সৌরভ গাঙ্গুলি, শচীন টেন্ডুলকার ও বীরেন্দ্র শেবাগ তিনজনই ভারতীয় দলে এককালের সতীর্থ ছিলেন। একসঙ্গে ক্রিকেটের দুনিয়ায় হেঁটেছেন অনেকটা পথ। রয়েছে কতশত মধুর আনন্দ-বেদনার স্মৃতি। সেইসব দিন পেরিয়ে এখন তাঁরা সাবেক বনেছেন, কিন্তু পুরনো সেই দিনের কথা তো আর ভুলতে পারা যায় না।
সৌরভ গাঙ্গুলি টিম ইন্ডিয়ার ইতিহাসে অন্যতম সফল অধিনায়কদের একজন। বাইশ গজে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে কথা বলতেন গাঙ্গুলি। ব্যাট হাতেও আক্রমণের ধারা বজায় রাখতেন তিনি বহাল তবিয়তেই। গাঙ্গুলী তখন ব্যাট হাতে কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার কিংবা বীরেন্দ্র শেবাগের পাশাপাশি ওপেনিংয়ে নামতেন। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে গাঙ্গুলি অধ্যায়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা গাঙ্গুলির অধীনে ভারত তখন স্টিভ ওয়াহের কিংবদন্তি অস্ট্রেলিয়া দলটিকে ২০০১ সালের ইডেন গার্ডেন্সে টেস্টে পরাজিত করে। তাঁর আমলেই টিম ইন্ডিয়া লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিখ্যাত ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনাল জিতেছিল। ভিনদেশের মাটিতে ভারতের আরও কয়েকটি স্মরণীয় জয়ও এই বাঁ-হাতি ব্যাটারের ছায়াতলে ছিল।
সম্প্রতি সৌরভ গাঙ্গুলিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে তিনি টেন্ডুলকার এবং শেবাগের মধ্যে কোন ব্যাটারের সাথে ইনিংস শুরু করতে বেশি উপভোগ করতেন। এই দুইজনের মধ্যে কোনজন ওপেনিং পার্টনার হিসেবে তাঁর পছন্দের ছিল? উত্তরে গাঙ্গুলি বলেন, ‘বাইশ গজে শচীন ছিলেন সবচেয়ে বুদ্ধিমান আর শেবাগ ছিলেন পাগলাটে, খ্যাপাটে। সেজন্য শচীন। সে আসলে আমাকে আরও ভাল খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে। শচীন আসলে আমাকে আমার খেলাটা তুলে ধরতে দারুণ সাহায্য করেছে।’
এরপর সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল জীবিত কোন কিংবদন্তিকে তিনি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। এর উত্তরেও সাবেক এই অধিনায়ক অকপটে শচীন টেন্ডুলকারের নাম উল্লেখ করেছেন।
শচীনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘শচীন, সে বিশেষ একজন কারণ আমি তাঁকে কাছে থেকে দেখেছি। তাঁকে একবার পাঁজরের খাঁচায় আঘাত পেতে দেখেছি। কিন্তু তিনি উচ্চবাচ্য না করে রান নিয়েছেন। মাঠে আমি একটি শব্দ শুনেছিলাম এবং আমি গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সে ঠিক আছে কিনা। তিনি উত্তরে বলেছিলেন তিনি ভাল আছেন। পরের দিন সকালে তাঁর ডাবল ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এসব কারণে শচীন বিশেষ ছিলেন।’
অন্যদিকে শেবাগ ছিলেন একজন ধ্বংসাত্মক ওপেনার। বলটার জন্মই হয়েছে পেটানোর জন্য – এটাই আজীবন বিশ্বাস করে গিয়েছেন শেবাগ। এই মন্ত্র মেনেই তিনি সফলতা পেয়েছেন এবং নিজেকে ইতিহাসের সেরা মারকুটে ওপেনারদের একজনে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু টেন্ডুলকার ছিলেন ক্রিকেটের ধ্রুপদী ব্লাস্টার। যিনি পরিস্থিতি বুঝে ঠাণ্ডা মাথায় বোলারদের ধ্বংস করে দিতেন।