এবারের বিপিএলের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের। শুরুতে হ্যাটট্রিক হারে রীতিমত ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল তারা। তবে সেই হারের বৃত্ত ভেঙ্গে ভালভাবেই ফিরে আসে ইমরুল কায়েসের দল। ঢাকায় প্রথম পর্বের ব্যর্থতা ভুলে চট্টগ্রামে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় দুর্দান্তভাবে। এবার সিলেটে এসেও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে তারা। খুলনা টাইগার্সকে ৪ রানে হারিয়ে টানা ৫ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ইনিংসের শুরুতে বেশ ধীরগতিতে রান তুলতে থাকেন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। রয়ে শয়ে খেলতে থাকা লিটন নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন ৪১ বলে। তবে এরপর আর ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি তিনি। নাহিদুল ইসলামের বলে আউট হয়ে ফেরেন সেই পঞ্চাশ রানেই।
রানের গতি বাড়ানোর জন্য কুমিল্লা এ দিন তিনে খেলতে নামায় জনসন চার্লসকে। চার্লসও সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ঠিকঠাকভাবে। ৫ ছক্কায় খেলেছেন ২২ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। তবে অপর প্রান্তে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান তাঁর ব্যাটিংয়ের শুরুর চিত্রের আর পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রক্ষণাত্বক ভঙ্গিতে একই ভাবে খেলে গিয়েছেন। ৪৭ বলে ৫৪ রানের মন্থর গতির এক ইনিংস খেলে থেকেছেন অপরাজিত। আর তাতে মাত্র ২ উইকেটের পতন ঘটলেও ১৬৫ এর বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
১৬৫ রানের পুঁজি নিয়ে নিয়ে শুরুটা ভালই করেছিল কুমিল্লার বোলাররা। তামিম ইকবালের ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই তাঁকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নে ফেরান নাসিম শাহ্। তবে আরেক ওপেনার অ্যান্ড্রু বালবার্নি, শাই হোপকে নিয়ে পরের উইকেটে গড়েন ৫১ রানের জুটি। উইকেটে তখন প্রায় থিতু হয়ে গিয়েছিলেন বালবার্নি। তবে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে ব্যক্তিগত ৩৮ রানে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি।
বালবার্নি আউট হওয়ার পর খুলনার আস্কিং রেট প্রায় ১০ এর কাছাকাছি চলে যায়। এমন অবস্থায় খুলনাকে ম্যাচে ফেরান মাহমুদুল হাসান জয়। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন তিনি। মুকিদুল ইসলামের করা এক ওভারে ৪ বলেই নেন ১৬ রান। তবে ইনিংস আর দীর্ঘায়িত করতে পারেননি তিনি। ২ চার আর ২ ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংসটি থামে রিজওয়ানের অসাধারণ এক ক্যাচে।
জয় আউট হয়ে ফিরে গেলেও ম্যাচটা হাতেই ছিল খুলনার। তবে ১ রানের ব্যবধানে আজম খান আউট হয়ে ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় খুলনা টাইগার্স। ব্যাট হাতে এ দিন প্রমোশন পেয়ে ৬ এ খেলতে নেমেছিলেন সাইফউদ্দিন। তবে সে সুযোগ আর কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ১০ বলে ৮ রান করে ফিরে যান তিনি।
উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে টিকে ছিলেন তিনে নামা শাই হোপ। লক্ষ্যের পথেই ছুটছিলেন তিনি। সাথে তাঁকে উইকেটে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ক ইয়াসির আলী রাব্বি। তবে উনিশতম ওভারে এসে সব হিসাব নিকাশ পাল্টে দেন নাসিম শাহ্। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন শাই হোপকে। নাসিম শাহ্ সে ওভারে দেন ৮ রান।
শেষ ওভারে ১৭ রানের সমীকরণে ইমরুল কায়েস বল হাতে তুলে মোসাদ্দেক হোসেনকে। শুরুটা ভালই করেছিলেন মোসাদ্দেক। তবে সে ওভারে তৃতীয় আর চতুর্থ বলে হজম করে দুই চার। তাতে ম্যাচ গড়ায় শেষ বলে ৬ রানের সমীকরণে। তবে ইয়াসির রাব্বি আর সে বলটাকে ছক্কায় পরিণত করতে পারেননি। খুলনা টাইগার্সের ইনিংস শেষ হয় লক্ষ্য থেকে ৪ রান দূরে।