটার বাবর-রিজওয়ান ভালো করবেন, দল জিতবে। আর তাঁরা খারাপ করলেই পাকিস্তানের কপালে হার জুটবে। বাকি ব্যাটাররা যেন ছিলো দুধভাত। অবশেষে সেই চক্রটির অবসান হয়েছে। পাকিস্তানের মিডল অর্ডার রান পেতে শুরু করেছে, দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপের প্রাক্বালে পাকিস্তানের জন্য তা ইতিবাচক এক খবর।

ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের পর বিশ্বকাপের পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম বলেন, ‘এই জয় একটি পার্থক্য তৈরি করবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। আমরা যেভাবে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছি, এটা বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে অনেক সাহায্য করেছে। সিরিজ জেতার পর এখন আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। আমরা বিশ্বকাপেও আমাদের এই ধারা বহন করার চেষ্টা করব।’

মিডল অর্ডার বিষয়ে বাবর বলেন,যখন আপনি বিশ্বকাপের ঠিক আগে এই ধরনের পারফরম্যান্স পান, তখন আপনি একটি দল হিসাবে অনেক আত্মবিশ্বাস অর্জন করবেন। আমি বিশ্বাস করি আমাদের মিডল অর্ডার পারফর্ম করবে। আমরা তাদের সমর্থন করছি। যেভাবে ইফতি (ইফতিখার) এবং বিশেষ করে নওয়াজ এবং তার আগে শাদাব (খান) খেলেছে, নিঃসন্দেহে মিডল অর্ডারে উন্নতি হচ্ছে। এবং বিশ্বকাপের আগে এগুলো আমাদের জন্য ভালো লক্ষণ।’

তাছাড়া নিজেদের বোলিং লাইন আপ নিয়েও সন্তুষ্ঠ বাবর। তিনি জানান, ‘আমাদের পেস আক্রমণ খুবই শক্তিশালী। তাছাড়া শাহিনের ফিরে আসার সাথে সাথে তা আরও শক্তিশালী হবে।’

সবমিলিয়ে পাকিস্তান এখন ব্যাটিং ও বোলিং দুই দিকেই দারুণ শক্তিমত্তা নিয়ে মাঠের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। এবারের বিশ্বকাপ মিশন সফল করে তাঁরা তাঁদের অধরা এশিয়া কাপের গ্লানি গুছিয়ে দিতে চাইতেই পারে। তবে এই আসরে ওয়ান অব দ্য ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে মেন ইন গ্রিনরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link