মাঠ ভেজা ছিল খানি। এর মধ্যেই খেলা গড়িয়েছে। তাতে দুই অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও রোহিত শর্মার সায় ছিল। ফলে, বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই। বরং, লিটন দাসের রান আউটের ঘটনায় খানিক আক্ষেপ বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, ডিএল মেথডে হিসাবের গড়মিল হওয়ার অভিযোগও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করেছেন কেউ কেউ। সেটা অবশ্যই মনগড়া। কারণ, এত বড় একটা ইভেন্টে এত বড় ভুল কারও চোখে পড়েনি – তা হতে পারে না। অন্তত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অ্যানালিস্টের চোখে আসা তো উচিৎ।
কিংবা ম্যাচ শেষে সেটা নিয়ে বাংলাদেশ দল তো উচ্চবাচ্য করবে। তাও হয়নি। ফলে, এটাকে বড় কোনো কোনো ষড়যন্ত্র বলে রায় দেওয়ার সুযোগ নেই।
তবে, একটা বিতর্ক আছে। বাংলাদেশের ইনিংসে নাকি ফেক ফিল্ডিংয়ের ঘটনা ঘটে। তখন রান তাড়া করতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাট করছিলেন। ওই সময় একটি ‘ফেক ফিল্ডিংয়ের’ ঘটনা ঘটেছিল বলে বিশ্বাস বাংলাদেশ দলের।
খেলা শেষে মিক্সড জোনে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তার একটু আঁচ দিয়ে গেছেন সোহান। তিনি বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাঠ যে ভেজা, আপনারাও দেখছেন বাইরে থেকে, আমরাও দেখছি। ইভেনচুয়ালি আমার কাছে মনে হয় যে, যখন আমরা কথা বলি… একটা ফেক থ্রোও ছিল। যেটায় ৫ রান পেনাল্টি হয়তো হতে পারত। যেটা আমাদের দিকে আসতে পারত। দূর্ভাগ্যবশত সেটাও আসেনি।’
যদিও, সোহান এই ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। তাই ঠিক কোন ডেলিভারিতে বা কখন ওই ঘটনা ছিল, তা অবশ্য বিস্তারিত জানা যায়নি। দলের নানা সূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে, বৃষ্টির ঠিক আগের ওভারে সেটি ছিল। ভারতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেলের করা ওই ওভারে দুটি ডাবলস হয়েছে। এর কোনো একটিতেই ফেক ফিল্ডিং করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ দল।
ব্যাটার শান্ত তখনই আম্পায়ারকে জানান। কিন্তু আম্পায়াররা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের চোখে পড়েনি এমন কিছু। সাত ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৬৬ রান। তখনই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টি বিরতির সময় দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরামও এটা নিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেও। তখনও আম্পায়াররা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। ফেক ফিল্ডিংয়ে অভিযেগা সত্যিই হয়ে থাকলে, সেখানে বাংলাদেশ দল পেনাল্টি পেত। যোগ হত পাঁচ রান। পাশাপাশি বলটি ডেড হতো। দল হেরেছে ওই ৫ রানেই।
এবার প্রশ্ন হল ফেক ফিল্ডিং কি? ফেক ফিল্ডিংয়ের ধারণা ক্রিকেটে খুব পুরনো কিছু নয়। ২০১৭ সালে আইসিসি নিয়ম চালু করে। তাঁদের আইন বলছে, মাঠের কোনো ফিল্ডার তার কথা বা কাজ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানের মনোযোগ অন্যদিকে নিলে, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেন কিংবা বাধার সৃষ্টি করলে, তা বেআইনী হবে। এবং এক্ষেত্রে দলের স্কোরের সাথে পাঁচ রান যোগ হবে, মানে পাঁচ রান পেনাল্টি পাবে।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচেও তেমনই কিছু ঘটেছিল বলে দাবি বাংলাদেশের। তবে, আইসিসির আইন বলছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা আসতে হবে আম্পায়ারের কাছ থেকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ম্যাচের দায়িত্বে থাকা দুই আম্পায়ার – ক্রিস ব্রাউন কিংবা ম্যারিয়াস ইরাসমাস – কারোই ঘটনাটা চোখে পড়েনি। ফলে, বাংলাদেশের অভিযোগ ধোপে টিকেনি।