কি রহস্য মালানের ব্যাটে!

নিজেদের প্রথম ওভারেই সাকিবের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন জেসন রয়। তামিম ইকবাল খানিকটা দৌড়ে এসে লুফে নিলেন সহজ ক্যাচটা। প্রথম ওভারেই উইকেট আসল সাকিব-তামিমের হাত ধরে। এরপর দুজনে মিলে করলেন উদযাপনও। বাইরের এত আলোচনা-সমালোচনা সবকিছু বৃথা ওই সবুজ মাঠটায়। তামিম ঠিক যেমনটা বলেছিলেন।

বাংলাদেশ দিতে পেরেছিল ২১০ রানের মামুলি টার্গেট। তাও আবার ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ব্যাটিং লাইন আপের সামনে। ইংল্যান্ড তো ম্যাচ জিতবে হেসে খেলেই। প্রথম ইনিংসের পর ধারণাটা এমনই ছিল। তবে মাঠটা যে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। এখানে কোন রানই মামুলি নয়। প্রতিটা রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয় ডেভিড মালানদের।

ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামলে প্রথম ধাক্কা দিলেন সাকিব আল হাসানই। তাঁর দেখানো পথেই পরে হেঁটেছে বাংলাদেশের অন্য বোলাররা। এই টার্গেট নিয়েও লড়াই করা যায় সেই বিশ্বাসটা ছড়িয়ে পড়েছিল সবার মধ্যে।

এরপর তাইজুল ইসলাম উত্তর দিলেন সব সমালোচনার। তাঁকে ওয়ানডে দলে নেয়া নিয়ে অনেক কথাই হয়েছে গত কয়েক দিন। সেসবের উত্তর দেয়ার জন্য তিনি বাইশ গজটাই বেঁছে নিলেন। টানা দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দিলেন বাংলাদেশকে। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড তখন চাপে।

এরপর উইকেট তুলে নেয়ার জন্য তামিম ইকবাল বোলিংয়ে আনলেন তাঁর সেরা অস্ত্রকে। ইনিংসের ১৭ তম ওভারে তাসকিনের জন্য স্লিপও রাখা হল। আর তামিমকেও জস বাটলারের উইকেটটা এনে দিলেন তাসকিন আহমেদ। ৬৫ রানেই চার উইকেট হারাল ইংল্যান্ড।

তবে এরপর আবার ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে ইংল্যান্ড। ছোট ছোট জুটি গড়ে ম্যাচের লাগাম ফিরে পেতে চেয়েছে। বিশেষ করে ডেভিড মালান একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং চালিয়ে যান। মিরপুরের উইকেটে সাথে মানিয়েই ব্যাটিং করতে থাকেন তিনি। তবে অন্যপ্রান্ত থেকে আর কেউই সঙ্গ দিতে পারেনি এই ব্যাটারকে।

একাই দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জয়ের দিকে। এক মালানের কাছেই আত্মসমর্পন করে বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপ। তাসকিনের ওভারে চার মেরে নিশ্চিত করেছেন নিজের সেঞ্চুরিও। ১৩৪ বলে নিজের এই সেঞ্চুরির দেখা পান মালান।

ওদিকে বাংলাদেশের হয়ে আজ তিন উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদও। উইকেট থেকে খুব বেশি সুবিধা না পেলেও তাঁর গতি ভালোই ভুগিয়েছে ইংলিশ ব্যাটারদের।

মেহেদী হাসান মিরাজও ৩৫ রান খরচ করে নিয়েছেন দুই উইকেট। বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করলেও ব্যাটারদের থেকে প্রয়োজন ছিল আরেকটু দায়িত্বশীলতা। নিজেদের ইনিংসে ১৬ বল আগেই অল আউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই বলগুলো খেলতে পারলেও টার্গেট আরেকটু বাড়ানো যেত।

তবে ২১০ রানের টার্গেট দিয়েও ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। সাত উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ডের জন্য একটা সময় ম্যাচ জেতাটা কঠিনই হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত মালানের সেঞ্চুরিতে আর হোচট খেতে হয়নি দলটাকে।

তবে বাংলাদেশের বোলাররা ম্যাচ নিয়ে গিয়েছেন একেবারে শেষ অবধি। আদিল রশিদ ও ডেভিড মালান অসাধারণ এক জুটি গড়েই নিয়ে গিয়েছেন দলকে জয়ের বন্দরে। শেষ পর্যন্ত ১১৪ রানে অপরাজিত থাকেন মালান। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৩ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link