মিরপুরে বল হাতে পথটা দেখিয়ে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এরপর ব্যাট হাতে নয়া অধিনায়ক লিটন দাসের চেনা ছন্দ। ঘরের মাঠের চেনা উইকেট, চেনা সমর্থনেও হঠাত পা পিছলালো বাংলাদেশ। আবারো সেই পুরনো অভ্যাস। মাঝপথে ব্যাটারদের অস্থিরতায় সংকটে বাংলাদেশ। দর্শকদের মনে তখন প্রশ্ন, এই ম্যাচও কী হারা যায়? আর মিরাজ তখন জবাবটা দিচ্ছেন।
রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা দিশেহারা হয়েছিলেন সাকিবের স্পিনে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সাকিবের চতুর্থবারের মত পাঁচ উইকেট। এছাড়া পেসার এবাদত হোসেনের ঝুলিতেও গেছে চার উইকেট। ধ্বস নেমেছিল ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে। ভারতকে আরেকবার হারানোর জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে মাত্র ১৮৭ রান। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরে গিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
তবে লিটন দাস বাংলাদেশকে সেই চাপ অনুভব করতে দেননি। শুরুতে সময় নিয়েছেন, ধীরে ধীরে নিজের হাত খুলেছেন। দারুণ খেলতে থাকা লিটন হঠাতই ফিরে যাওয়ায় একটা ধাক্কা লাগে। তবে এরপরও তো সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, আফিফরা ছিলেন। ফলে বাংলাদেশের চিন্তার কারণ ছিল না। তবে তখনই ভাঙনটা শুরু হয়। মাত্র ৮ রান করতে গিয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
১৩৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ তখন শুধু হারের প্রহর গুনছে। উল্লাস ফুটে উঠছে কোহলিদের চোখে মুখে। বাংলাদেশের তখনও করতে হবে ৫১ রান। হাতে আছে মাত্র এক উইকেট। সেখান থেকেই মুস্তাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে লড়াইটা করে গেলেন মিরাজ। একপ্রান্ত আগলে রেখে ম্যাচটাকে গভীরে নিয়ে যেতে থাকলেন। তখন মনে হচ্ছিল এসব শুধুই হারের ব্যবধান কমানো।
তবে একটা সময় মিরাজ ঠিকই কাজের কাজটা করে ফেলেন। বিশেষ করে দীপক চাহারের এক ওভারেই তিনটা চার মেরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন মিরাজ। একপ্রান্ত থেকে তিনিই ব্যাটিনহ করে যাচ্ছিলেন। শুধু ওভারের শেষ বলগুলোয় স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন মুস্তাফিজকে। মুস্তাফিজও টিকে থাকার মত কঠিন কাজটা করে মিরাজকে সঙ্গ দিয়েছেন।
দুজনে মিলে মাত্র ৪১ বলে করেন ৫০ রানের জুটি। যার ৩৫ রানই এসেছে মিরাজের ব্যাট থেকে। আর জয়ের জন্য শেষ চারটাও আসে মিরাজের ব্যাট থেকেই। চাহারকে বাউন্ডারি মেরেই দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। আরেকবার দলের বিপর্যয়ে মিরাজই হয়ে উঠলেন জয়ের নায়ক। মিরপুরে এমন ম্যাজিকের চিত্রনাট্য আদৌ কেউ ভেবেছিল!