আগের ম্যাচেই তাঁরা হারিয়েছে টি-টোয়েন্টির অন্যতম শক্তিধর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। হারানোর সাথে সাথে সুপার টুয়েলেভেও জায়গা করে নিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের এখন তো আকাশে ওড়ারই কথা। তবে এক ম্যাচের ব্যবধানে পাল্টে গেল আয়ারল্যান্ড। সুপার টুয়েলেভের নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়ন্ত আইরিশদের নয় উইকেটে হারিয়ে মাটিতে নামিয়ে আনলো শ্রীলঙ্কা।
হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। তবে নিজের সিদ্ধান্তকে নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে লাহিরু কুমারার বলে বোল্ড হয়ে। শুরুতেই অধিনায়ককে হারানো আয়ারল্যান্ড এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাঁকে।
আগের ম্যাচের নায়ক পল স্টার্লিং ২৫ বলে ৩৪ করে আউট হয়ে গেলে ১০ ওভার শেষে আইরিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ৬০ রান। এখান থেকে হ্যারি টেক্টর ও কোভিড আক্রান্ত জর্জ ডকরেল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও তাদের রান তোলার গতি ছিল খুবই কম।
১৭ তম ওভারের পঞ্চম বলে জর্জ ডকরেল আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে শেষ ৩.১ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে মাত্র ২১ রান যোগ করে আয়ারল্যান্ডের লোয়ার অর্ডার। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রানে শেষ হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। সর্বোচ্চ ৪২ বলে ৪৫ রান করেন ডানহাতি ব্যাটার হ্যারি টেক্টর। শ্রীলঙ্কার মহেশ থিকসানা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দুইটি করে উইকেট নেন।
১২৮ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমূখী ছিলেন দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।পাওয়ারপ্লেতেই বিনা উইকেটে ৫০ রান তুলে নিয়ে আয়ারল্যান্ডের টার্গেটকে একদম মামুলি বানিয়ে ফেলেন দুজনে।
নিয়মিত ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার বদলে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে মাঠে নামা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৫ বলে ৩১ রান করে দলীয় ৬৩ রানের মাথায় বিদায় নেন। ব্রেকথ্রু পাওয়া আয়ারল্যান্ডের ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিলো তবে একাদশ ওভারে গ্যারেথ ডিলানির বলে চারিথ আসালাঙ্কা ক্যাচ তুললেও জর্জ ডকরেল তা হাতে জমাতে ব্যর্থ হলে এবং এর পরের ওভারে সিমি সিং কুশল মেন্ডিসকে রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করলে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয় তাঁরা।
ইনিংসের ১৩ তম ওভারে কুশল মেন্ডিস টানা দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন। এরপর দুই ব্যাটার মিলে আয়ারল্যান্ডের বোলারদের আর কোনো সুযোগ না দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছায়। মাত্র ১৫ ওভারেই এক উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় লঙ্কানরা। কুশাল মেন্ডিস ৪৩ বলে ৬৮ রান ও চারিথ আসালাঙ্কা ২২ বলে ৩১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। আয়ারল্যান্ডের হয়ে গ্যারেথ ডিলানি একমাত্র উইকেট নেন।
গ্রুপ ১ এর আগের দুই ম্যাচে জয়ী দল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের সাথে শ্রীলঙ্কার খাতায়ও দুই পয়েন্ট যোগ হলো। দারুন ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা হন শ্রীলঙ্কার ওপেনার কুশল মেন্ডিস।
সম্ভাব্য কোভিড আক্রান্ত হয়েও এদিন আয়ারল্যান্ডের হয়ে মাঠে নামেন অলরাউন্ডার জর্জ ডকরেল।ম্যাচে খেললেও আয়ারল্যান্ডের হয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকায় রাখতে পারেননি অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। বোলিং না করলেও ব্যাট হাতে ১৬ বলে ১৪ করে ও ফিল্ডিংয়ে চারিথ আসালাঙ্কার ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে মোটামুটি ব্যর্থই বলা যায়। ম্যাচে খেললেও তিনি কোনো আইরিশ কিংবা শ্রীলঙ্কান কোনো খেলোয়াড়দের সংস্পর্শে আসেননি।