বার্সা কেলেঙ্কারি: কে এই এনরিকুয়েজ নেগ্রেইরা?

বিভিন্ন সময়ে নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে ক্লাবগুলোর শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার ঘটনা ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই তালিকায় বার্সেলোনার নাম দেখলে খানিকটা চমকে উঠবেন সবাই, স্প্যানিশ ক্লাবটি যে সবসময় ফলাফলের চাইতে বরং নৈতিকতা এবং মাঠের বাইরে ক্লাবের ভাবমূর্তিকেই প্রাধান্য দিত। অথচ রেফারিকে অর্থ প্রদানসহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ক্লাবটির বিপক্ষে। 

বিভিন্ন সময়ে নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে ক্লাবগুলোর শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার ঘটনা ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই তালিকায় বার্সেলোনার নাম দেখলে খানিকটা চমকে উঠবেন সবাই, স্প্যানিশ ক্লাবটি যে সব সময় ফলাফলের চাইতে বরং নৈতিকতা এবং মাঠের বাইরে ক্লাবের ভাবমূর্তিকেই প্রাধান্য দিত। অথচ রেফারিকে অর্থ প্রদানসহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ক্লাবটির বিপক্ষে। 

জোসেফ বার্তোমেউ সভাপতি থাকাকালীন সময়ে লা লিগার রেফারিং কমিটির সহ সভাপতি হোসে মারিয়া এনরিকুয়েজ নেগ্রেইরার কোম্পানিকে ১.৪ মিলিয়ন ইউরো দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিন বছরে ডাসনিল ৯৫ নামক কোম্পানিকে এই পরিমাণ অর্থ প্রদান করে ক্লাবটি। 

যদিও তাঁদের দাবি বার্সা অর্থ প্রদান করেছিল পরামর্শমূলক কাজের জন্য। নেগ্রেইরা মূলত ফুটবলারদের শেখাতেন রেফারিদের সাথে মাঠে কিভাবে আচরণ করতে হবে। এছাড়া ম্যাচ চলাকালীন সময়ে তাঁরা কি করতে পারবেন আর কি করা থেকে বিরত থাকতে হবে, সেসব বিষয়ের সাথে বার্সার খেলোয়াড়দের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তিনি। 

তবে বার্সার বিপক্ষে এই অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে কাতালান ক্লাবটির জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ানক দু:সময়। লা লিগা থেকে অবনমন তো বটেই, এবারের মৌসুম থেকেও বড় পয়েন্ট কেটে নেয়া হতে পারে ক্লাবটির। 

নেগ্রেইরার পরিচয় নিয়ে গোটা বিশ্ব ধোঁয়াশায় থাকলেও স্প্যানিশ ফুটবলে নেগ্রেইরা একজন পরিচিত মুখ। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত স্প্যানিশ প্রথম বিভাগ ফুটবলে রেফারিং করেছেন। মাঠে অবশ্য কড়া রেফারি হিসেবে কুখ্যাতি ছিল তাঁর। বাঁশি হাতে ১৩২ ম্যাচে নেমে ৫০ বার লাল কার্ডের পাশাপাশি ৪৩৩ বার হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ প্রায় প্রতি তিন ম্যাচে একটি করে লাল কার্ড দেখিয়েছেন তিনি। 

১৯৯৪ সালে লা লিগার রেফারিজ কমিটির সহ সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। সেই দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন সুদীর্ঘ ২৪ বছর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৫ সালে তিনি ডাসনিল৯৫ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন যেটা মূলত খাদ্যদ্রব্যাদি নিয়ে কাজ করতো।

কিন্তু, পাঁচ বছর বাদেই বদলে ফেলেন কোম্পানির খোলনলচে। ডাসনিল ৯৫ তখন কাজ করতে শুরু করে ফুটবল মার্কেটিং নিয়ে, ক্লাবগুলোর জন্য বিভিন্ন প্রচারণামূলক ভিডিও তৈরি করতো তাঁরা। 

শুরুতে নেগ্রেইরা নিজেই সবকিছু দেখভাল করলেও ২০০৪ সালে তাঁর ছেলে জাভিয়ের এনরিকে রোমেরো যুক্ত হন কোম্পানির। রোমেরো নিজেও এক সময় ফুটবল খেলতেন। কখনো পেশাদার শীর্ষ সারির ফুটবল না খেললেও বার্সেলোনা এবং এস্পানিওলের নিচু সারির লিগগুলোতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। কিন্তু ২০১৬ সালে এনরিকে পরিবার এক স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়লে কোম্পানি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। 

আদালতে অবশ্য নেগ্রেইরা এবং জাভিয়ের দুজনেই দাবি করেছেন বার্সেলোনাকে অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা তাঁরা দেননি। বরং তাঁদের সম্পর্কটা পুরোটাই পেশাদারিত্বের। এমনিতেই আর্থিক নানা সংকটে মাঠে এবং মাঠের বাইরে ভয়াবহ দু:সময় পার করছে বার্সেলোনা। এমন অবস্থায় রেফারিকে অর্থ প্রদানের এই অভিযোগ তাঁদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...