দ্য গ্রেট বেনজেমা স্ক্যান্ডাল

শেষ বারের ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার করিম বেনজেমা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পরবর্তী রিয়াল মাদ্রিদকে প্রায় একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রিয়ালকে জিতিয়েছেন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগার শিরোপা। ৬ বছর জাতীয় দলে ব্রাত্য থাকার পর ক্যারিয়ার ফর্মের চূড়া থাকা বেনজেমাকে তাই আর উপেক্ষা করতে পারেননি কোচ দিদিয়ের দেশ্যম।

তবে বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেও প্রথম খেলার আগের দিনই ইনজুরির জন্য বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে যান বেঞ্জেমা। ২০১৫ সালে ফ্রান্স জাতীয় দলে সতীর্থ ম্যাথ্যু ভালবুয়েনার একটি ভিডিও কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে দেয়া হয় করিম বেনজেমাকে।

এমনকি, এই কারণে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ফ্রান্স জাতীয় দলে নিষিদ্ধ করা হয়। করিম বেনজেমা এরপর নিজেকে যতই নির্দোষ দাবি করুন না কেন, বছর দুয়েক আগ পর্যন্তও কোচ দিদিয়ের দেশ্যম বরাবরই উপেক্ষা করে যান তাঁকে।

এমন পরিস্থিতিতে বেনজেমা আর ফ্রান্স ম্যানেজমেন্টের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক ছিল না। আর্জেন্টিনার কাছে বিশ্বকাপ শিরোপা হারানোর পরপরই নিজের ৩৫ তম জন্মদিনে ফ্রান্সের জার্সি তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন বেনজেমা। এরপরই বিভিন্ন নেতিবাচক খবর ছড়ায় বেনজেমা আর দেশ্যমের সম্পর্ক নিয়ে।

বেনজেমা নিজের ইনজুরি নিয়ে সততার পরিচয় দেননি বলে মনে করেন দেশ্যম। যার কারণে ফাইনালের আগেই বেনজেমা ফিট হয়ে উঠে ট্রেনিং শুরু করলেও তাকে দলের সাথে রাখতে চাননি দেশ্যম। এর অর্থ দাঁড়াল, ইনজুরি কাটিয়ে ওঠার পরও বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়নি বেনজেমার।

ফ্রান্স দলের কিছু ভেতরকার খবর ফাঁস করেন ফরাসি সাংবাদিক রোমাইন মলিনা। মলিনা জানান, দলে বেঞ্জেমা ফেরার মত অনুকূল অবস্থা ছিল না। ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ মিস করা মিডফিল্ডার পল পগবা কিংবা বিশ্বকাপ খেলা অলিভার জিরুড, ফ্রান্স অধিনায়ক হুগো লরিস আর ফরোয়ার্ড আতোঁয়ান গ্রিজম্যান এই বেনজেমার দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আগেই।

বেনজেমার সাথে তাঁর জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থদের সম্পর্ক যে ভাল যাচ্ছে না তা বোঝা যায় আরো একটি ঘটনা থেকে। বেনজেমা তার রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ বাদে প্রায় সব ফরাসি খেলোয়াড়দেরই ইন্সটাগ্রামে ফলো করা বন্ধ করে দিয়েছেন।

এছাড়াও ফরাসি ফরোয়ার্ড আতোঁয়ান গ্রিজমানের সাথে সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না বেনজেমার। বেনজেমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত পদচারণার বিষয়টিও ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের নজরে এনেছিলেন গ্রিজম্যান।

ফ্রান্স দলের এমন ব্যক্তিগত কোন্দল সামলাতে তাই বেশ হিমশিমই খেতে হয় কোচ দিদিয়ের দেশ্যমকে। যদিও দল পরিচালনা আর মাঠে দেশ্যমের রক্ষণাত্মক মনোভাবের জন্য প্রায়ই সমালোচনার শিকার হন তিনি।

কিন্তু মাঠে সাফল্যের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হিসেবে টিকে থাকার জন্য দেশ্যমের অন্য একটি গুণকে গণনায় আনতেই হবে। দলের এত ব্যক্তিগত অহংকারকে সঠিকভাবে সামলানোর জন্য দেশ্যমের মত শক্ত মানসিকতার কোচ-ই তো চাই ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link