নেটে অনুশীলন করছেন তাইজুল ইসলাম। তবে সেটা বোলিং নয় বরং ব্যাটিং অনুশীলন। আর তাইজুল ইসলামের ব্যাটিং খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছেন জেমি সিডন্স। ব্যাটিং স্ট্যান্সটাও দেখিয়ে দিচ্ছেন পাশ থেকে। তাইজুল নিজের ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নিচ্ছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজকে কেন্দ্র করেই। এবার যে তিনি আছেন ওয়ানডে সিরিজের দলেও।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের পর্দা নেমেছে। ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য দলীয় অনুশীলন শুরু হতেও এখনো কিছুদিন বাকি আছে। ফলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম মোটামুটি নীরবই। আর এই ফাঁকা সময়টা কাজে লাগিয়েই একটা স্পিন বোলিং ক্যাম্পের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
দেশের এক-ঝাঁক তরুণ স্পিনারকে নিয়ে কাজ করছেন রঙ্গনা হেরাথ। তাঁকে সাহায্য করার জন্য আছেন স্থানীয় কয়েকজন কোচও। তবে বাড়তি নজর তাইজুল ইসলামের দিকেই। যদিও এই মুহূর্তে ব্যাটিং নিয়েই বেশি মনোযোগী এই স্পিনার।
টেস্ট ক্রিকেটে তাইজুল ইসলাম বাংলাদেশের অন্যতম ভরসার নাম। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের নেতৃত্বে তিনিই থাকেন। লাল বলের ক্রিকেটার হিসেবেই তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁর পরিচয়। তবে সম্প্রতি ওয়ানডে ফরম্যাটেও নিজেকে প্রমাণ করতে শুরু করেছেন এই স্পিনার।
ওয়ানডে ফরম্যাটে তাইজুলের অভিষেক হয়েছিল অনেক আগেই। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে চার উইকেটও পেয়েছিলেন তিনি। তবে এরপর আট বছরে বাংলাদেশের হয়ে মাত্র ৯ টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ হয়েছে তাইজুলের।
টেস্ট ক্রিকেটে দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকা এই স্পিনারকে কখনো রঙিন পোশাকে প্রয়োজনই মনে করেনি বাংলাদেশ। তবে ২০২২ সালে এসে আবার তিনটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন তাইজুল। আর ফেরার ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট।
আর সেকারণেই তাইজুলকে মনে ধরেছিল স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের। এই কোচ মনে করেন ওয়ানডে ফরম্যাটেও দারুণ কার্যকরী হতে পারেন এই স্পিনার। আর সেজন্যই হয়তো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। আরেক স্পিনার নাসুম আহমেদের বদলে জায়গা হয়েছে তাঁর।
তাইজুলকে ওয়ানডে দলে রাখা নিয়ে রঙ্গনা হেরাথ বলেন,’ আমার মনে হয় সে (তাইজুল) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটায় সে পাঁচ উইকেটও পেয়েছিল। এছাড়া আমার মনে হয়, তাইজুল এমন একজন বোলার যাকে আমরা ওয়ানডে ক্রিকেটেও ব্যবহার করতে পারি।‘
ওদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সাদা বলের ক্রিকেটে নাসুম আহমেদও নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠছিলেন। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিনি দলে জায়গা পাননি। এই প্রসঙ্গে হেরাথ বলেন,’ দেখুন দলে যখন সাকিব আল হাসান থাকে, তখন দুজন বাঁ-হাতি স্পিনারের প্রয়োজন হয় না। নির্বাচকদের হয় তাইজুলকে নিতে হত কিংবা নাসুমকে। সেক্ষেত্রে তাঁরা তাঁদের সেরা অপশনকেই বেঁছে নিয়েছে।‘
ওয়ানডে দলে তাইজুল ইসলাম জায়গা পেলেও একাদশে থাকাটা কঠিন এই স্পিনারের জন্য। কেননা ওয়ানডে ফরম্যাটে স্পিনার হিসেবে সাকিব আল হাসান তো আছেনই। এছাড়া সাকিবের সাথে সঙ্গ দেয়ার জন্য আছেন মেহেদী হাসান মিরাজও।
ফলে তিনজন স্পিনার না খেলানো হলে তাইজুল কিংবা নাসুমদের ওয়ানডে একাদশে জায়গা পাবার সুযোগ কম। তবুও প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই নিজের সেরাটা দিতে প্রস্তুত থাকবেন তাইজুল ইসলাম।