পিএসএল দিয়ে উত্থান যাদের

আইপিএলের সমমানের না হলেও বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে আলাদা আকর্ষণ আছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল)। পাকিস্তানের তরুণ ক্রিকেটাররা ছাড়াও অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারেরই উত্থান হয়েছে পিএসএল দিয়ে। আসুন দেখে যাক সেইসব তারকাদের যাদের ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল পিএসএল দিয়ে। 

  • বাবর আজম (পাকিস্তান)

তালিকার শুরুতেই আছে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের নাম। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলো ছড়ানোর পূর্বে পাদপ্রদীপের আলোয় আসতে বাবর বেছে নিয়েছিলেন পিএসএলকেই।

পিএসএলের দ্বিতীয় মৌসুমে দশ ম্যাচে ২৯১ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হন বাবর। ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন পরের মৌসুমেও, সেবারে নির্বাচিত হন তৃতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। এরপরই মূলত জাতীয় দলে ডাক পান এই তারকা ব্যাটসম্যান।

  • শাহীন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান)

পাকিস্তানের তারকা পেসার শাহীন আফ্রিদির উত্থানও পিএসএল দিয়ে। ২০১৯ মৌসুমে আট ম্যাচে দশ উইকেট শিকার করে নির্বাচকদের নজর কাড়েন এই বাঁহাতি পেসার। 

পরের মৌসুমে যেন আরো বিধ্বংসী শাহীন। এবারে ১৭ উইকেট নিয়ে বনে যান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। এরপর জাতীয় দলে সুযোগ পাবার পর থেকে ক্যারিয়ারের গ্রাফটা ক্রমশই ঊর্ধ্বগামী এই পেসারের।

  • হাসান আলী (পাকিস্তান)

পাকিস্তানি পেসার হাসান আলীর ক্যারিয়ারের শুরুটা পিএসএল দিয়েই। ২০১৭ মৌসুমে ১১ ম্যাচ খেলে শিকার করেন ১২ উইকেট।

এরপর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রীতিমতো ইতিহাস গড়েন। পিএসএলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন পরের মৌসুমেও, নয় ম্যাচে শিকার করেন ১২ উইকেট। ২০১৯ মৌসুমে তো রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য ছিলেন এই পেসার, ২৬ উইকেট নিয়ে বনে যান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। 

  • মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান)

টি টোয়েন্টিতে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অবিচ্ছেদ্য এক অংশ মোহাম্মদ রিজওয়ান। উইকেটকিপিংয়ের পাশাপাশি দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন এই তারকা।

২০২১ মৌসুমে ১২ ম্যাচে ৫০০ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হন রিজওয়ান। বিগত মৌসুমেও ৫৪৬ রান করে নির্বাচিত হন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। কয়েক মৌসুম ধরেই পিএসএলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ক্রিকেটারদের একজন মোহাম্মদ রিজওয়ান।

  • ইমাম উল হক (পাকিস্তান)

২০১৯ পিএসএল মৌসুমে ১২ ম্যাচে ৩৪১ রান করে সবার নজরে আসেন ইমাম উল হক। এরপরের মৌসুমগুলোতেও পিএসএলে নিয়মিত পারফর্ম করার ফলে ডাক পান জাতীয় দলেও। এখনো পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ২০ টেস্ট, ৫৬ ওডিয়াই এবং দুইটি টি টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছেন ইমাম। মূলত পিএসএলে তাঁর পারফরম্যান্স দেখেই জাতীয় দলে ডাকেন নির্বাচকরা।

  • জেসন রয় (ইংল্যান্ড)

২০১৭ মৌসুমে অল্প সময়ের জন্য পিএসএলে আসলেও নিজের সামর্থ্যের জানান দেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়। সেবারে পাঁচ ম্যাচে ৪৩.২৫ গড়ে সংগ্রহ করেন ১৭৩ রান। এছাড়া তাঁর দেড়শ ছাড়ানো স্ট্রাইকরেট নজর কেড়েছিল সবার। পিএসএলে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদেই জাতীয় দলে ডাক পান এই তারকা। 

  • রাইলি রুশো (দক্ষিণ আফ্রিকা)

দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো ২০১৭ পিএসএলে নয় ম্যাচে সংগ্রহ করেন ২৫৫ রান। এরপর ২০১৯ মৌসুমেও বজায় রাখেন ধারাবাহিকতা, ১৫ ম্যাচে ৩৬৪ রান নিয়ে নির্বাচিত হন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। সেই পারফরম্যান্সের সুবাদেই জাতীয় দলে জায়গা পাকাপোক্ত হয় রুশোর।

  • অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড)

জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর বিশ্বজুড়ে ফ্যাঞ্চাইজি টি টোয়েন্টি লিগে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেছেন অ্যালেক্স হেলস। তবে জাতীয় দলে তাঁর প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে পিএসএলে তাঁর ধারাবাহিকতা। 

২০২০ পিএসএলে মাত্র সাত ম্যাচে সংগ্রহ করেন ২৭২ রান। এক মৌসুম বাদেই যেন নিজেকে ছাড়িয়ে যান তিনি, ৩৫৫ রান নিয়ে নির্বাচিত হন টুর্নামেন্টের পঞ্চম সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। পিএসএলে তাঁর ধারাবাহিকতা এবং মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদেই জাতীয় দলে নিজের জায়গা ফিরে পান হেলস।

  • হ্যারি ব্রুক (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের নতুন ব্যাটিং তারকা হ্যারি ব্রুকের উত্থান হয়েছিল পিএসএল দিয়েই। ২০২২ মৌসুমে ৫২.৮০ গড় এবং দেড়শ ছাড়ানো স্ট্রাইকরেটে ১০ ম্যাচে সংগ্রহ করেন ২৬৪ রান।

 

পিএসএলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদেই টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপগামী জাতীয় দলে সুযোগ পান ব্রুক। পিএসএলের ধারাবাহিকতা তিনি বর্তমানে টেনে এনেছেন জাতীয় দলেও।

  • জেমস ভিন্স (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ড তারকা জেমস ভিন্সের যেন পুর্নজন্ম ঘটেছে পিএসএল খেলার মাধ্যমে। নিজের ব্যাটিংয়ে রীতিমতো আমূল পরিবর্তন এনেছেন এই তারকা।

২০২০ মৌসুমে মাত্র পাঁচ ম্যাচে খেলে সংগ্রহ করেন ১৫৫ রান। এছাড়া তাঁর ১৭০ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইকরেট নজর কেড়েছে সবার। তাঁর দুর্দান্ত স্ট্রাইকরেটই জানান দেয় ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে কতোটা ভয়ংকর তিনি। এখনো পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ১৭ টি টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছেন তিনি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link