টুর্নামেন্টের প্রথম দুটি ম্যাচে পরাজয়। এক পর্যায়ে বিদায় নেয়ার শঙ্কায় ছিল পাকিস্তান। অথচ, দৃশ্যপট বদলে গিয়েছে দ্রুতই। এখন টুর্নামেন্টের ট্রফি জয় থেকে আর এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে। এই সময়ে আগুন পাখি হয়ে বিশ্বকাপে ফেরা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সম্পদ আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও সেই কথাই বললেন। সেমিফাইনালে জয়ের পর দল এখন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। আর সেই আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করেই ইংলিশদের হারিয়ে ট্রফি নিজেদের করে নিতে চান।
সংবাদ সম্মেলনে আজম বলেন, ‘শুরুর দুই ম্যাচ আমরা হারলেও পরের ম্যাচ গুলোতে দল হিসেবে খেলে আমরা সেমিফাইনালে এসেছি। এই জয়গুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করেছে।’
ফাইনাল নিয়ে নার্ভাস কিনা – এমন প্রশ্নের জবাবে আজম বলেন, ‘আমি নার্ভাসের চেয়ে ফাইনাল নিয়ে বেশিই উত্তেজিত। তবে এও সত্য যে এরকম বড় মঞ্চে খেলা হলে সেখানে সব সময়ই কিছুটা চাপ থাকেই, কিন্তু সেই চাপকে সয়ে নিতে বড় অস্ত্র হল নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগানো। আর সেটা করেই ম্যাচের ফলাফলকে নিজেদের দিকে নিতে হবে।’
সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ইংলিশদের পারফরম্যান্সের পর অনেকেই ফাইনালে ইংলিশদের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে রাখছেন পাকিস্তানকে। বাবরও সেই কথাতেই সায় দিয়ে বলেন, ‘অবশ্যই ইংল্যান্ড ভাল দল। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স অন্তত সেই কথাই বলে।’
কিন্তু তাতে খুব একটা দমেও যাচ্ছেন না তিনি। বরং বাবর বলেন, ‘এটা আমাদের জন্যই কিছুটা ভাল। আর আমি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল করার জন্য,আমার পেসারদের ওপরই নির্ভর করব। বিশেষ করে আমি চাইব শুরুর পাওয়ার প্লেতে তারা যেন উইকেট এনে দেয়। কারণ তারাই আমার শক্তির জায়গা। আমি চাইব আমরা প্রত্যেকেই আমাদের পরিকল্পনা মত খেলতে এবং নিজের জায়গা থেকে প্রত্যেকেই সেই পরিকল্পনাকে মাঠে বাস্তবায়ন করতে।’
বাবরের মতে পাওয়ার প্লে হবে ফাইনালের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা যদি পাওয়ার প্লেতে দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নিতে পারে তবেই ম্যাচ নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে।
ফাইনালের আগে পাকিস্তান স্কোয়াডে নতুন করে কোনো ইনজুরির সংবাদ পাওয়া যায় নি। সে হিসেব মত, সেমিফাইনালে খেলা একই একাদশ মাঠে নামাতে পারে পাকিস্তান। যেখানে ব্যাটিংয়ে দুই কাণ্ডারি বাবর এবং রিজওয়ান অপরদিকে বোলিংয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদি দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা ম্যাচের আগে দলের সাথে দেখা করেন। দলকে ১৯৯২ সালের ট্রফি জেতার গল্প বলার মাধ্যমে অনুপ্রেরণা দিয়ে এসেছেন।
এ নিয়ে বাবর বলেন, ‘যখন চেয়ারম্যান আমাদের মাঝে এসে বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বললেন, তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তিনি আমাদেরকে মাঠে ঠাণ্ডা এবং শান্ত থেকে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে বলেছেন।’
অস্ট্রেলিয়ায় গ্যালারিতে সমর্থনের কমতি হচ্ছে না পাকিস্তানের। বাবর বলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই যেই মাঠেই আমাদের খেলা হয়েছে, সবখানেই তাঁরা আমাদের অসম্ভব ভাল সমর্থন করেছে। আমাদের এতদূর আসার পেছনে অবশ্যই তারাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সমর্থকরা। আশা করি ফাইনালেও এর ব্যতিক্রম হবে না।’
ভারতের সাথে পাকিস্তানের টুর্নামেন্ট শুরুর দিকে ম্যাচে ৯০ হাজারেরও বেশি দর্শক উপস্থিত ছিল। ফাইনালেও অনেকটা সেরকমই আশা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে অনেকটা বাড়ির আবহেই মাঠে নামবে পাকিস্তান।