আইপিএলের মিনি অকশনে ছিল অলরাউন্ডারদের জয়জয়কার। স্যাম কারেন, বেন স্টোকস, ক্যামেরন গ্রিন, জেসন হোল্ডারদের দলে ভেড়াতে দলগুলো রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিল। তাঁদের অলরাউন্ডের রাজত্বের দিনেও স্বমহিমায় উজ্জ্বল ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান। ১৬ কোটি রুপিতে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে গৌতম গম্ভীরের লখনৌ সুপার জায়ান্টস।
আইপিএলের এবারের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে খানিকটা অনাড়ম্বরভাবেই। আগের মেগা নিলামেই বেশিরভাগ দলগুলো নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। দলের দুর্বলতা ঢাকার জন্য অবশ্যম্ভাবী খেলোয়াড়দের দিকেই এবারের অকশনে মনোযোগ ছিল ফ্যাঞ্চাইজিগুলোর।
নিলামে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অলরাউন্ডারদের এক নম্বর সেট। সেই সেট থেকে স্যাম কুরানকে রেকর্ড ১৮.৫ কোটি রুপিতে দলে ভিড়িয়েছে প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব কিংস। অন্যদিকে, ১৭.৫ কোটিতে ক্যামেরন গ্রিন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে এবং ১৬.২৫ কোটিতে বেন স্টোকস নাম লিখিয়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসে।
তবে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটারদের এক নম্বর সেটে থাকা ক্যারিবীয় ব্যাটার নিকোলাস পুরান। সদ্যই সীমিত ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের দায়িত্ব ছেড়েছেন এই ক্রিকেটার। দুই কোটি বেস প্রাইজে থাকা পুরানকে দলে নিতে রীতিমতো যুদ্ধ করেছে দুই দিল্লি এবং লখনৌ। তবে শেষ হাসিটা হেসেছে লখনৌই, রিকি পন্টিংয়ের দিল্লিকে হারিয়ে ১৬.২৫ কোটিতে পুরানকে দলে ভেড়াতে সক্ষম হয়েছে গম্ভীরের দল।
পুরানের সাবেক সতীর্থ ক্রিস গেইল অকশনের সময়টাতে এক টিভি শোতে উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানেই পুরানের এত দাম নিয়ে একের পর এক মজা করতে থাকেন রসিক গেইল। বলেন, ‘নিক্কি পি (নিকোলাস পুরান), আমি তোমাকে যত টাকা ধার দিয়েছিলাম, এবার তো সেগুলো ফেরত দাও প্লিজ।’
তাঁর সাথে ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, অনিল কুম্বলে, স্কট স্টাইরিশদের মত সাবেক তারকা সব ক্রিকেটার। তিন অলরাউন্ডারের দামের প্রসঙ্গে গেইল আবারো ফোড়ন কাটেন এই বলে, ‘তাঁরা তো প্রাইভেট জেট ক্যাটাগরির খেলোয়াড়।’
আইপিএলের আগের আসরেও বেশ ভালো অংকের অর্থ পেয়েছিলেন পুরান। সেবার ১০.৭৫ কোটি রুপিতে তাঁকে দলে নিয়েছিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। কিন্তু নিজের দামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি, হায়দ্রাবাদও টুর্নামেন্ট শেষ করেছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকেই। নতুন করে দল গঠনের আশায় থাকা হায়দ্রাবাদ তাই এবার ছেড়ে দিয়েছিল পুরানকে।
পুরানের তাতে যেন পোয়াবারো, তাঁর দামটা বেড়েছে বৈকি কমেনি। অথচ এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজও পার করেছে তাঁদের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য বিশ্বকাপ। স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিয়েছিল সুপার টেনের আগেই।
তবে জার্সিটা বদলে ফ্যাঞ্চাইজি লিগে নামতেই পুরনো রূপে পুরান। আবুধাবি টি টেন লিগে যেন ফিরে পেয়েছেন নিজেকে। ১০ ম্যাচে ৩৪৫ রান করে দলকে শিরোপা এনে দেবার পাশাপাশি জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার। টুর্নামেন্টে তাঁর স্ট্রাইক রেটটাও চোখ কপালে তোলার মতো, ২৩৪!
বড় আশা নিয়েই পুরানকে দলে ভিড়িয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। দলের জন্য সেরা খেলোয়াড়টা বেছে নিতে অর্থের কার্পন্য করেনি তাঁরা। পুরানের সামনে তাই বড় চ্যালেঞ্জ। পুরনো ব্যর্থতা ভুলে তিনি চাইবেন টি টেনের ফর্মটা আইপিএলে টেনে নিতে।