বাইরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে খানিকটা টালমাটাল বাংলাদেশ ক্রিকেট। কোচ হিসেবে চান্দিকা হাতুরুসিংহের ফিরে আসার পাশাপাশি দলের মাঝে গ্রুপিং এবং খালেদ মাহমুদ সুজনের ভূমিকা সব মিলিয়ে খুব একটা ভালো নেই জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমের অভ্যন্তর। তবে অধিনায়ক তামিম ইকবালের আশা ঘরের মাঠে এবার আট বছর আগে হারের বদলা নেবে স্বাগতিকরা। 

তিন ফরম্যাটের মাঝে ওডিয়াই ক্রিকেটটা বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো খেলে। গত বছরেই সিরিজ জিতে ফিরেছে সুদূর প্রোটিয়া মুলুক থেকে। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে তো রীতিমত অপ্রতিরোধ্য টাইগাররা।

২০১৫ সালের পর কেবলমাত্র ইংল্যান্ডই সিরিজ জিতে ফিরতে পেরেছে বাংলাদেশ থেকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবারের সিরিজটা বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্য তাই নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেবার। 

কিন্তু এই বছরের শুরুতেই খানিকটা বেসামাল বাংলাদেশ ক্রিকেট। ড্রেসিংরুমের নেতিবাচক পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন স্বয়ং বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কোচ হিসেবে পুরনো দায়িত্ব ফিরেছেন লংকান চান্দিকা হাতুরুসিংহে। পুরনো তিক্ততা ভুলে তিনি কি দলকে এক সুতোয় গাঁথতে পারবেন কিনা সে প্রশ্নটা তো থাকছেই।

বোর্ড সভাপতির কথায় উঠে এসেছে জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমের নানা অন্ধকার দিক। সাকিব – তামিমের মধ্যকার অস্বস্তি, সিনিয়রদের গ্রুপিং ছাড়াও শোনা গেছে টিম ডিরেক্টরের ভূমিকা নিয়ে বিগত কোচদের বিরক্তির কথা। সব মিলিয়ে তাই খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট।

তবে এর মাঝেও ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে আশার কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দলের ভেতরটা সদরঘাট হলেও বাইরের দিকটা ফিটফাট রাখার চেষ্টাই করেছেন তিনি। অনুশীলনের মাঝে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তামিম। তবে সেখানেও ঘুরেফিরে এসেছে আসন্ন বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ। বড় দলের সাথে সিরিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহ থাকলেও পাখির চোখ তো বিশ্বকাপেই। 

তিনি বলেন, ‘ট্রু উইকেটে আমাদের আরো ভালো ক্রিকেট খেলা উচিৎ। ইংল্যান্ডের সাথে তিনটা ম্যাচই মিরপুরে। বিশ্বকাপে ট্রু উইকেটই হবে। হারটা আমরা চিন্তাই করতে পারি না। তবে সেভাবে ভাবতে হবে। বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে আমরা কিছু পদক্ষেপও নিচ্ছি।’

ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ হওয়ায় উইকেট খানিকটা স্পিন সহায়ক হবে এমনটাই ভাবছেন সবাই। এমতাবস্থায় সাকিব আল হাসান এবং মেহেদি হাসান মিরাজের মানের বিশ্বমানের দুইজন অলরাউন্ডারের উপস্থিতি যে কোনো দলের জন্য আশীর্বাদ। তামিমও প্রশংসা করেছেন এই দুই অলরাউন্ডারের। 

অধিনায়ক বলেন, ‘সাকিব এবং মিরাজের মতো দুইজন অলরাউন্ডার থাকলে অধিনায়কের জন্য একাদশ সাজানো খুব সহজ হয়ে যায়। আমাদের জন্য এটা আশীর্বাদ। সে অসাধারণ এক প্রতিভা। নিজের উপর ওর বিশ্বাসটা প্রবল।’ 

এছাড়া দলে দীর্ঘদিন পরে ডাক পাওয়া তাইজুলকে নিয়েও আশার কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক। তামিম বলেন, “যে পারফর্ম করছে আমি তাঁকেই ব্যাক করি। তাইজুল ৩ ম্যাচে ৮ উইকেট পেয়েছে। ভারতের বিপক্ষে না থাকায় আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। নাসুমও দারুণ। টি-টোয়েন্টি তে ভালো করছে।” 

এছাড়া সাকিবের সাথে তাঁর সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে তামিমকে। তবে এক্ষেত্রে অধিনায়ক খানিকটা ডিপ্লোম্যাটিক উপায়েই এড়িয়ে গেছেন। বলেন, ‘টিমের সবাই আমার বন্ধু। আমি সবার সাথেই ডিনার করি, তাসকিন, মিথুন, শান্ত, মুশফিক।’

তাছাড়া উঠে এসেছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের অফ ফর্মের কথাও। বিশেষ করে গত বছরটা মোটেও ভালো কাটেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য। অধিনায়ক অবশ্য ভরসার হাত রাখছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের কাঁধে। পাশাপাশি উঠে এসেছে ফিনিশার রোলে নতুন কাউকে বাজিয়ে দেখার কথাও।

বলেন, ‘রিয়াদ ভাই, গত বছর দারুণ কিছু ইনিংস খেলেছে। আমাদের হার্ডহিটার রিয়াদ ভাই, আফিফ পারে, ব্যাকআপ হিসেবে রাব্বি আছে, হৃদয়ও পারে। তারাই আমাদের হার্ডহিটার। আমরা হৃদয়কে সুবিধামতই ব্যবহার করব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link