মুমিনুল হক নিজে দুই ইনিংসেই হয়েছেন ব্যর্থ। নিজের উইকেট হারিয়ে ডাগ আউটে বসে শেষ বেলায় ইরফান শুক্কুর আর হাসান মুরাদের ব্যাটিং দেখছিলেন। এই দুজন তবুও দিনটা শেষ করে আসতে পেরেছেন চট্টগ্রামের হয়ে। আর খানিক মন খারাপ নিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে ফিরছিলেন মুমিনুল হক। নিজে রান করতে পারেননি, তবুও সাংবাদিকদের জানালেন এরকম উইকেটই ভালো ভাই।
উইকেটে আছে সতেজ ঘাস, খেলাও হচ্ছে ডিউক বলে। আর এতেই মিরপুরের উইকেটেও স্যুইং আদায় করে নিচ্ছেন পেসাররা। মুমিনুল হকের মত ব্যাটারের জন্যও রান করাটা যেন ভীষণ কঠিন কাজ হয়ে উঠেছে। দুই ইনিংসেই ছিলেন ব্যর্থ, পরাস্ত হয়েছেন পেসারদের স্যুইংয়ে।
ব্যাটসম্যানদের জন্য রান করা কঠিন এটা স্পষ্ট। মুমিনুলও রংপুরের বিপক্ষে দুই ইনিংসে যথাক্রমে করেছেন ১৩ ও ২২ রান। অথচ টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া মুমিনুল হকের জন্য রানে ফেরাটা, নিজেকে প্রমাণ করাটা অনেক বেশি জরুরী। যে উইকেটে মুমিনুল রান করতে পারছেন না সেই উইকেটকেও কেন ভালো বললেন মুমিনুল?
কেননা মুমিনুলদের জন্য আসলে দেশের ক্রিকেটের এগিয়ে যাওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন পেস সহায়ক উইকেটে খেললেই তো আসল পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হয় ব্যাটারদের। এছাড়া পেসারদের জন্যও বড় সুযোগ এই উইকেটে নিজেদের প্রমাণ করা। আবার স্পিনারদের উইকেট পেতে হলেও করতে হবে বাড়তি কিছু।
আর এমন উইকেটে খেলার মাধ্যমে ব্যাটাররাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য নিজেদের প্রমাণ করতে পারবেন। কেননা দেশের বাইরে অধিকাংশ সময়ই এমন উইকেটে টেস্ট ম্যাচ হয়। যেখানে হঠাত করে খেলে মানিয়ে নিতে পারেননা ব্যাটাররা। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মত কন্ডিশনে রান করতে হলে এমন উইকেটে খেলেই মানিয়ে নিতে হবে বলে মনে করেন মুমিনুলরা।
মুমিনুল দুই ইনিংসেই পেসারদের কাছে নিজের উইকেট হারিয়েছেন। পরাস্ত হয়েছেন মুভমেন্ট সামলাতে গিয়েই। তবুও মাঠে যে গুটি কয়েক সাংবাদিক ছিলেন তাঁদের সবারই নজর মুমিনুলের দিকে। কেননা সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক আবার দলে ফিরতে হলে এই ম্যাচ গুলোতে রান করা ভীষণ জরুরি।
সেজন্যই দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মুমিনুল যখন ড্রেসিং রুমের দিকে ফিরছিলেন তখন তাঁর কাছ থেকে একটু উইকেট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছিলেন সাংবাদিকরা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কথা বলতে না চাইলেও আড্ডার ছলে এই ব্যাটার জানালেন এমন উইকেটে খেলা হওয়াই ভালো। ব্যাটার, বোলার সবার জন্যই। আর ডিউক বল নিয়ে বেশ খুশিই এই ব্যাটার। মুমিনুল শুধু এটুকু বললেন, ‘ভাই, এমন উইকেটে খেলাই ভাল।’
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগ মাঠে নেমেছিল রংপুরের বিপক্ষে। চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন আপ বেশ শক্তিশালী। ওপেন করছেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর মুমিনুল হক, শামীম পাটোয়ারি, ইরফান শুক্কুররাও আছেন লাইন আপে। তবুও রংপুরের পেসাররা বড় রান করতে দেননি কাউকেই।
প্রথম ইনিংসে মুশফিক হাসান ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধই নিয়েছেন সাত উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও এখন পর্যন্ত সবগুলো উইকেট পেয়েছেন রংপুরের পেসাররা। জাতীয় দলের তিন ব্যাটার তামিম, জয় কিংবা মুমিনুল কেউই রানের দেখা পাননি।
সব মিলিয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগে পেসারদের এমন সাফল্য দেশের ক্রিকেটের জন্যই ভালো মনে করছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই। তবুও তামিম, জয় কিংবা মুমিনুলদের ব্যাটে নিশ্চয়ই রান দেখতে চাইবেন দেশের ক্রিকেট ভক্তরা। সামনের টেস্ট সিরিজ গুলোর প্রস্তুতি হিসেবেও তো তাঁদের ব্যাটে রান থাকাটা ভীষণ জরুরি।