চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী দেশের লড়াই। ভারত-পাকিস্তান মহারণ মানেই যেন মাঠ এবং মাঠের বাইরের মুখরোচক গল্পের সমাহার। এবার এমনই এক গল্পের ফাঁদ পেতেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার নাভিদ উল হাসান। সম্প্রতি এক পডকাস্টে ১৮ বছর আগে ফিরে গিয়েছিলেন এ পেসার।
সময়টা ২০০৫ এর শুরুর দিকের। সেবার ৬ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ভারত সফরে গিয়েছিল পাকিস্তান বিরেন্দ্র শেবাগ তখন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই সিরিজের আগে টেস্ট সিরিজে করেছিলেন সর্বোচ্চ রান। টেস্ট ক্রিকেটের সেই ফর্ম টেনে এনেছিলেন ওয়ানডে সিরিজেও।
তো ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইনিংসের শুরুতে রীতিমত ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের কোনো বোলারঅ তাঁর সামনে সামান্য প্রতিরোধই গড়তে পারছিল না।
ঠিক ঐ সময়ে পাকিস্তানের তৎকালীন অধিনায়ক ইনজামাম উল হককে স্বস্তির যোগান দেন নাভিদ উল হাসান। বোলিং প্রান্তে এসেই তুলে নেন শেবাগের উইকেট।
১৮ বছর আগের এই গল্পই মূলত পডকাস্টে শুনিয়েছেন এ পেসার। তিনি বলেন, ‘শেবাগের সামনে সেদিন কোনো বোলারই দাঁড়াতে পারছিল না। তবে ওর দুর্বলতা আমি জানতাম। আমি ইনজি ভাইকে পরের ওভারেই আমাকে বোলিংয়ে আনতে বলি। এরপর একটা শর্টার লেন্থে বল করি। ও তখন ৮৫ রানে ব্যাট করছে। প্রথম বলটায় ও পরাস্ত হলে, ওকে আমি কিছুটা স্লেজিং করেছিলাম।’
‘বলেছিলাম, এই বল খেলতে পারো না? জাতীয় দলে এলে কিভাবে? আমার এমন স্লেজিংয়ে শেবাগও কিছুটা মেজাজ হারিয়েছিল। আমি মূলত এটার অপেক্ষাতেই ছিলাম। এর পরের ডেলিভারিটি করার আগে ইনজিকে বলেই ছিলাম, এই বলে ও আউট হবে। এবং সবাইকে বিস্ময়ে ভাসিয়ে ঐ বলেই আমি উইকেট তুলে নিই। ঐ উইকেটটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। আমরা ম্যাচটা জিতেছিলাম সেদিন।’, যোগ করেন তিনি।
ভারতের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বিরেন্দ্র শেবাগই একমাত্র ব্যাটার যার দুটি ত্রিপল সেঞ্চুরি রয়েছে। তারপরও নাভিদের কাছে শেবাগ নাকি গড়পড়তা এক ব্যাটার। তাঁকেই নাকি আউট করা ছিল সবচেয়ে সোজা ব্যাপার!
এ নিয়ে নাভিদ বলেন, ‘ভারতীয় দলে শেবাগকে আউট করাই ছিল সবচেয়ে সহজ কাজ। তবে সবচেয়ে কঠিন ছিল রাহুল দ্রাবিড়কে আউট করা।’
নাভিদ অবশ্য ভুল কিছু বলেন নি। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে এই নাভিদই শেবাগকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে। ১৩ বারের দেখায় ৬ বারই তাঁকে আউট করেছেন এ বোলার। তবে ১৮ বছর আগের সেই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে নাভিদ উল হাসানের কিছুটা স্মৃতিবিভ্রমই হয়েছে।
প্রথমত তিনি ঐ ম্যাচটি জেতার কথা বললেও সে দিন ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতেছিল ভারতই। যদিও সিরিজ জিতেছিল পাকিস্তান। তাছাড়া, শেবাগ সেদিন ৮৫ রানে আউট হননি। তিনি আউট হয়েছিলেন ৭৪ রানে।