সাকিব ও কনভার্সন রেট

ঘরের মাঠে বাংলাদেশের খেলা। এই সময় আসলে খুব উন্নত মানের ধারাভাষ্য আশা করে লাভ নেই। এরপরও যখন সাকিব আল হাসান ব্যাট করছিলেন তখন একটা কথা বার বার ভেসে আসছিল – কনভার্সন রেট। কেউ একজন তো বলেই দিলেন, সাকিবের চেয়ে মুশফিকুর রহিমের কনভার্সন রেট ভাল। কার্যত, তামিম ইকবাল কিংবা মুশফিক – দু’জনের চেয়েই কনভার্সন রেটে পিছিয়ে আছেন সাকিব।

মিরপুরে আইরিশ বোলারদের বিপক্ষে সাকিব এদিন প্রায় ওয়ানডে ঘরানার ক্রিকেটই খেলেছেন। ৯৪ বল খেলে করেছেন ৮৭ রান। তবে, এখানেও মিশে আছে আক্ষেপ – সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ।

এই নিয়ে ১৩ বার ৮০ রান ছুঁয়েও সেঞ্চুরি পর্যন্ত যাওয়া হলো না সাকিবের। যদিও, এই ১৩ ইনিংসের দুটিতে অপরাজিত ছিলেন। বাকি ১১ ইনিংসের অন্তত ৫টি সেঞ্চুরি হলেও তার মোট সেঞ্চুরি এখন থাকত ১০টি। রানও অন্তত পাঁচ হাজারের ওপর থাকত। অলরাউন্ড গ্রেটনেসের মাপকাঠিতে সাকিব তখন কোথায় উঠতেন – ভাবা যায়!

অবশ্য এদিন কিংবা কোনোদিন সাকিব এসব নিয়ে খুব একটা ভাবেন বলে মনেই হয় না। তিনি নিজের আনন্দে খেলেন। কিংবা কখনও মনে আনন্দ না থাকলেও খেলেন। তবে, মিরপুরের এই ইনিংসটা বেশ বিনোদনই দিয়ে গেল। তবে, নিশ্চয়ই সেঞ্চুরি দিয়ে ইনিংসটার গুরুত্ব আরও বাড়াতে পারতেন সাকিব।

সাকিব নিজের ৩১তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি অবশ্য পেয়ে গেছেন। আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম ইকবালের সাথে তিনি যৌথভাবে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিফটির মালিক। ৫০-এর ওপর ইনিংসে সাকিব আছেন দ্বিতীয়তে। টেস্টে তিনি ৩৬ বার ৫০ কিংবা তার বেশি রান করেছেন। ৩৫ টি নিয়ে মুশফিক দ্বিতীয়। এই ক্লাসের ফার্স্ট বয় তামিম ইকবাল। তিনি ৫০ কিংবা তাঁর বেশি রান করেছেন ৪১ বার। তামিম কিংবা মুশফিক দু’জনই সাকিবের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন আসলে ওই কনভার্সন রেটে। তামিম কিংবা মুশফিক – দু’জনেরই আছে ১০ টি করে টেস্ট সেঞ্চুরি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ টা ফিফটির দুয়ারে চলে এসেছেন সাকিব। এটা তাঁর ৯৬ তম হাফ সেঞ্চুরি। হাফ সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি থেকে তিনি মাত্র চারটা ৫০ রানের ইনিংস দূরত্বে আছেন।

তবে, ব্যাটিং গড় বিবেচনায় এখন বাংলাদেশের সেরা সাকিব।  সাকিবের টেস্ট ব্যাটিং গড় মিরপুরের এই ইনিংস শেষে ৩৯.০৭। টেস্টে কমপক্ষে ২০০ রান করা বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ। সাকিবের টেস্ট গড় ২০১৭ সালে একবার ৪০-এর ওপরও ছিল। সাকিব নিশ্চয়ই আবারও সেখানে যেতে চাইবেন। ৪০-এর ওপর ব্যাটিং গড় নিয়েই শেষ করতে চাইবেন টেস্ট ক্যারিয়ার। আর এ জন্য তো কনভার্সন রেট নিয়ে কাজ করাটা খুব জরুরী।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link