লড়াই জমে উঠেছে। স্বর্ণালী ট্রফির আরও কাছে চলে গেছে আট দল। তবে শেষ অবধি সবাইকে পেছনে ফেলে একটি দলের হাতেই উঠবে সেই কাঙ্ক্ষিত শিরোপা। তাইতো এখন এক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে কথা বলার সুযোগ দিতে চাইবে না কোন দল। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শুরুটা ব্রাজিল আর ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হলেও। উত্তাপ ছড়াতে পারে নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ম্যাচটি।
নেদারল্যান্ডস এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল। তাদের রক্ষণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফুটবল বিশ্লেষকদের অধিকাংশ। এমন একটি রক্ষণের বিপরীতে তাদের আক্রমণও নিজেদের ছন্দ খুঁজে পাচ্ছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার টুর্নামেন্টের শুরুতেই অঘটনের স্বীকার হয়েছে। এরপর রীতিমত তাঁরা বাউন্স ব্যাক করেছে। আর তাতে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন আর্জেন্টিনা তথা ফুটবলের মেগাস্টার লিওনেল মেসি।
প্রতিটা প্রতিপক্ষই মেসিকে নিয়ে সদা তটস্থ থাকে। ক্লাব ফুটবল থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ফুটবল, সবখানেই মেসি ভীতি এক ধ্রুব সত্য। তাইতো স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগছে মেসিকে দমনের কি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ডাচরা। এমন প্রশ্নের জবাবে নেদারল্যান্ডসের রক্ষণভাগের অন্যতম সেনানী নাথান আকে জানান তাঁরা এখনও মেসিকে নিয়ে আলাদা কোন পরিকল্পনা করেনি।
তিনি বলেন, ‘মেসি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। তাঁকে আটকানোটা বেশ কষ্টসাধ্য এক কাজ হবে। তবে আমরা সে বিষয়ে এখনও কোন আলোচনা করিনি। মেসি ছাড়াও তাদের দলে বেশকিছু বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়াইটা তাই দারুণ জমবে।’ আকের মন্তব্য থেকে এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে তাঁরা শুধু মেসিকে নিয়ে চিন্তিত নয়। তাঁরা গোটা আর্জেন্টিনার দলটার ভাল ও খারাপ দিকগুলো পর্যালোচনা করে তবে মাঠে নামবে।
তবে আলবি সেলেস্তাদের পরিকল্পনার একট বড় অংশজুড়েই যে থাকবে মেসি, সেটা বলে দিতে দ্বিধা নেই। কেননা মেক্সিকোর বিপক্ষে বাঁচা মরার লড়াইয়ে যখন কোন কুল-কিনারা করা যাচ্ছিল না, তখন তো ত্রাণকর্তা হয়ে মেসিই এগিয়ে এসেছিলেন আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করতে। সুতরাং আর্জেন্টিনা শিবিরে মেসি বরাবরই বেশ গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তবে আকে তাঁর ক্লাব সতীর্থ জুলিয়ান আলভারেজকেও সমীহ করতে চান। তেমন আভাসই দিয়ে রেখেছেন আকে।
ম্যানচেস্টার সিটিতে তাঁর সতীর্থ আলভারেজকে নিয়ে আকে বলেন, ‘সে (আলভারেজ) বেশ কুশলী একজন খেলোয়াড়। তাঁকে অনুশীলনেও মার্ক করা বেশ কঠিন। তীক্ষ্ণতার সাথে দারুণ ফিনিশিং দক্ষতাও রয়েছে তাঁর। সুতরাং তাঁকে সামলানো কঠিন হবে। সে দুর্দান্ত একজন খেলোয়াড় এবং মাঠের বাইরেও সে দারুণ একজন মানুষ।’
নেদারল্যান্ডসের পরিকল্পনা বহুমুখী। লুইস ফন হাল নিশ্চয়ই একেবারে নিচ্ছিদ্র রক্ষণের ছক এঁকে ফেলেছেন। তাছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেও ফন হাল বেশ পটু। অন্যদিকে লিওনেল স্কালোনিও যথেষ্ট পরীক্ষিত একজন কোচ। সাইডলাইন থেকে এই দুইজনের বুদ্ধির লড়াইটা মাঠে লড়বে নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনা। শেষ অবধি জয়ের হাসি হাসবে কোন দল, সেটা সময়ই বলে দেবে।