ভারত এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীও বিশ্বের ভূ-রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন পর্যন্ত চারবার এই দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়েছিল। শুধু সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে নয়, বরং সব দিক দিয়েই একে অপরের চেয়ে সেরা হতে চায় প্রতিবেশী এই দুই দেশ।
একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এই যে মানসিকতা – এটিই ক্রিকেটের মাঠে পাক-ভারত লড়াইকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। তবে কখনো কখনো ক্রিকেটারদের সাথে ঘটেছে অক্রিকেটীয় ঘটনা।
তেমনি এক ঘটনা উঠে এসেছে পাক কিংবদন্তি শহীদ আফ্রিদির। ব্যাঙ্গালোর টেস্টে জিতে ফেরার পর পাকিস্তান দলের বাসে পাথর ছুঁড়ে মেরেছে ভারতীয়রা – এমন অভিযোগ করেছেন তিনি। দুই দলের মধ্যকার বৈরী পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে এমন অভিযোগে।
এক সময়ের সতীর্থ আবদুর রাজ্জাককে সঙ্গে নিয়ে শহীদ আফ্রিদি হাজির হয়েছিলেন এক ক্রিকেট আড্ডায়। সেখানেই এসব কথা প্রকাশ করেছেন তিনি। এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘রাজ্জাক, তোমার মনে আছে কি না। ব্যাঙ্গালোরেতে টেস্ট ম্যাচ জিতে ফেরার পর আমাদের গাড়িতে পাথর মারা হয়েছিল।’
এছাড়া ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের যে পরিস্থিতি সেটাও তুলে ধরেছেন শহীদ আফ্রিদি। তিনি বলেন, ‘সেখানে চাপ সব সময় আছে এবং আপনার সেই চাপ উপভোগ করা উচিত। খেলোয়াড়রা বলছে পাকিস্তান যেন ভারতে না যায়। আমি এর সম্পূর্ণ বিপক্ষে, আমি মনে করি আমাদের সেখানে গিয়ে ম্যাচ জেতা উচিত।’
ভারতের মাটিতে ছক্কা এবং চার মারলেও, দর্শকদের কাছ থেকে কোন প্রশংসা পান না বলে মনে করেন শহীদ আফ্রিদি। তবে আফ্রিদি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এই ধরনের ঘটনা পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ভারতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আরো অনুপ্রাণিত করবে। চাপের মুহুর্তে জয়ের জন্য লড়াই করার মানসিকতা থাকার উপর জোর দিয়েছেন এই ডান-হাতি।
আসন্ন এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপকে ঘিরে বর্তমানে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। এশিয়া কাপ পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভারতের আপত্তির কারণে শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করতে হয়েছে মহাদেশীয় টুর্নামেন্টটির বড় একটি একাংশ। ফলে ভারতের অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অংশ নেয়া নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে পাকিস্তানে।
অবশ্য অতীতের নানান ঘটনা সত্ত্বেও পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। একই সাথে ভারতকে পাকিস্তানের প্রতি খেলোয়াড়সুলভ আচরণ দেখানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ যদিও চূড়ান্ত, তবে ঝুলে আছে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত। ২০১৬ সালের পর আবারো ভারতের মাটিতে খেলবে পাকিস্তান নাকি চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলবে তাঁরা – এখন সেটাই দেখার বিষয়।