তাঁর আসলে অনেক নাম। ‘কর্নেল’ – তাঁর ডাকনাম। ‘বেঙ্গি’ ও ডাকে কাছের লোকেরা। ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’-এর সদস্য বলা হয় সামনের পায়ে অধিকাংশ বল খেলার জন্য।
‘লর্ড অফ লর্ডস’ খেতাব অর্জন করেন, ক্রিকেটের তীর্থস্থান লর্ডসে পরপর তিন বার টেস্ট শতকের জন্য। তিনবারই প্রতিপক্ষ যথারীতি ইংল্যান্ড। ১৯৭৯ সালে ২৯৫ বলে ১০৩, ১৩ টি চার। ১৯৮২ সালে ২৬৪ বলে ১৫৭, ২১ টি চার। আর ১৯৮৬ সালে ২১৩ বলে ১২৬, ১৬ টি চার। তার ক্ষেত্রে বলা যায়, গুলিয়ে দেওয়া নাম-সংকীর্তন।
১৬ বছরের একটু বেশি সময়ে ১১৬টি টেস্টে তার ৬৮৬৮ রানে (সর্বোচ্চ ১৬৬) ছিল ১৭ টি শতক আর ৩৫টি অর্ধশতক। আর ১৬ বছরের একটু কম সময়ে ১২৯ ওডিআই খেলে ৩৫০৮ রানে (সর্বোচ্চ ১০৫) ছিল ১ টি শতক আর ২৩টি অর্ধশতক। মুখ্যত স্লিপের বিশ্বস্ত ফিল্ডার তিনি ৭৮ ও ৩৭টি ক্যাচ নিয়েছেন যথাক্রমে টেস্ট আর ওয়ানেডেতে।
ড্রাইভ, পুল, হুকের মুকুটে সাজানো তার ব্যাটিংয়ের অবর্ণনীয় সৌন্দর্য স্কোরবোর্ডের তোয়াক্কা করত না। চোখ মেলে দেখে যেতে হত সেসব। ১৯৭৬ সালের কিংস্টন টেস্টে তিনি ভারতের হয়ে ব্যাটিং ও বোলিং, দুটোই ওপেন করেছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে কলকাতা টেস্টে খোদ সুনীল গাভাস্কারের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে তার অসমাপ্ত দ্বিতীয় উইকেট জুড়িতে রান উঠেছিল ৩৪৪।
এটা তখন ভারতীয় রেকর্ড ছিল। আবার ১৯৮৬ সালে মুম্বাই টেস্টে অসমাপ্ত ষষ্ঠ উইকেটে তার সঙ্গে রবি শাস্ত্রীর জুটিতে উঠেছিল ২৯৮ রান, যা আজও ভারতীয় রেকর্ড হিসেবেই আছে। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে ১৬টি টেস্টে আটটি শতরান ছিল তাঁর।
ঘরোয়া ক্রিকেটের মহাতারকা তিনি ২৬০ টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ৫৫ টি শতক আর ৮৭ টি অর্ধশতক সমেত ১৭৮৬৮ রান করেছেন, সর্বোচ্চ ছিল ২৮৪। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে ১৬ টি টেস্টে আটটি শতরান ছিল তাঁর।
এইসব দিয়ে দিলীপ ভেঙসরকারকে মাপতে গেলে আবার গুলিয়ে ফেলবেন, ডাকনামগুলোর মত। তারচেয়ে বরং এই ‘সিনিয়র সিটিজেন’কে সামনের পায়ে ড্রাইভকে শিল্পস্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য মনে রাখতে পারেন। কিংবা অনবদ্য ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৮৫ সালের বেনসন হেজেস সেমিফাইনাল জেতানো দিলীপ বলবন্ত ভেঙসরকার স্মরণীয় হয়ে আছেন তাঁর ব্যাটিং জাদুময়তার মতই।