মেসির শহর এখন অপরাধের আখরা

চির-বিপ্লবী আর্নেস্তো চে গুয়েভারার শহর আর্জেন্টিনার রোজারিও। চে গুয়েভারার জন্মস্থান হিসেবে এমনিতেই বিশ্বজুড়ে পরিচিত রোজারিও। তার ওপর ১৯৮৭ একই শহরে জন্ম হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবল প্রতিভা লিওনেল মেসির।

এমন মহাতারকাদের জন্ম দিয়েছে যে শহর সেই শহরই এখন কিনা খবরের শিরোনামে আসে মাদক ব্যবসার আতুড়ঘর হিসেবে। ব্যাপারটা খানিকটা ভ্রু কুচকানোর মতই। এই তো সেদিনই মেসির সহধর্মিনী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর পারিবারিক মালিকানাধীন একটি সুপার মার্কেটে গুলি পর্যন্ত চালিয়েছে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তরা।

শুলি চালিয়েই শুধু ক্ষান্ত হয়নি তারা। যাবার সময় মেসির প্রতি প্রছন্ন হুমকিও দিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। মেসির জন্য অপেক্ষা করছে তারা এমন বার্তাই দেয়া হয়েছে চিরকুটে। এমন ঘটনার পর মেসি আর নিজ শহরে ফিরবেন কিনা সে নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দেশের সবচেয়ে বড় তারকার নিজ মাতৃভূমিতে ফেরা নিয়ে এমন অনিশ্চয়তায় নড়ে চড়ে বসেছে আর্জেন্টাইন সরকারও।

স্বয়ং আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজও বিষয়টি আলাদা ভাবে নজরে রাখছেন। আর নজরে রাখবেন না ই বা কেন। এই বছর শুধু রোজারিওতেই মাদক সন্ত্রাসে হত্যা করা হয়েছে ৬৫ জনকে। রোজারিও তাই আর্জেন্টিনার মাদক ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। গত সাপ্তাহে আর্জেন্টিনার কংগ্রেসেও আলোচনা হয়েছে এই বিষয়টি নিয়ে।

এর আগেও মাদক কারবারি আর মাদকসেবীদের সাথে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে আর্জেন্টিনার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। গত বছর কেবলমাত্র রোজারিও থেকেই ২০৭৭ জনকে মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।

শুধু মাদক পাচারই নয়, মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অর্থ পাচারেরও। কংগ্রেসে আর্জেন্টাইন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনিবাল ফার্নান্দেজ বলেন,‘রোজারিওতে যেসব মাদক আনা হচ্ছে তা ডলার এবং ব্যাংক নোটের মাধ্যমে পরিশোধ করা হচ্ছে। এটা সত্যিই খুব কষ্টের। এবং আমরা এটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছি।’ আর্জেন্টিনা প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি আশেপাশের এলাকার লোককে মাদক পাচারের জন্য ভাড়া করা হচ্ছে। আমরা তাদের খুঁজছি। রোজারিও এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।’

রোজারিওতে মাদক সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধও যেন অনেকটা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োগ দেয়া হবে রোজারিওতে।

এমন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরেও উদ্ভুত পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না কিছুতেই। এমন যখন পরিস্থিতি তখন মেসি নিজের শহরে ফিরবেন না বলেই মনে করছেন সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link