প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা এ দলের বিপক্ষে পরাজয়, ইমার্জিং এশিয়া কাপে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশ এ দলকে দারুণ কিছু করে দেখাতে হত। সেই কাজটাই করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমান এ দলকে উড়িয়ে দিয়েছে তাঁরা। ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।
দুর্দান্ত এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা এই তরুণ একাই ধ্বস নামিয়েছেন ওমান লাইনআপে।
মাত্র ১৮ রানের বিনিময়ে শিকার করেছেন চার উইকেট। এই পেসারের বিরুদ্ধে ওমানের মিডল অর্ডার এবং লোয়ার মিডল অর্ডারের কাছে কোন জবাবই ছিল না; গতি, বাউন্সে রীতিমত নাস্তানাবুদ করেছেন তাদের।
এর আগে ম্যাচে একাদশে ছিলেন না তানজিম হাসান সাকিব; বাংলাদেশ এ দলের পেসাররাও ছিল কিছুটা ছন্নছাড়া। বিশেষ করে মিডল এবং ডেথ ওভারে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলার মত কিছু করতে পারেননি রিপন মন্ডলরা। মাঠের বাইরে থেকে দলের হার দেখে মনে মনে হয়তো ভাল করার পরিকল্পনা করছিলেন তানজিম, আর সুযোগ পেয়েই সেই পরিকল্পনা প্রয়োগ করেছেন তিনি।
তানজিম সাকিব যখন খেলছেন এ দলের এশিয়া কাপ, তাঁরই এক সময় এর সতীর্থ তাওহীদ হৃদয়, শামিম হোসেন, শরিফুল ইসলামরা তখন মাতাচ্ছেন জাতীয় দলের জার্সিতে। আগের দিনই এই ত্রয়ীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মনে রাখার মত জয় পেয়েছে টিম বাংলাদেশ।
বন্ধুদের এমন ভাল করা দেখে সৃষ্ট জেদ থেকেই হয়তো নিজের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছেন সাকিব। যদিও শক্তিতে ওমান এ দল তুলনামূলক পিছিয়ে আছে, তবে এই পেসারের পারফরম্যান্স ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
বর্তমান বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের পেসাররা বিশ্বমানের। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানদের নেতৃত্বে দারুণ ভাবে ম্যাচে অবদান রাখছে লাল-সবুজের পেস ইউনিট। মূল একাদশ তো বটেই, স্কোয়াডে যারা থাকছেন তাঁদের সবারই রয়েছে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়ার ক্ষমতা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে পেস বিপ্লব।
শুধু জাতীয় দল নয়, বিপ্লবের বাতাস যে দেশের পাইপলাইনেও বয়েছে সেটা তানজিম হাসান সাকিবদের দিকে তাকালে বোঝা যায়। আগ্রাসন, নিয়ন্ত্রিত বোলিং কিংবা ব্যাটারকে কাঁপিয়ে দেয়া বাউন্সার – একজন পেসারের ভাল করার জন্য যা যা দরকার সবই আছে এই তরুণের মাঝে। উপরি হিসেবে পাওয়া যায় সাকিবের ব্যাটিং; লোয়ার অর্ডারে দলের জন্য ছোটখাটো অবদান রাখতে পারেন তিনি।
আগামীর বাংলাদেশে যে কয়েকজন পেসার রাজত্ব করবেন তাদের একজন ভাবা হয় তানজিম হাসান সাকিবকে। তিনি নিজেও সেটা হয়তো বিশ্বাস করেন, সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন নিজেকে নিয়ে। অন্তত ইমার্জিং এশিয়া কাপে তাঁর এমন পারফরম্যান্স সেটারই প্রমাণ দিয়েছে, সেই সাথে উপরে উঠেছে প্রত্যাশার পারদও।