ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের আগে অধিনায়ক তামিম ইকবালের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। তবে সম্মেলন কক্ষে মাঠের ক্রিকেট নিয়ে যতটা আলোচনা তার চেয়ে অনেক বেশি হল মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই। তামিক ইকবালের কাছেও অবশ্য এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। তিনিও এসেছেন যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই। ছকের বাইরে বললেন না একটা কথাও, দারুণ ভাবেই সামাল দিলেন সব তর্ক-বিতর্ক।
নাজমুল হাসান পাপনের একটা সাক্ষাৎকার নিয়ে যত আলোচনা হচ্ছিল ক্রিকেট পাড়ায়। বোর্ড প্রেসিডেন্ট পরিষ্কার জানিয়েছেন দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের দ্বন্দ্বের কথা। সেই দুজন হলেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। এছাড়া বাংলাদেশ দলের মধ্যে গ্রুপিং এর কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। আর এই সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলে গিয়েছেন তামিম ইকবাল।
একটা গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের আগে যখন বাইরে এসব কথা আসে তখন দলের ভেতরের আবহ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তামিম ইকবাল বললেন, ‘দলের আবহাওয়া সব সময়ই ভালো। যেটার রেজাল্টও আপনারা দেখছেন। আর স্পেশালি আমরা ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো ক্রিকেট খেলছি গত ৫-৬ বছর ধরেই। যখন একটা ভালো পরিবেশ থাকে ড্রেসিং রুমে তখনই কিন্তু একটা দল ভালো খেলে।’
তবে সাকিব ও তাঁর মধ্যে সম্পর্কটা যে এখন আর আগের মত নেই সেটা তামিমের কথায় স্পষ্টই হয়েছে। অবশ্য তামিম মনে করেন মাঠের ভিতরে তাঁরা যখন প্রবেশ করেন তখন আর কোনকিছুই ম্যাটার করে না। তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জার্সি পরে সেরাটা দেয়া। অন্য কিছুই ম্যাটার করে না। আমার যখন দরকার হয় সে আমাকে হেল্প করে। আবার সে যখন কোন ফরম্যাটের অধিনায়ক আমিও তাঁকে সাহায্য করি।’
অবশ্য সাকিব-তামিমের এই দ্বন্দ্বের সমাধান করার প্রয়াশও হয়েছিল। জানা গেছে, কোন এক বোর্ড কর্তাকে সাথে নিয়ে বসেছিলেন এই দুজন। সেখানে তামিম সমাধানের পথে হাঁটতে চাইলেও সাকিবের কাছ থেকে আসেনি ইতিবাচক উত্তর।
তবে ভবিষ্যতে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই সম্ভব। তবে যা কিছুই হয়েছিল সেটা দুজনের ভিতরে। আমি এটা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না।’
আর দলের ভিতরে গ্রুপিং এর ব্যাপারটা একেবারেই অস্বীকার করেছেন এই অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমি সতেরো বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি। যখনই দল খারাপ সময় কাটায় তখনই এই গ্রুপিং এর কথাটা আসে। তবে আমি ১৭ বছর আগেও কোন গ্রুপিং দেখিনি, ৫ বছর আগেও দেখিনি, এখনও কিছু দেখি না।’
দলের মধ্যে ক্রিকেটারদের বন্ধুত্ব থাকা বা না থাকার চেয়েও অনেক বড় অভিযোগ শুনতে হয় তামিম ইকবালকে। তামিম ইকবাল নাকি বড় দলের বিপক্ষে খেলতে চান না। কিংবা বড় দলের বিপক্ষে সিরিজের আগেই ইনজুরিতে পড়ে যান তিনি।
এমন আলোচনায় একেবারেই হতাশ বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। তিনি বলেন, আমি মনে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি রান করেছি। তারপরও যদি এই কথা শুনতে হয় তাহলে খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সতেরো বছরে আমি ৯০ শতাংশ ম্যাচ খেলেছি। কিছু ম্যাচ হয়তো ইনজুরির কারণে মিস করেছি। এরপরও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে দুর্ভাগ্যজনক।’
তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগের পাল্টা প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন তামিম, ‘ইংল্যান্ড সিরিজও তো গুরুত্বপূর্ণ। ওরা তো বড় দল। তাহলে আমি কেন এই সিরিজে আছি? ওদের তো বোলিং অ্যাটক আরো স্ট্রং।’