একটা ছবি। সেখানে ষোল দেশের ষোলজন অধিনায়ক। বিশ ওভারের বিশ্বসেরা বাছাইয়ের প্রতিযোগিতার প্রাক্কালে কাঙ্খিত শিরোপার সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল সব অধিনায়কদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন হয়ে গেল। ‘ক্যাপ্টেনস মিডিয়া ডে’, মানে অধিনায়করা ছবি তুলবেন, গণমাধ্যমের আবদার মেটাবেন।
আজ যেই শিরোপার পাশে ভিনদেশের ষোলজন প্রতিনিধি শোভা পাচ্ছে, কয়টা দিন পরেই এই শিরোপাটিই কেবল একজন ভাগ্যবান ও যোগ্য অধিনায়কের হাতে উঠবে। সেই সাথে দলটির জুটবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে বিশ্বসেরার তকমা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল ছিলো অস্ট্রেলিয়া। সেই হিসেবে এবারের আসরের মোস্ট ফেবারিট দল অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি আয়োজক দেশ হওয়ার সুবাদে এবং নিজেদের কন্ডিশন সবচেয়ে ভালো বোঝার দরুন বাড়তি সুবিধা এই প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়াকে সবার শীর্ষেই রাখবে।
এদিকে ভারত এমন একটি দেশ, যারা এবারের শিরোপাটির অন্যতম শক্তিশালী দাবীদার। কারণ ২০০৭ সালে এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথমবারের চ্যাম্পিয়ন ছিলো মেন ইন ব্লু রা। তাছাড়া ভারত বর্তমানে বেশ শক্তিশালী একটি দল। দলে কিছুটা টানপোড়েন চললেও তাঁদের এমন কিছু বিশ্বমানের ক্রিকেটার আছেন, যারা একা হাতেই ভারতের ভাগ্য বদলাতে সক্ষম।
বর্তমান ক্রিকেটীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড অবশ্যই ফেভারিটদের মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের সম্ভাবনাও আপনি উড়িয়ে দিতে পারবেন না। দলটি কন্ডিশন নির্বিশেষে বিশ্বকাপের মঞ্চে তাদের খেলা সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য পরিচিত।
আর শ্রীলঙ্কা তো সম্প্রতি এশিয়া কাপ শিরোপা অর্জন করেই সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এশিয়ার সেরা দেশটি যে এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্বের সেরা দল হওয়ার জন্য একটা জোর চেষ্টা দিবে সেকথা তো অনুমেয়। তাছাড়া শ্রীলঙ্কার তারুণ্য নির্ভর বর্তমান দলটি দ্বারা যেকোনো অসাধ্য সাধন করাই সম্ভব।
পাকিস্তানকেও আপনি এই তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবেন না। দুর্দান্ত পেস হাতিয়ার সম্পন্ন দলটিতে রয়েছেন বাবার আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো বিশ্বমানের ব্যাটার। তাছাড়া দলটির মিডল অর্ডার ব্যাটাররাও তাঁদের দিনে একা হাতে ম্যাচের চাকা ঘুরাতে সক্ষম। পাকিস্তান এবার ব্যাটিং এবং বোলিং দুই লাইনআপেই শক্তিশালী দল নিয়ে মিশনে নামতে যাচ্ছে।
অবশ্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই আনপ্রেডিক্টেবল ব্যাপার। আপনি সবসময় হিসেব-নিকেষ কষে এর ফলাফল আগ থেকে অনুমান করতে পারবেন না। যেমন গেল এশিয়া কাপে কি এক দুর্দান্ত রূপ দেখিয়েছে আফগানিস্তান! কেইবা আগ থেকে ভেবেছিলো অস্ট্রেলিয়া এবার সুপার ফোরের একটি দল বনে যাবে। যেমনটা ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জশ বাটলার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যেকোন কিছুই হতে পারে।’
তাও কোন একটি আসর শুরু হলেই ফেবারিট, আন্ডারডগ কিংবা আন্ডাররেটেড এসব আলোচনা চারদিকে ঘুরপাক খাবেই। দিন যত বাড়বে ক্রিকেটপ্রেমীদের উত্তেজনা বাড়বেই। চারদিকে পছন্দের দল নিয়ে মাতম বাড়তেই থাকবে। এশিয়ার সেরা হওয়ার মিশনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নামবে সবগুলো দল। দিনশেষে শিরোপা উঁচিয়ে শেষ হাসিটা কে হাসবে সেই অপেক্ষায়ই থাকবে সবাই।