দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটে হয়েছে উথাল-পাতাল। তামিমের অবসর কাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশ। শেষমেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পড়ে। তবে এই পুরো কাণ্ড দুই দিন ধরে নিশ্চয়ই মানসিক পীড়া দিয়েছে। মেহেদী মিরাজ অবশ্য তা অস্বীকার করলেন না।
তিনি বলেন, ‘সবাই একটু শকড হয়ে গিয়েছিল। কারণ এভাবে তামিম ভাই অবসরে গিয়েছিল। কেউ আশা করেনি। একটু খারাপ লাগছিল প্রতিটা খেলোয়াড়ের ভিতরেই। কিন্তু এরপর আমরা যখন অনুশীলন করেছি, পরিকল্পনা করেছি, তখন তো খেলার জন্যে তৈরি হয়ে যেতে হতোই সবাইকেই।’
দ্বিতীয় ওয়ানডেটা বাংলাদেশ হেরেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড ব্যবধানে। ১৪২ রানের পরাজয়টা রশিদ খানদের বিপক্ষে প্রথম সর্বোচ্চ রান ব্যবধানের হার। এই ম্যাচে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার শুরুটা হয়, ইনিংসের প্রথম থেকেই। বল হাতে এদিন বাংলাদেশ ছিল ছন্নছাড়া।
ঠিক সেখানেই পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। গুরবাজ-ইব্রাহিমের ২৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি বাংলাদেশের জয়ের আশা ক্ষীণ করে দিয়েছে। তাতে দায়ভার বাংলাদেশের বোলারদের উপরও বর্তায়। মেহেদী হাসান মিরাজ ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে ঠিক তেমন কথাই বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০-৪০টা রান বেশি দিয়ে ফেলেছি। ২৮০-৯০ এর ভেতরে থাকলে, হয়ত খেলাটা অন্যরকম হয়ে যেত। যেহেতু ওরা ৩৩০ করছে এটা একটু বেশি ছিল ওদের বোলিং অ্যাটাকের জন্যে। কারণ ওদের বোলিং তো অবশ্যই ভাল। প্রথমদিকে আরেকটু নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারলে ভাল হতো।’
বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিং প্রশংসিত হয়েছে অধিকাংশ সময়ে। তবে এদিন বাংলাদেশের বোলাররা কেমন একটা অগোছালো। মোট ৩৩টি অতিরিক্ত রান দিয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। মিরাজের চোখে সেদিকটাও প্রভাবিত করেছে বাংলাদেশের বড় হারে।
মিরাজ বলেন, ‘ওরা একটু বেশি রান করে ফেলেছে। হয়ত আমরা প্রথমদিকে ভালমত বল করতে পারিনি। গুছিয়ে বল করতে পারিনি। ওরা আক্রমণ করেছে, ওরা সফল হয়েছে।’
তাছাড়া এই উইকেটের জন্যে ৩৩১ রানের টার্গেট সত্যি অনেক বেশি ছিল বলে মিরাজের মত, ‘৩৩০ এই উইকেটের জন্যে অবশ্যই অনেক বেশি রান। যদি আমাদের টপ অর্ডাররা ভাল খেলত। তাহলে খেলাটা ডিপে নিয়ে যেতে পারলে আশা জাগত ম্যাচ জেতার জন্য।’
তবে এই হারে বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক সব অর্জন ফিকে হয়ে যায় না। একটি সিরিজ হার, বাংলাদেশ দলকে খারাপ দলে পরিণত করে না। বরং এই হার থেকে সেখার অনেক কিছু আছে বলেই মনে করেন মিরাজ। তিনি দলের প্রতিটা খেলোয়াড় যে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে নিজেদের ভুল শুধরে নেওয়ার, তাতেই সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, ‘আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম, সেখানে বলেছিলেন। যদি দুর্ভাগ্যবশত আমাদের এই সিরিজটি খারাপ হয়ে যায়, তার মানে আমাদের দল খারাপ হয়ে গেছে, এরকম কিন্তু না। আমাদের রেকর্ড কিন্তু অনেক ভাল। তিন চার বছর আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। একটা-দুইটা সিরিজ খারাপ হতেই পারে। সবমিলিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস ভাল আছে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’