বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম গ্লোবাল সুপারস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল। অমিত প্রতিভাবান এই ব্যাটারের সুযোগ ছিলো বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ব্যাটার হবার। কিন্তু সেই সম্ভাবনা অঙ্কুরেই নষ্ট হয়েছে ফিক্সিং কাণ্ডে। ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ হবার পর মাঠে ফিরেছিলেন আবারো লাল সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর জন্য।
গত চার মৌসুম ধরে ঘড়োয়া লিগে খেললেও জাতীয় দলের বিবেচনায়ই আসেননি আর। সামনের জুলাইয়ে ৩৯-এ পা দিতে যাওয়া আশরাফুল এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার।
সামনের ঘরোয়া মৌসুম খেলেই ক্রিকেটকে বিদায় বলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের এই সাবেক অধিনায়ক। দেশের জার্সি আরেকটিবার না পরতে পারার আক্ষেপ নিয়ে সব রকম ক্রিকেটকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে দিলেন তিনি।
খেলা ৭১-কে আশরাফুল নিজের অবসর পরিকল্পনা খোলাসা করেন। তিনি বলেন, ‘এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগই আমার সর্বশেষ মৌসুম। এরপর এনসিএল, বিসিএল খেলে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসরে যাব।’
গত মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলা আশরাফুল এবার নাম লিখিয়েছেন সাকিব আল হাসানের দল মোহামেডান স্পোর্টস ক্লাবে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একটি মৌসুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন।
তবে, বাকি গুলোতে নিজের নামের প্রতি তেমন সুবিচার করতে পারেননি আশরাফুল। মোহামেডানের জার্সিতে নিজের শেষটা নিশ্চই মনে রাখার মত করে রাখতে চাইবেন আশরাফুল।
এখন পর্যন্ত ২৭৯ টি লিস্ট এ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন এই ব্যাটার। লিস্ট এ ক্রিকেটে ২৫.৪৪ গড়ে আশরাফুল করেছেন ছয় হাজারের বেশি রান। আছে ১১ টি সেঞ্চুরি ও ৩১ টি হাফ সেঞ্চুরি। লিস্ট এ তে আশরাফুলের সর্বোচ্চ ১৪১ রানের ইনিংস।
ঢাকা লিগের পর লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেটেও নিজের শেষ মৌসুম খেলবেন ৩৮ বছর বয়সী আশরাফুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৮৩ ম্যাচ খেলা ‘অ্যাশ’ ২৮.৬৩ গড়ে নয় হাজার ১৯২ রান করেছেন। আছে ২১ টি শতক ও ৪২ টি অর্ধ শতক।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন থেকে মোহামেডানে নাম লিখিয়েছেন আজই। এর পরপরই জানালেন মোহামেডানের জার্সিতেই সীমিত ওভারের ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসরে যাচ্ছেন তিনি। নিজের শেষটা রাঙিয়ে রাখতে নিশ্চয়ই মোহামেডানের হয়ে শিরোপা জিতে রাঙিয়ে রাখতে চাইবেন আশরাফুল।
আশরাফুল, সাকিবসহ শিরোপা জেতার মতোই দল গড়েছে মোহামেডান। ইমরুল কায়েস, মেহেদি হাসান মিরাজ,খালেদ আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বিদের এবার দলে ভিড়িয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি। সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদেরও ধরে রেখেছে তারা।
২০১৩ সালে শেষবার লাল সবুজ জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন আশরাফুল। এরপর ফিক্সিং কাণ্ডে নিষিদ্ধ হয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন পাঁচ বছর। মাঠে ফিরে নিয়মিতই খেলেছেন ঘরোয়া আসর গুলোতে।
কিন্তু, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের মাঠে নামার স্বপ্নটা ধীরে ধীরে দূরে সরে গেছে আশরাফুলের জন্য। বয়সটা যখন ৩৯ ছুঁই ছু্ঁই তখন ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললেন। এবারের ঘরোয়া মৌসুমের পর ব্যাটহাতে আর মাঠে দেখা যাবেনা দর্শকদের ভালোবাসার ‘আশার ফুল’কে।