হাসান-ফিজ, ডেথ বোলিংয়ের সোনালি জুটি

বিশ্বকাপের চিন্তা যেন কোন ভাবেই মাথা থেকে এড়ানো সম্ভব নয়। ওয়ানডে বিশ্বকাপ বলেই বোধহয় বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে এত বেশি আলোচনা। সবাই নিজেদের পছন্দসই একাদশ তৈরিতে ব্যস্ত। নির্বাচকরাও সে বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত। তবে বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিটের ঠিক কারা কারা যাচ্ছেন বিশ্বকাপে, সেটা প্রায় সুনিশ্চিত।

বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদের বিশ্বকাপগামী দলে থাকা এক প্রকার অবধারিত। পঞ্চম পেসার হিসেবে শরিফুল খানিকটা দ্বিধায় রয়েছেন এখনও। তিনিও এক চিন্তার কারণ টাইগার নির্বাচকদের জন্যে।

তবে এসবের মাঝে ডেথ ওভারে বাংলাদেশের বোলিং জুটি কিন্তু চাইলেই ঠিক করে ফেলা যায়। সেখানে যুগলবন্দী হতে পারে মুস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদের। ঠিক সে লক্ষ্যেই যেন জুটি বেঁধে বোলিং করে যাচ্ছেন দু’জন। নেট অনুশীলনে একই সাথে তাদেরকে বল হাতে দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

মুস্তাফিজুর রহমানের ফর্ম একটা বিশাল বড় চিন্তার কারণ। তবে ফর্মে থাকা মুস্তাফিজুর রহমান একা হাতে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এমন সব উদাহরণ তো আর কম নেই তার ক্যারিয়ার জুড়ে। ইকোনমিকাল মুস্তাফিজের সুনাম একটা সময় সর্বত্র ছিল।

উইকেট শিকারে খানিকটা হয়ত আগ্রাসন কমেছে তার। কিন্তু রান আটকে রাখতেও এখনও সমানভাবেই পারদর্শী। মাঝে মধ্যে দেদারছে রান বিলিয়েছেন। কিন্তু নিজের সেই সত্ত্বা থেকে বেড়িয়ে আসার প্রচেষ্টায় ঘাম ঝড়াচ্ছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

অন্যদিকে হাসান মাহমুদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের বিস্তৃতি খুব একটা নয়। তবে ইতোমধ্যে তিনি তার সামর্থ্যের প্রমাণ রাখতে শুরু করেছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তো রীতিমত নিজের স্নায়ু পরীক্ষায় লেটার নম্বর পেয়ে পাস করেছেন হাসান।

শেষ ওভারে আইরিশদের জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল কেবল ১০ রান। বর্তমান ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে বেশ মামুলি এক সংখ্যা। সেই ক্রাঞ্চ মুহূর্তেও দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন হাসান। ভেরিয়েশনে কাবু করেছিলেন আইরিশ ব্যাটারদের। দুই উইকেট শিকার করে খরচ করেছিলেন মাত্র ৪ রান। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছিল ৫ রানে।

ইনিংসের শেষের দিকে বোলারদের ভেরিয়েশনই পার্থক্য গড়ে দেয়। সেদিক বিবেচনায় হাসান ও মুস্তাফিজ বেশ ধূর্ত। ব্যাটারদের বোকা বানাতে তারা দুইজনই সমান পটু। অন্যদিকে স্নায়ুচাপ সামলে নেওয়ার দুর্দান্ত সক্ষমতাও রয়েছে দু’জনের। মুস্তাফিজ তবুও অভিজ্ঞতা থেকে অর্জন করেছেন। কিন্তু হাসানের হিমশীতল মানসিকতা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

মুস্তাফিজের স্লোয়ার কাটার, আর হাসান মাহমুদের ক্ষুরধার ইয়োর্কার। এই দুইয়ের মিশেলে প্রতিপক্ষের শেষ দিকের ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার উপক্রম হবে নিশ্চয়ই। এর আগে তাসকিন আহমেদ তো থাকছেনই নিজের বিদ্যুৎ গতির বল আর পিনপয়েন্ট বাউন্সার নিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতে। সেটা তিনি অবশ্য করবেন নতুন বলে।

পুরনো বলে ভেল্কি দেখানোর পুরো দায়িত্বটাই চলে যেতে পারে মুস্তাফিজ ও হাসানের কাঁধে। বাড়তি পাওয়া, নতুন বলেও হাসানের সমান পারদর্শীতা। তবে ইনিংসের শেষভাবে প্রতিপক্ষের লাগাম টেনে নিতে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলে দ্বিতীয় কার্য্যকর জুটি খুঁজে পাওয়া দায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link