‘এটা কিভাবে আউট হয়! ফাজলামি নাকি!’

কার্যত আজ অবধি হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড মধ্যকার একমাত্র টেস্ট। তবে সেটা হয়নি। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নিয়েছে দেড় দিন হাতে রেখে। স্বাভাবিকভাবে চারদিন তপ্ত গরমে খেলে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বিশ্রাম করবার কথা। অধিকাংশ ক্রিকেটার হয়ত তাই করছেন। তবে এদিকটায় খানিকটা ব্যতিক্রম সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

এই দুইজন টেস্ট জয়ের পরদিনই যোগ দিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে। মোহামেডানের হয়ে দুইজনই নেমেছেন বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে। ব্যাট হাতে সাকিব তাও শেষের দিকে আগ্রাসনটা দেখিয়েছেন। তবে মিরাজের যেন ভাগ্যই মন্দ। বাজে আম্পায়ারিংয়ের বলি হতে হয়েছে তাঁকে। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে শুরুতেই শেষ তাঁর ইনিংস।

সেই নিয়ে অবশ্য মিরাজ বেশ একটা কোলাহল সৃষ্টি করেছেন। তৃতীয় আম্পায়ারকে গিয়েও নালিশ করে আসেন মিরাজ। বলতে থাকেন, ‘এটা কিভাবে আউট হয়! ফাজলামি নাকি!’

পরে বারবার নিজের মুঠোফোনে থাকা ভিডিও পর্যালোচনা করেছেন। সতীর্থদের দেখিয়েছেন। নালিশ করেছেন বড়দের কাছে। সেই আউট নিয়ে রীতিমত সমালোচনার একটা গোল টেবিল বৈঠক বসে যায় প্যাভিলিয়নে। উত্তপ্ত আবহাওয়ায় ম্যাচের তাপ বাড়িয়ে দেয় মিরাজের এই বিতর্কিত আউট।

তবে তাঁর আগে ইমরুল কায়েস খানিকটা জ্বালানির সঞ্চার ঘটিয়েছেন। পেয়েছেন শতকের দেখা। ১১৪ রান করে তিনি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছেন। ইমরুলের স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করে যাওয়া দেখে মিরাজও নিশ্চয়ই নিজের সাবলীল এক ইনিংস খেলার ব্রত নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তবে সেটা আর হতে দেয়নি আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত।

স্পষ্টতই মিরাজের প্যাডে হিট করা বলটা লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে চলে যাওয়ার কথা। সেই নিয়ে মিরাজের রাজ্যের অস্বস্তি। তবে মোহামেডান বিতর্কের স্রোতে নিজেদের গা ভাসিয়ে দেয়নি। তাঁরা বরং খেলায় মনোযোগ রেখেছে। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনিও দুর্দান্ত এক ইনিংসের উপহার দিয়েছেন। প্রায় ১২০ স্ট্রাইকরেটে ৭১ রানের এক মারকুটে ইনিংস খেলেছেন। সে ইনিংস তিনি সাজিয়েছেন চার ছক্কা ও সাত বাউন্ডারিতে।

শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে মাহিদুল অঙ্কন ও সাকিব আল হাসানও ব্যাট চালিয়েছেন দ্রুত গতিতে ইনিংসের শেষ দিকে। যার ফলে ৩৪৯ রানের বিশাল এক লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়া গেছে সিটি ক্লাবকে। তবে ঘুরে ফিরে আলোচনার মূল বিষয়ই ছিল মিরাজের আউট। সে আউট নিয়ে ড্রেসিং রুমের বাইরে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। খেলোয়াড়দের মাঝে হাসি-ঠাট্টাও হয়েছে।

যদিও ভিডিও ফুটেজে বেশ পরিষ্কারভাবেই দেখা যাচ্ছিল বলটা পিচ করেছে লেগ স্ট্যাম্পে। সেখান থেকে বাঁক খেয়ে চলে যাওয়ার কথা লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে। অপরপ্রান্তে থাকা ইমরুল কায়েসও হাতের ইশারায় সেই ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে হতভম্ব হয়ে খানিকটা দাঁড়িয়ে ছিলেন মিরাজ। তবে বাইশ গজে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই শেষ।

কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং ইস্যু নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হওয়া নতুন কিছু নয়। সাকিবরা মাঠে এর প্রতিবাদ জানিয়ে শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন। তবুও যেন নির্বিকার চিত্তে দুর্নীতিগ্রস্ত আর অদক্ষ আম্পায়রদের কোন কূল-কিনারা খুঁজে পায় না বিসিবি। অন্তত এভাবে একটি দেশের ক্রিকেটের পথচলা মসৃণ হতে পারে না। সব বিপ্লবের শুরু তো ঘর থেকেই করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link