চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়। তাও আবার বিশ্বকাপের মঞ্চে। টিম ইন্ডিয়ার সময় কাটছে তাই চনমনে মেজাজেই ৷ তার উপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বৃষ্টির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় ভারতের জন্য সেমি ফাইনালে ওঠার সমীকরণ বেশ সহজই হয়েছে।
গ্রপে থাকা তুলনামূলক তিন কম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, জিম্বাবুয়ে আর বাংলাদেশকে হারালেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করে ফেলবে তারা। সেই পথ যাত্রায় পরের ম্যাচেই সিডনিতে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে ইন্ডিয়ান ব্লুজরা।
তবে সেই ম্যাচের আগে আলোচনায় এসেছে অন্য একটি ইস্যু। আজ বাদে কাল ম্যাচ। তবে ভারতীয় ক্রিকেটাররা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে আইসিসির খাবার ব্যবস্থাপনা নিয়ে। সিডনির আবহাওয়াটা এখন ঠিক অনুকূলে নয়।
তাপমাত্রার নিম্নচাপে ঠাণ্ডা হাওয়ার সাথে ক্ষণে ক্ষণে হালকা বর্ষণও হচ্ছে। আর এমন ঠাণ্ডা আবহাওয়াতেই কিনা ভারতের গোটা দলটাকে দুপুরের খাবার হিসেবে ঠান্ডা স্যান্ডউইচ আর তার সাথে ফ্রুটস দেওয়া হচ্ছে। আর এতেই বেঁকে বসেছে ভারতের ক্রিকেটাররা। অবশ্য তাতে সামান্যতম অযৌক্তিকতাও নেই। বিশ্ব ক্রিকেটের এত বড় আসর। অথচ খাদ্য সরবরাহে এত উদাসীনতা! এটি নিয়ে তাই কথা উঠিয়েছে ভারতের ক্রিকেটাররা।
এ নিয়ে বিসিসিআই এর এক অফিশিয়াল সূত্রে জানা যায়, প্র্যাকটিস সেশন শেষে ক্রিকেটাররা লাঞ্চ আইটেম প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু দেয়া হয় স্যান্ডউইচ আর ফ্রুটস। যেটির মানও খুব একটা ভাল ছিল না। আর এ কারণেই ক্রিকেটাররা সেই খাবার না খেয়ে হোটেলে ফিরে যায়। কারণ সবাই লাঞ্চ করতে চেয়েছিল। কারণ ঐ সময়টা কোনো ব্রেকফাস্ট কিংবা বিকালে স্ন্যাক্স টাইম ছিল না।
খাবারের এমন অব্যবস্থাপনা নিয়ে আইসিসি’র কাছে অভিযোগ করেছে ভারত। আর সেই অভিযোগ আমলেও নিয়েছে আইসিসি।
তাদের থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা তাদের কাছ থেকে আনঅফিশিয়ালি একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সেটা খতিয়ে দেখছি। আইসিসি ফুড এবং লজিস্টিক সাপোর্ট গুলো ভালভাবেই তত্ত্বাবধান করে। তবে বিশ্বকাপে আয়োজক দেশরাই মূলত ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনা করে। আর অস্ট্রেলিয়া যেহেতু এবারের বিশ্বকাপের হোস্ট তাই তারাই খাবার ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনাগুলোর দেখভাল করছে। সেখানে লাঞ্চের জন্য তারা এবার কোনো ইন্ডিয়ান ফুড রাখেনি। আর এখানেই সমস্যাটা হয়েছে। এটা ভারতের জন্য যেমন, অন্য দেশগুলোর জন্যও ঠিক তেমন।’
যদিও পরবর্তীতে জানা যায়, ভারতীয় ক্রিকেটার যারা লাঞ্চ চেয়েছে তারা হোটেলে গিয়েই সেটা পেয়েছে। তাই খুব একটা সমস্যায় পড়েনি কেউই। তারপর বিষয়টি হালকা ভাবে নেননি বিসিসিআইয়ের এক অফিশিয়াল।
তিনি বলেন, ‘যত যাই হোক লাঞ্চের সময় শুধু প্লেইন স্যান্ডউইচ কোনো খাবার হতে পারে না। তার উপর সেটি ঠাণ্ডা ছিল। এটা পুরোপুরি অপেশাদারিত্ব।’
এর আগের অস্ট্রেলিয়ায় এবারের বিশ্বকাপের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দর শেবাগ। আর এর কিছুদিন বাদেই বিশ্বকাপ চলাকালীন ক্যাটারিং সার্ভিস নিয়ে পুরো ভারতীয় দল অভিযোগ তুলল। বিশ্বকাপের মতো বৈশ্বিক আসরে এমন চিত্র সবার জন্য তাই বিব্রতকরই।
তবে এমন চলতে থাকলে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়বে অস্ট্রেলিয়াই। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনেই এত ভজকট পাঁকিয়ে ফেললে বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে নিশ্চিতভাবেই তাদের আতিথেয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আর সেটি হলে অজিদের জন্যও নিশ্চয় সুখকর কিছু হবে না।