গত বছরটা মোটেই ভালো কাটেনি ভারতীয় উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি মাঠের বাইরেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে এবারের মৌসুমে আইপিএলে ছন্দে ফিরেছেন, লোকেশ রাহুলের ইনজুরির সুবাদে তাই সাহার জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী।
মূলত রাহুল দ্রাবিড় কোচ হয়ে আসার পর থেকেই জাতীয় দলে পতনের শুরু ঋদ্ধিমান সাহার। রাহুল সাফ জানিয়ে দেন ৩৭ বছর বয়সী সাহার চাইতে বরং তরুণ কারো উপর ভরসা রাখতেই তিনি আগ্রহী। সে কারণেই কিনা ঋষাভ পান্তের ইনজুরির পরও দলে ফেরাননি সাহাকে। বরং ভারতের কিপিং গ্লাভসটা তুলে দিয়েছেন শ্রীকার ভরতের হাতে।
কিন্তু আইপিএলে লোকেশ রাহুলের চোট এবং সাহার ব্যাটে রানের ছোঁয়া যেন বদলে দিয়েছে সমস্ত হিসেবনিকেশ। এমনিতেই আইপিএল পেরোলেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। গতবার ফাইনালের হারে ভুলে শিরোপা জিততে মরিয়া রোহিত শর্মার দল। সেই কারণেই কিনা অভিজ্ঞ সাহাকে দলে ফেরানোর দাবি জোরালো হচ্ছে ক্রমশই।
এবারে ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীও কথা বলেছেন সাহাকে জাতীয় দলে ফেরানোর ব্যাপারে। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় উইকেট কিপার হিসেবে থাকা লোকেশ রাহুলের ইনজুরির পর অনায়াসে স্কোয়াডে জায়গা পাবার যোগ্যতা রাখেন সাহা। কেননা বর্তমান সময়ে মাঠে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, কনকাশন হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্কোয়াডে দুজন ভালো মানের কিপার থাকাটা একপ্রকার বাধ্যতামূলক। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালের মতো ম্যাচে আপনি নিজের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকেই খেলাতে চাইবেন। এছাড়া এবারের আইপিএলে ব্যাট হাতেও দারুণ ফর্মে আছে সে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছরের বিব্রতকর সেই ঘটনা সত্ত্বেও সাহাকে জাতীয় দলে ফেরানো যেতে পারে। ঋষাভ পান্তের ইনজুরির পরই তাঁকে ফেরানো যেত। সে বিশ্বের সেরা উইকেটকিপারদের একজন। সৈয়দ কিরমানি কিংবা বাকিদের সাথে ভারতের ইতিহাসের সেরা কিপারদের তালিকায় অনায়াসেই ঢুকে যাবেন ঋদ্ধিমান সাহা।’
এছাড়া শ্রীলংকার বিপক্ষে এক ম্যাচে সাহার দুর্দান্ত কিপিংয়ের কথাও স্মরণ করেন এই তারকা। তিনি বলেন,‘শ্রীলংকায় একবার বল সাপের মতো বাঁক খাচ্ছিল। বল নিচু হয়ে যাচ্ছিল, টার্ন নিচ্ছিল। সেই পিচেও রবিচন্দ্রন অশ্বিন কিংবা রবীন্দ্র জাদেজার বলগুলো অনায়াসেই লুফে নিচ্ছিল সে। উইকেট কিপার হিসেবে সে অসাধারণ।’
সাদা বলের ক্রিকেটে ক্যারিয়ার না এগোলেও এক সময় লাল বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের পর উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়ানোর দায়িত্ব বর্তেছিল তাঁর কাঁধেই।
জাতীয় দলের হয়ে ৪০ টেস্টে পাঁচ অর্ধ-শতক এবং তিন শতকে ১৩৫৩ রান করেন এই তারকা। মূলত নিচের দিকে ব্যাট করার কারণে বড় ইনিংস খেলার তেমন সুযোগ পাননি এই তারকা। এবারের আইপিএলেও ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে আছেন এই তারকা। প্রায় প্রতি ম্যাচেই গুজরাট টাইটান্সকে এনে দিচ্ছেন ঝড়ো সূচনা।
পারফরম্যান্স নয়, বরং ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁকে বাদ দেয়া হয়েছে এমনটাই দাবি ছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। তবে ঋষাভ পান্ত এবং লোকেশ রাহুলের ইনজুরির পর আরো একবার এই পুরনো সেনানীকে জাতীয় দলে ফেরানো হলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না।