অপ্রতিরোধ্য মাশরাফির সিলেট

একের পর এক বল আছড়ে পড়ছিলো গ্যালারিতে। নিজেকে নতুন রূপে আবির্ভূত করা তৌহিদ হৃদয়ের আত্নবিশ্বাস যেন তাঁর মারা ছক্কা গুলোর চেয়েও বড় এই টুর্নামেন্টে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরকে হৃদয় যেন নিয়েছেন নিজের জাত চেনানোর মঞ্চ হিসেবে।

টানা তিন ম্যাচে ফিফটি করে শুধু দলকে জেতাননি তিনি, রীতিমতো শাসন করছেন বোলারদের। এবার ঢাকা ডমিনেটর্সের বিরুদ্ধে তৌহিদ হৃদয় আর নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিং এ টানা চতুর্থ জয় পেলো মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স।

টস হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেটের শুরুটা খুব বেশি ভালো হয়নি। ১৭ রানেই মোহাম্মদ হারিসের উইকেট হারায় তারা। তবে এরপরই বিধ্বংসী রূপে সিলেট ব্যাটাররা। নাজমুল হোসেন শান্ত আর তৌহিদ হৃদয়ের সামনে রীতিমতো অসহায় ছিলো তাসকিন-আল আমিনরা। ৮৮ রানের পার্টনারশিপে সিলেটকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন এই দুই ব্যাটার। স্টাইকার্সের দলীয় ১০৫ রানের সময় শান্ত আউট হন পেসার আল আমিন হোসেনের বলে।

দুই ছক্কা আর সাত চারে ৩৯ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন শান্ত। শান্ত আউট হলেও তৌহিদের তান্ডব থামেনি একটুও। এরপর ছোট ছোট পার্টনারশিপে দলে এবারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোর এনে দেন তিনি। আল আমিনের বলে আউট হবার আগে ৪৬ বলে ৮৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন তৌহিদ। সমান পাঁচটি করে ছক্কা ও চারে এবারের টুর্নামেন্টে রীতিমতো রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ব্যাটার।

চার ওভারে ৪৫ রানে তিন উইকেট নেন আল আমিন হোসেন। ২০ ওভার শেষে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২০১ রানে থামে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা সিলেটের ইনিংস।

২০২ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকারও। দলীয় ১০ রানেই ফিরে যান পাকিস্তানি ব্যাটার আহমেদ শেহজাদ। এরপর দলীয় রান ৩০ না পেরোতেই দিলশান মুনাবীরা আর সৌম্য সরকারের উইকেট হারালে চাপে পড়ে ঢাকা। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ডমিনেটর্সরা।

৭৭ রানের পার্টনারশিপে ঢাকাকে খেলায় ফেরান নাসির হোসেন আর মোহাম্মদ মিথুন। দুই ছক্কা আর তিন চারে ২৮ বলে ৪২ রান করে থিসারা পেরেরার শিকার হন মিথুন। এরপর খেই হারিয়ে ফেলে ঢাকা। নাসির হোসেন বেশ কিছুক্ষণ এক প্রান্ত আগলে রাখলেও তা পর্যাপ্ত ছিলো ২০২ রানের লক্ষ্য ছুঁতে।

দলীয় ১২০ রানে নাসির হোসেন রেজাউর রহমান রাজার শিকার হলে সেখানেই মোটামুটি শেষ হয় ঢাকার আশা। শেষ পর্যন্ত ১৩৯ রানে থামে ঢাকা। ৬২ রানের জয়ে টানা চার ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত সিলেট।

টানা চার জয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকেই ঢাকার প্রথম পর্ব শেষ করলো মাশরাফির সিলেট। অভিজ্ঞ আর তরুণদের দারুণ কম্বিনেশনে দুর্দান্ত গতিতে ছুটছে স্ট্রাইকার্সরা।

 

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কাগজে কলমে পিছিয়ে থাকা সিলেটই এখন টুর্নামেন্টের অন্য ফেভারিট। তৌহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্তরা ব্যাট হাতে নিজদের ফর্ম ধরে রাখলে সিলেটকে থামানো কঠিনই হবে প্রতিপক্ষদের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link