চ্যাম্পিয়নের মত টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলো গুজরাট টাইটান্স। মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতে গুজরাট জানান দিয়েছে শিরোপা ধরে রাখতেই এসেছে তারা। নিয়মিত অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াকে ছাড়া এ ম্যাচে খেলতে নামে গুজরাট।
বিজয় শংকরের ব্যাটিংয়ের পর এ ম্যাচের অধিনায়ক রশিদ খানের বোলিংয়ে জয়ের পথেই ছিল তাঁরা। তবে, গুজরাটের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ অবিশ্বাস্য ভাবে বের করে আনেন কলকাতার রিংকু সিং। রিংকুর অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে তিন উইকেটের জয় পায় কলকাতা।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমান গিল। সাহাকে ফিরিয়ে পঞ্চম ওভারে কলকাতাকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সুনিল নারিন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৭ রান যোগ করেন শুভমান গিল ও সাই সুদর্শন। গুজরাটের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে ৩১ বলে ৩৯ রান করে নারিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন শুবমান গিল।
এরপর অভিনব মনোহর দ্রুত ফিরে গেলেও পাঁচ নম্বরে নেমে কেকেআর বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার বিজয় শংকর। মাত্র ২৪ বলে পাঁচ ছক্কা ও চার চারে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন বিজয়।
বিজয়ের ২৬২.৫০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসেই মূলত গতি পায় গুজরাটের ইনিংস। আরেক প্রান্তে সাই সুদর্শনও যোগ্য সঙ্গ দেন বিজয়কে ৩৮ বলে বলে দুটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৫৩ রান করেন সুদর্শন। এই দুই ভারতীয় ব্যাটারের ব্যাটিং ঝড়ে চার উইকেটে ২০৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কলকাতার পক্ষে ৩৩ রানে তিন উইকেট নেন নারাইন।
২০৫ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব বেশি ভালো হয়নি কলকাতার। প্রথম দুই ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করা রহমানুল্লাহ গুরবাজ এদিন অবশ্য দলকে খুব বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে রহমানুল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে গুজরাটকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মোহাম্মদ শামি। এরপর আরেক ওপেনার নারায়ণ জগদিশানও দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে কলকাতা।
সেখান থেকেই ভেন্কাটেশ আইয়ারকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান অধিনায়ক নিতীশ রানা। ১০০ রানের পার্টনারশিপে অবশ্য নায়কের ভূমিকায় ছিলেন আইয়ার। গুজরাটের বোলারদের শাসন করে ৪০ বলে ৮৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন আইয়ার। পাঁচ ছক্কা ও আট চারে খেলা ইনিংসে কলকাতাকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন আইয়ার।
আরকে প্রান্তে অধিনায়ক রানাও যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন রানাকে। ২৯ বলে তিন ছক্কা ও চার চারে ৪৫ রান করে আলজারি জোসেফের শিকার হন রানা। রানার আউটের পর আইয়ারও ফিরে গেলে আবারো হোঁচট খায় কলকাতা। পরের ওভারেই এই টুর্নামেন্টে জ্বলে উঠতে না পারা আন্দ্রে রাসেল রশিদ খানের শিকার হলে কার্যত জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় কেকেআরের। এরপর গত ম্যাচের নায়ক শার্দুল ঠাকুরকেও আউট করেন আফগান এই লেগস্পিনার।
তবে ম্যাচের রোমাঞ্চ তখনো বাকি। ম্যাচ যখন কলকাতার হাত থেকে বেরিয়েই গেছে তখনই ধ্বংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাঁড়ান রিঙ্কু সিং। শেষদিকে যেন ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন গুজরাট বোলারদের ওপর। ছয় ছক্কার ইনিংসে ২১ বলে ৪৮ রান করে অবিশ্বাস্য ভাবে কলকাতাকে ম্যাচ জেতান রিংকু।
তিন উইকেটের অবিশ্বাস্য এই ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় জয় পেলো কলকাতা। অন্যদিকে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম হারের স্বাদ পেলো গুজরাট টাইটান্স।