প্রায় এক যুগ বাদে আবারো বিশ্বকাপ ফিরছে এশিয়ার মাটিতে। ভারতের আতিথিয়তায় ক্রিকেটীয় এ মহাযজ্ঞের আর মাস সাতেকের অপেক্ষা। শেষ বার ২০১১ সালে যখন ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শচীন, ধোনিরা। বছর দুই বাদে ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপাও জিতেছিল ভারত। তবে এরপরেই শুরু হয় ভারতের শিরোপা খরা। সে সময়ের প্রায় এক দশক পেরিয়ে গেলেও ভারতে আর আইসিসি’র কোনো শিরোপা ফেরেনি।
আইসিসি’র শিরোপা খরার দীর্ঘ এ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার কি তবে ভারত সেই এক যুগ আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারবে? ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার অবশ্য রাস্তাটাকে কঠিনই মনে করছেন। তাঁর মতে, বিশ্বকাপের বছরে সব ক্রিকেটারকে এক সাথে না পাওয়াটাই ভারতের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বিশ্বকাপের আগে দল গোছানোর কাছে বেশ ভাল ভাবেই এগিয়ে আছে ভারত। তাদের জন্য স্বস্তির কারণ হয়ে এসেছে বিরাট কোহলির ফিরে পাওয়া ফর্ম, শুভমান গিলের দারুণ ছন্দ, ইনজুরি থেকে রবীন্দ্র জাদেজার ফিরে আসা। তবে ইনজুরির কারণে এখনো অনিশ্চিত ঋষাভ পান্ত আর জাসপ্রিত বুমরাহ।
ঋষাভ পান্তের জন্য বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনাটা এখন পর্যন্ত বেশ ক্ষীণই বলা চলে। তবে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি দিয়েই মাঠে ফেরার কথা ছিল বুমরাহ’র। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ পেসারের মাঠে ফেরার নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।
অনেকেই ধারণা করছেন, নতুন করে ইনজুরির প্রবণতাতেই মাঠে ফেরা হচ্ছে না বুমরাহর। তবে এখানেই কয়েকটা প্রশ্নের উদয় হয়। ম্যাচ খেলার মতো আদৌ ফিট তো বুমরাহ? আর কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁকে নামিয়ে দিলে উল্টো ভারতের জন্য তা বুমেরাং হয়ে যাবে না তো?
ভারতের স্কোয়াডে এই ইনজুরির সমস্যার ক্ষতিকারক দিক নিয়েই সুনীল গাভাস্কার সম্প্রতি মিড ডে নামক একটি পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। তাঁর মতে, এই ইনজুরি সমস্যায় বিশ্বকাপে ভোগাতে পারে দলকে। ইনজুরির কারণে একটা দলের সমন্বয় নষ্ট হতে পারে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে সাবেক এ ক্রিকেটার সে কলামে লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপের বছরে দলে ইনজুরির সমস্যা থাকা ভাল নয়। এটা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটায়। এমনকি দলের সমন্বয়ও নষ্ট করে। যার ফলটা মিলে বিশ্বকাপের সময়ে।’
সে কলামে তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আমার মনে হয় বিসিসিআইয়ের ভাবনায় পরিবর্তন আনা উচিৎ। এ গ্রেডের সকল খেলোয়াড় ঠিক সময়েই বেতন পায়। কিন্তু অনেকেই আবার কোনো কারণ ছাড়াই ছুটি নেন। আমাকে একটি কোম্পানির কথা বলুন, যাদের সিইও অথবা এমডি কাজ না করে স্যাল্যারি গ্রহণ করে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের আরো পেশাদার হওয়া উচিৎ। কেউ যদি বিশ্রামে যেতে চায়, তাহলে তাঁকে আগে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই কেউ কিভাবে বলতে পারে যে, আমি ভারতের হয়ে খেলতে চাই না। এই ধরনের ভাবনা গ্রহণযোগ্য নয়।’