পিএসজির সমস্যা কোথায়!

এদিক-সেদিক, দিক-বেদিক লক্ষ্যহীন ছুটে চলা। ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের ক্ষেত্রে ঠিক এই বিষয়টিই খাটে। এই সময়ের অন্যতম শক্তিশালী দল পিএসজি। অন্তত কাগজে কলমে। তবুও কেন জানি কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখাটা মেলে না। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা কেবলই আলোকবর্ষ দূরে থাকা এক মরীচিকা।

এদিক-সেদিক, দিক-বেদিক লক্ষ্যহীন ছুটে চলা। ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের ক্ষেত্রে ঠিক এই বিষয়টিই খাটে। এই সময়ের অন্যতম শক্তিশালী দল পিএসজি। অন্তত কাগজে কলমে। তবুও কেন জানি কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখাটা মেলে না। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা কেবলই আলোকবর্ষ দূরে থাকা এক মরীচিকা।

১৯৭০ সালের দিকে ক্লাবটির জন্ম। এরপর ফ্রান্সের বিভিন্ন লিগের গণ্ডি পেরিয়ে সর্বোচ্চ টূর্নামেন্ট ‘লিগ ওয়ান’-এ জায়গা করে নিয়েছে দলটি। দেশটির ঘরোয়া লিগের চ্যাম্পিয়নশিপ যেন নিজেদের হাতের মুঠোয় তাদের।

মাঝেমধ্যে ফসকে গেলেও তা পুনরুদ্ধার করতে খুব একটা সময় লাগে না। ২০১১ সালে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি দলটির দায়িত্বভার নিজেদের করে নেয়। এরপর থেকেই যেন নতুন রুপে আবির্ভাব ঘটতে শুরু করে ক্লাবটির।

ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ক্লাব টূর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে। ইউরোপের ভিন্ন দেশের ঘরোয়া লিগের সেরা দলগুলোর লড়াইটা হয় জম্পেশ। সেই টূর্নামেন্ট জয়ের কোন সুখস্মৃতি নেই ফ্রান্সের সেরা ক্লাবটির। বিগত দুই দশক ধরে সেই লক্ষ্য নিয়েই দল গোছানোর পূর্ণ চেষ্টাটা করছে নাসের আল খেলাইফির বোর্ড।

তারকা সব ফুটবলাররা এক এক করে গায়ে জড়াতে শুরু করে পিএসজির জার্সি। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রোনালদিনহোর মত খেলোয়াড়দের শুরুটা হয়েছিল এই ক্লাব থেকেই। এরপর দ্বিতীয় দশকে ডেভিড বেকহ্যামকে দিয়ে শুরু। এরপর সময়ে সময়ে নেইমার, কাভানি, ইব্রাহিমোভিচদের আগমন ঘটে পার্ক দে প্রিন্সেসে।

শেষ অবধি ২০২১ সালে এই সময়ের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লিওনেল মেসিকেও নিজেদের ডেরায় নিয়ে আসতে পেরেছে পিএসজি। লক্ষ্য সেই একটাই জিততে হবে সেই রুপালি ট্রফি। সেই উদ্দেশ্য সফল করতে সার্জিও রামোসের মত খেলোয়াড়কেও নিজেরদের শিবিরে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। প্রতিটা খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের।

তবুও ঠিক জেতা হচ্ছে না চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। কোথাও একটা বাঁধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদেরকে। কোথাও একটা থমকে যায় সকল পরিকল্পনা। আর সেই থমকে যাওয়ার পেছনের কারণ মানসিকতা। দলটা ঠিক বড় মঞ্চের চাপ সামলে নিতে পারে না। গেল ২০২১-২০২২ মৌসুমেই রিয়াল মাদ্রিদ দেখিয়েছে ঠিক কিভাবে ধ্বংসস্তূপের মাঝ থেকে বেরিয়ে এসে জিতে নিতে হয় আকাঙ্ক্ষিত শিরোপা।

সেখানটায় পিএসজি বারবার ধরাশায়ী হচ্ছে। ২০১৭ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয় লেগে ৬-১ হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদেরকে। সে দশা কাটেনি পরবর্তী মৌসুম গুলোতেও। হারার আগে হেরে যাওয়ার মানসিকতা কোন এক অজানা কারণে স্থবিরভাবে বিরাজ করে।

সেই স্থবিরতা যেন নিউটনের প্রথম ল’ মেনে সব সময় স্থির থাকতে চায়। ডাগ আউটে বসের পরিবর্তন আসে। তবে সেই স্থবিরতার অবিচল। তারকায় ঠাসা খেলোয়াড় দিয়েই কেবল শিরোপা জেতা যায় না, সেটার প্রমাণই যেন বারংবার দিয়ে যাচ্ছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। দলটির এই মানসিকতা বদলে ফেলা ভীষণ প্রয়োজন। সেটা ঠিক কবে নাগাদ হবে তা বলে দেওয়া মুশকিল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...