বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই ভারতীয় ক্রিকেট পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল খবরটা। গত বছরের শেষদিকে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারাত্নক আহত হন ভারতীয় উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান ঋষাভ পান্ত। বেঁচে ফিরলেও তাঁর ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কা আছে ক্রিকেট মহলে। পান্তের এহেন অসাবধানতা নিয়ে এবারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার কপিল দেব।
পান্তের ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার পর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। অস্ত্রোপচার শেষে এখন পান্ত সময় গুণছেন ধীরে ধীরে নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার। বাবা – মাকে চমকে দিতে কাউকে না জানিয়ে দিল্লি থেকে রুরকি যাবার পথে রওয়ানা হয়েছিলেন এই তারকা।
কিন্তু, পথিমধ্যে ন্যাশনাল হাইওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এই তারকা। দুর্ঘটনায় হাঁটুর তিনটি লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর। ইতোমধ্যেই দুবার অস্ত্রোপচারের টেবিলে ছুরি – কাঁচির তলায় যেতে হয়ে তাঁকে। তৃতীয় অস্ত্রোপচারটি হওয়ার কথা ছয় সপ্তাহ বাদে।
তৃতীয় অস্ত্রোপচারের ধকল কাটিয়ে উঠার পরই মূলত পান্ত ধীরে ধীরে পুর্নবাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন। তবে এতে করে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে তাঁর। ঘরের মাঠে ২০২৩ বিশ্বকাপ ছাড়াও পরের বছরের টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপও মিস করতে পারেন তিনি।
তবে পান্থকে জাতীয় দল সবচেয়ে বেশি মিস করবে টেস্টে। এই উইকেটকিপার ব্যাটার ইতোমধ্যেই টেস্ট ইতিহাসের সেরা উইকেটকিপার ব্যাটার কিনা – সে নিয়ে তর্ক আছে ক্রিকেট পাড়ায়। নিজের দিনে মাত্র এক সেশনেই ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে দেয়ার সামর্থ্য আছে তাঁর। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল এবং আসন্ন বোর্ডার – গাভাস্কার ট্রফিকে সামনে রেখে ভারতকে তাই ভাবতে হচ্ছে নতুন করে।
পান্তের অনুপস্থিতি দলের টিম কম্বিনেশন নষ্ট করে দিয়েছে। মূলত এই কারণেই তাঁর উপর ক্ষেপেছেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী তারকা কপিল দেব। পান্তের দ্রুত সুস্থতা কামনা করার পাশাপাশি জানিয়েছেন সেরে উঠার পর কষে এক থাপ্পড় লাগাবেন তরুণ এই ব্যাটারকে।
কপিল দেব বলেন, ‘আমি তাঁকে ভীষণ পছন্দ করি। আমি চাই সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। একবার সে সুস্থ হয়ে উঠুক, আমি তাঁকে থাপ্পড় লাগাব। কারণ, তাঁর নিজের যত্ন নেয়া উচিত। দেখো তাঁর ইনজুরিটা পুরো দলের কম্বিনেশন নষ্ট করে দিয়েছে। সবার ভালোবাসা আছে তাঁর প্রতি। কিন্তু রাগও হয়, আজকের দিনের তরুণ এত খামখেয়ালি হবে কেনো? সে কেন এমনটা করল? সেই কারণেই থাপ্পড়টা মারব।’
নিশ্চিতভাবেই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই পান্তের জন্য দুশ্চিন্তায় আছেন কপিল। কিন্তু তাঁর বন্তব্যকে ভিন্নপ্রবাহে ভাসাতে পারে নিন্দুকরা। তবে দলের কম্বিনেশন নষ্ট হওয়ার ব্যাপারে কপিলের চিন্তার জায়গাটা যৌক্তিক। পান্তের অনুপস্থিতিতে ভারতের পুরো মিডল অর্ডার যেন ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।
কেবল তাঁর উইকেটকিপিং নয়, ব্যাটিং দক্ষতাও ভীষণভাবে মিস করবে রোহিত শর্মার দল। তাঁর কাউন্টার অ্যাটাকিং ব্যাটিং বিশ্বের সেরা বোলিংকেও ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারে। এর আগেও মাত্র এক সেশনে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন এই তারকা।
তবে তাঁর জায়গায় সুযোগ পাওয়া সুরিয়াকুমার যাদবও আছেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। সাদা বলের ক্রিকেটে রীতিমতো রানবন্যা বইয়ে দিয়ে টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। এখন দেখার বিষয় টি-টোয়েন্টির ফর্মটা টেস্টেও আনতে পারেন কিনা সুরিয়া।