রশিদের স্বাদ কি আর লিখনে মিটবে!

২৬ জন ক্রিকেটারের পুল করা হয়েছে। সেখান থেকেই পরবর্তী সিরিজগুলোর জন্যে খেলোয়াড় বাছাই করা হবে। এমনকি এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলও সেই পুল থেকেই খুঁজে নেওয়া হবে। তাইতো তো জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের দম ফেলার সময় নেই।

প্রতিনিয়ত গ্রীষ্মের তীব্র তাপ উপেক্ষা করে অনুশীলনে মনোযোগ ক্রিকেটারদের। এদের মধ্যেই দেখা মিলল এক পুরনো মখের। মানুষটা জুবায়ের হোসেন লিখন। বাংলাদেশ ক্রিকেটে লেগ স্পিনের মশাল বাহক হয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি।

তবে টিকতে পারেননি বেশিদিন। হারিয়ে গেছেন বিস্তৃতির অতলে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। আস্থার প্রতিদান দিতে হয়েছেন ব্যর্থ। ক্রমশ দূরে সরে গিয়েছেন জাতীয় দলের রাডার থেকে।

সেই লিখনকে আবারও ডেকে পাঠানো হয়েছে। বল হাতে তিনি বাংলাদেশি ব্যাটারদের প্রস্তুত করছেন আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজের জন্যে। তবে নেট অনুশীলনে খুব একটা ভীতির সৃষ্টি করতে পারেননি তিনি। ব্যাটাররা অনায়াসে তার বল খেলে গেছে পুরোটা সময়জুড়ে। বড্ড বেশি সাদামাটা ধাচের বোলিং তাঁর।

এদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাদা বলের ক্রিকেটারদের আধিপত্য দেখা গেছে ইনডোর লাগোয়া মাঠে। মুস্তাফিজ, হাসানরা বল করেছেন। ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন মেহেদী মিরাজ, শামিম হোসেন পাটোয়ারী, নাঈম শেখ, আফিফরা। সেই ব্যাটারদের বিপক্ষেই বেশ লম্বা সময় ধরেই বল করেছেন জুবায়ের হোসেন লিখন।

ব্যাটারদের পরাস্ত করতে পারেননি বললেই চলে। অন্যদিকে মিরপুর একাডেমি মাঠে স্পিনারদের নিয়ে স্পিন ভেরিয়েশন ক্যাম্প করছিলেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। সেখানে বাংলাদেশ দলের আশেপাশে থাকা লেগ স্পিনার রিশাদ ও বিপ্লবদের দেখা গেছে নতুন কৌশল রপ্ত করতে।

সেই দলেও ঠাই হয়নি জুবায়ের হোসেন লিখনের। কারণটা স্পষ্ট, তার বয়স ও সাদামাটা ধাচের বোলিং। ওদিকে বাংলাদেশের এই প্রস্তুতি পুরোটাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজকে সামনে রেখে। এই সময়ে আফগানদের বোলিং আক্রমণ অন্যতম সেরা। বিশেষ করে তাদের স্পিন ডিপার্টমেন্ট। বিশেষ করে রশিদ খান কি করতে পারেন – সেটা তো কারোই অজানা নয়।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনালের মঞ্চে তরুণ নূর আহমেদ ভেলকি দেখিয়েছেন বল হাতে। এমনকি পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই তিনি বল হাতে ছিলেন দূর্দান্ত। এছাড়াও রশিদ খানের মত অভিজ্ঞ ও দূর্ধর্ষ লেগ স্পিনার রয়েছেন আফগানদের শিবিরে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে স্রেফ রশিদ খানের পরিসংখ্যান টেনে আনলেই বাংলাদেশি ব্যাটারদের দূর্বলতা বেড়িয়ে আসবে। সব ফরম্যাট মিলিয়ে রশিদ খান বাংলাদেশের ৪৩টি উইকেট নিজের করে নিয়েছেন। খেলেছেন স্রেফ ১৮ ম্যাচ। যার একটি টেস্ট। সেই টেস্টেও ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন রশিদ, দুই ইনিংসে ১১ উইকেট শিকার করে।

মানসম্মত লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে এভাবেই খাবি খেয়েছ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সেই দূর্বলতা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজন দেশের ক্রিকেটে বিশ্বমানের লেগ স্পিনার। সে অভাবটা কোন ভাবেই যেন পূরণ হবার নয়। তাইতো বাধ্য হয়ে হারিয়ে যাওয়া লিখনদের খুঁজে আনতে হয় জাতীয় দলের স্বার্থে।

লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দূর্বলতা নতুন না। অন্যদিকে জুবায়ের লিখন এখন আর জাতীয় দলের জন্যে বিবেচিত হন না। জাতীয় দল থেকে ছিটকে যাওয়া একজন লেগ স্পিনারের বিপক্ষে খেলে ঠিকঠাক প্রস্তুতিটা হচ্ছে কি-না, সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link