দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই প্রথমবার আইপিএল খেলতে গিয়েছিলেন লিটন কুমার দাস। ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ চার টি-টোয়েন্টিতে দুটি সত্তুরোর্ধ ইনিংস হতে পারতো সেঞ্চুরিও। কিন্তু লিটনের এমন দুর্দান্ত ফর্ম যেন খুব একটা বিবেচনায় নিচ্ছ না কলকাতা নাইট রাইডার্স। কলকাতা শিবিরে যোগ দেবার পর এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচে একাদশের বাইরেই থাকতে হলো লিটনকে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচেও লিটনের ওপর ভরসা করতে পারেনি কেকেআর।
কলকাতা শিবিরে যোগ দেবার পর বেশ দারুণভাবেই লিটনকে বরণ করে নিয়েছিলো নাইট রাইডার্স পরিবার। প্রথমবার আইপিএল খেলতে যাওয়া লিটনও ছিলেন দারুণ উচ্ছ্বসিত। সাকিব আল হাসান এবারের আইপিএল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার কলকাতাকে ঘিরে বাংলাদেশী দর্শকদের যা আগ্রহ তার সবই ছিলো লিটনকে কেন্দ্র করে। কিন্তু আইপিএলে বাংলাদেশের আরেক প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে দু’টি ম্যাচ খেলে ফেললেও আইপিএলে এখনো অভিষেকের অপেক্ষায় লিটন।
লিটনের জন্য কলকাতার একাদশে জায়গা পাওয়াটা বেশ কঠিনই বলতে হবে। অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় প্রথম থেকে দলের সাথে থাকতে পারেননি লিটন। প্রায় একই ভূমিকায় খেলা আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার রহমানুল্লাহ গুরবাজ সুযোগ পেয়েছেন প্রথম থেকেই। প্রথম দুটো ম্যাচেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফেলেছেন গুরবাজ। বিদেশী কোটা ও দলে একই ভূমিকা থাকায় লিটনকে একাদশে খেলতে হলে খেলতে হবে গুরবাজের জায়গায়।
তার ওপর সাকিব আল হাসান নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় তার বদলি হিসেবে কলকাতা দলে নিয়েছে ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়কে। ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে জেসন রয়ও আবির্ভূত হয়েছেন লিটনের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। এদিকে প্রথম দুই ম্যাচে রান পেলেও সবশেষ দুই ম্যাচে রান না পাওয়ায় অনেকেই ধরে নিচ্ছিলেন এ ম্যাচে একাদশ থেকে বাদ পড়ছেন গুরবাজ।
গুরবাজ বাদ পড়লে একাদশে ঢোকার সুযোগ ছিলো রয় ও লিটনের সামনে। যেহেতু লিটনকে নিলাম থেকে দলে নিয়েছে কলকাতা আর লিটন প্রথম থেকেই আছেন কলকাতার পরিকল্পনায় তাই অনেকেই ধরে নিচ্ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচেই আইপিএলে অভিষেক হতে পারে লিটনের।
তবে আরো একবার গুরবাজের ওপরই ভরসা রাখতে চাইলো কলকাতা। সবশেষ ম্যাচে হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে খেলা একাদশ নিয়েই মুম্বাইয়ের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে কেকেআর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটনের ফর্মের ওপর যেন ভরসা করতে পারছে না কলকাতা। যদিও, গুরবাজ টানা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েই চলেছেন।
আসলে এখানে মূল ব্যাপার হল, লিটন কলকাতা শিবিরে গেছেন হাতে খুবই কম সময় নিয়ে। ফলে, নিজেদের পরিকল্পনায় স্থীর থেকে গুরবাজের ওপরই ভরসা রাখতে চাইছে কেকেআর। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কলকাতা দলের সাথে থাকা লিটন এবার আইপিএলে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন কিনা সেটিই বড় প্রশ্ন এখন। ২০১২ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের হয়ে আইপিএল খেলতে যাওয়া তামিমের পরিণতি লিটনের হলে বেশ হতাশই হবেন বাংলাদেশের সমর্থকরা।