‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ প্রবাদটা তো সবারই শোনা। সেই দশাই হয়েছে পাকিস্তানী পেসার শাহীন শাহ্ আফ্রিদির। একে তো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের সময় পুরোনো হাঁটুর চোটে ফের কুপোকাত হয়েছেন।
ছিটকে গিয়েছেন আবারো মাঠের বাইরে। অথচ কয়দিন আগেই প্রত্যাবর্তনের জন্য বেঁছে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চকে। আগস্টে পাওয়া চোট সেরে মাঠে ফিরতে লেগেছিল তিনটি দীর্ঘ মাস। কিন্তু সেই শুভক্ষণ দীর্ঘ হল না। বিশ্বকাপেই আবার চোটের হানা!
সেই সাথে আবারও দু:সংবাদ আফ্রিদি ভক্তদের জন্য। সাম্প্রতিক চোট পুনর্বাসনের মধ্যেই শাহীন শাহ্ আফ্রিদির অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়েছে। তাই হুট করে নিজেকে সঁপে দিতে হল চিকিৎসকের ছুরির নিচে।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের একটি হাসপাতালে পেটে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিসাইটিস বাদ দেওয়া হয়েছে। আপাতত এখন আফ্রিদি কিছুটা সুস্থ। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভক্ত-সমর্থকদের কাছে দোয়া চেয়েছেন পাকিস্তান দলের এই পেসার।
এদিকে পিসিবি নিশ্চিত করেছে তাঁর হাঁটুর চোটটি অত গুরুতর নয়। স্ক্যানের পরে সেখানে গভীর আঘাতের লক্ষণ নেই, তবে হাঁটুতে কিছুটা ব্যাথা রয়েছে। চিকিৎসকের মতে, আফ্রিদির এই চোটটি দুই সপ্তাহ পরই সেরে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, এই অস্ত্রোপচারের ফলে তাঁর মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়ার সময়টা আরও দীর্ঘায়িত হল। ধারণা করা হচ্ছে তাঁর মাঠে ফিরতে কমপক্ষে ছয়-সাত সপ্তাহ লেগে যাবে। আফ্রিদির ক্যারিয়ারে একটি কঠিন সময় কাটাচ্ছেন নি:সন্দেহে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে আসার কথা ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে, সেটাও আপাতত না হওয়ার সম্ভাবনাটাই প্রবল।
এই বছরটাই যাচ্ছে তাঁর চোটময়। আগামী মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিন টেস্ট বিশিষ্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি থাকতে পারছেন না, একথা নিশ্চিত।
এমনকি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন হোম টেস্টে ও ওয়ানডে সিরিজেও আফ্রিদিকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে আফ্রিদির দলে না থাকা পাকিস্তান দলের জন্য দারুণ একটি ধাক্কা। কারণ বাইশ গজে এই পেসার দলটির প্রধান বোলিং অস্ত্র।
পাকিস্তানের উঠতি তারকা ফাস্ট বোলার তিনি। কিন্তু ক্যারিয়ারের এই গুরুত্বপূর্ন সময়ে বারবার চোটগ্রস্ত হয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়াটা মোটেও সহজ নয়। তেমনি চোটে কাটিয়ে ফের মাঠে ফিরে ফর্মে ফেরাটাও বড্ড কঠিন।
তবে, একজন ফাস্ট বোলারের জীবনে চোট প্রায়শই সঙ্গী থাকে। ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক মেনে নিয়ে নিজের উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে। তবেই তো আফ্রিদি বিশ্বক্রিকেটে একজন গতিদানব হিসেবে নিজের নাম খোদাই করতে সক্ষম হবেন। আফ্রিদি ভক্তরাও চাইবে শীঘ্রই প্রিয় তারকা বাইশ গজে ফিরে আসুক সব বাঁধা পেরিয়ে।