ফুরফুরে ইংল্যান্ড, গানের তালে অনুশীলন

বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড দলের পা পড়বে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ফলে সকাল সকাল সবার মধ্যেই একটা তাড়াহুড়া। বিশেষ করে নিরাপত্তাকর্মীরা পুরো এলাকাটা যেন ঘিরে ফেলতে চাইছেন। বিসিবি অ্যাকাডেমি মাঠের পাশে যে বিল্ডিং গুলো সেগুলোর ছাদেও তাঁদের অবস্থান।

সাংবাদিকরাও অধীর অপেক্ষায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের অনুশীলন দেখার জন্য। তাঁদের বরণ করার জন্য সবাই যতটা সিরিয়াস, ইংল্যান্ড দল যেন ততটাই ফুরফুরে, চিল মুডে।

ইংল্যান্ড দল যতক্ষণ ব্যাট-বলের অনুশীলন করলো পুরোটা সময়ই গান বাজলো। আমেরিকান রক ব্যান্ড মিউজিক কিংবা ইগলসের জনপ্রিয় গান হোটেল ক্যালোফর্নিয়ার সুর ভেসে আসছিল মাঠ থেকে। ব্যাট-প্যাডের সাথে একটা সাউন্ড বক্সও বয়ে এনেছেন দলটার অন্যতম সদস্য স্যাম কারান।

ফলে গান শুনতে শুনতেই বাংলাদেশে নিজেদের প্রথম অনুশীলনটা করলো ইংল্যান্ড দল। পুরো অনুশীলনেই তাঁরা যেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। পেসার জোফরা আর্চারকে দেখা গেল স্পিন বোলিংও করতে। ওদিকে দলটার প্রায় সব ট্যালেন্ডাররাই করেছেন ব্যাটিং অনুশীলন। ফুরফুরে মেজাজে মিরপুরের নেটে বাউন্স ওঠাতেও ভুল করেননি আর্চাররা।

সকালে মাঠে এসেই খানিকক্ষণ ফুটবল খেলে গাঁ গরম করে নিয়েছেন জস বাটলাররা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলটার দিকে তখন তাক করা শ খানেক ক্যামেরার লেন্স। ফিটনেসের কাজগুলো সেরে তাঁরা পথ ধরলেন অ্যাকাডেমি মাঠের। সবার আগে নেটে অনুশীলনের জন্য গেলেন ডেভিড মালান। তাঁর অবশ্য মিরপুর স্টেডিয়াম ভালো করেই চেনা।

ওদিকে মঈন আলী তো কিছুদিন আগেই বিপিএল শিরোপা জয় করে দেশে ফিরলেন। তবে আবহাওয়া, মাঠ সবকিছুর সাথে তাঁর মানিয়ে নিতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। দলটার অধিনায়ক জস বাটলার কিংবা জোফরা আর্চাররাও আগে খেলে গিয়েছেন বাংলাদেশে।

ফলে বাংলাদেশের আবহাওয়া কিংবা মিরপুরের উইকেট একেবারে অচেনা না ইংলিশ ক্রিকেটারদের জন্য। এছাড়া দলটা যে সাদা বলের ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা দল। বর্তমান ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুটি বিশ্বকাপই তাঁদের পকেটে। বলা হয় সাদা বলের ক্রিকেটের ইতিহাসেই অন্যতম শক্তিশালী দল এই ইংল্যান্ড। দলটার যে কেউ, যেকোনদিন পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের চিত্র।

তবুও বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা সহজ হবেনা তাঁদের জন্য। সেটা বাটলাররাও বেশ ভালো করেই জানেন। কেননা ওয়নাডে ফরম্যাটে এমনিই যথেষ্ট শক্তিশালী বাংলাদেশ। এছাড়া প্রথম দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে হবে মিরপুরে। এখানে ধীর হয়ে আসা উইকেটেই খেলতে হবে ইংল্যান্ডকে।

এছাড়া মিরপুরের উইকেটও ইংল্যান্ডকে আটকানোর পরিকল্পনা করেই প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতোমধেই মন্থর ও নিচু হয়ে আসা উইকেট তৈরি নির্দেশ এসেছে। আর সেটা মেনেই কাজ করে যাচ্ছেন পিচ কিউরেটর।

ফলে অনুশীলনে ফুরফুরে থাকলেও ম্যাচে হয়তো খুব একটা ফুরফুরে থাকার সুযোগ নেই ইংল্যান্ডের। অন্তত ওয়ানডে সিরিজটা বেশ চ্যালেঞ্জিংই হবে তাঁদের জন্য। বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে হারাতে হলে খেলতে হবে নিজেদের সেরা ক্রিকেটটাই। আর সেজন্যই নিজেদের প্রস্তুত করছে ইংল্যান্ড দল।

ইংল্যান্ড দল অনুশীলন করলেও আজ অবশ্য অনুশীলন ছিল না বাংলাদেশের। কেননা গত দুইদিন রাত অবধি অনুশীলন করেছে হাতুরুর দল। গতকাল শুক্রবারেও দুপুর বারোটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত অনুশীলন করেছেন ক্রিকেটাররা। তবে আগামীকাল দুই দলেরই অনুশীলন করার কথা রয়েছে।

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link