সাকিব নাকি লিটন – কে ধরবেন হাল?

ফিটনেস, পারফরম্যান্স, মানসিকতা – সবদিক থেকে পিছিয়ে থাকা তামিম ইকবাল আরো পিছিয়ে গিয়েছিলেন চারদিক থেকে ধেয়ে আসা সমালোচনার স্রোতে। শেষমেশ তাই বেছে নিয়েছেন সরে যাওয়ার পথ, অশ্রুসিক্ত নয়নে ঘোষণা দিয়েছেন অবসরের।

গত প্রায় পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের ওপেনার হিসেবে খেলেছেন তামিম ইকবাল। উদ্বোধন করেছেন ইনিংস, সামলেছেন নতুন বল, সব মিলিয়ে দেশের অন্যতম সেরা এক ব্যাটারে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। তাই তাঁর বিদায়ে নিশ্চিতভাবেই ওপেনিং পজিশনে শূণ্যতা সৃষ্টি হবে বাংলাদেশ দলে।

তবে তামিম ইকবাল শুধু নির্ভরযোগ্য ওপেনারই নন, ওয়ানডে দলের অধিনায়কও বটে। তাই তাঁর অবসরের পর নতুন অধিনায়ক কে হবেন সেই সিদ্ধান্তও নিতে হবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। বিশেষ করে চলতি বছরে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপকে সামনে রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রুত।

আপাতদৃষ্টিতে সাকিব আল হাসান নিশ্চিতভাবেই সেরা পছন্দ নতুন অধিনায়ক হিসেবে। অভিজ্ঞতা, দল পরিচালনার ক্ষমতা, কিংবা অধিনায়ক হিসেবে পারফরম্যান্স সবকিছুতেই সাকিব মি.পারফেক্ট। তবে দলের এমন বিশৃঙ্খল মুহুর্তে তিনি দায়িত্ব নেবেন কি না সেটা একটি বড় প্রশ্ন।

তামিম ইকবালের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়েও নানামুখী গুঞ্জন রয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। তাই ড্যাশিং ওপেনারের পরপরই সাকিব ক্যাপ্টেন হলে বাড়তে পারে অপপ্রচার। তাই হয়তো নাম্বার ওশান অলরাউন্ডার খুব একটা আগ্রহ নাও দেখাতে পারেন।

সাম্প্রতিক সময়ে তামিম ইকবালের ডেপুটি হিসেবে কাজ করা লিটন দাসও অধিনায়কত্ব গ্রহণের দৌড়ে এগিয়ে আছেন। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে তাঁর অধিনায়কত্ব বেশ নজর কাড়া ছিল।

এছাড়া সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস করেছিলেন লিটন – তাতেই বোঝা যায় অধিনায়ক হিসেবে এই ডান-হাতির উপর ভরসা আছে টিম বাংলাদেশের।

অবশ্য এখন পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদে অধিনায়কত্ব না করা লিটন দাস ঘরোয়াতেও অধিনায়ক হিসেবে পরিচিত নয়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলেন তিনি। এছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নেতৃত্বাধীনের আবাহনী লিমিটেডের হয়ে মাঠে নামেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

তাই অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাসকে এখনো ঠিক অভিজ্ঞ বলা যায় না। আবার অধিনায়ক হিসেবে লিটনের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক নয়। তাই বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে তাঁর কাঁধে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হবে কি না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।

সব মিলিয়ে তাই বেশ জটিল পরিস্থিতি। এমনিতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে হেরে ব্যাকফুটে টিম টাইগার্স। তার উপর তামিমের অবসর বাড়তি দুশ্চিন্তা বয়ে এনেছে। যদিও ক্রিকেট বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা কোচসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার চাপে পড়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টলার খান সাহেব।

স্বাভাবিকভাবেই মনে হতে পারে, আগেই বিকল্প অধিনায়ক ভেবে রেখেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এমন সন্দেহের সত্যতা জানা না গেলেও একেবারে অমূলক নয়।

দুইদিন পরেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ; তড়িঘড়ি করে লিটন দাসের হাতে সম্ভবত তুলে দেয়া হবে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড। তবে সেটা সাময়িক নাকি দীর্ঘ মেয়াদে সেই উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে দেশের ভক্ত-সমর্থকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link