ক্রিকেটের বিশ্বায়ন ঘটাতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল এক যোগে একশতের বেশি দেশকে টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস দিয়েছিল। নবাগত দেশগুলোর মধ্যকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ তাই পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দেখা মিলেছে চমকপ্রদ সব রেকর্ডের।
এই যেমন মালয়েশিয়ার পেসার সিয়াজরুল ইদ্রাস গড়েছেন বিশ ওভারের ফরম্যাটের সেরা বোলিং ফিগার। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে আয়োজিত এশিয়া রিজিওনাল কোয়ালিফায়ার বি টুর্নামেন্টে চীনের বিপক্ষে ম্যাচে এই কীর্তি গড়েন তিনি। নিজের চার ওভারের স্পেলে স্রেফ আট রান খরচ করে সাত উইকেট তুলে নিয়েছেন ডানহাতি এই ফাস্ট বোলার। আর তাতেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গিয়েছেন তিনি।
নিজের দেশের বাইয়ুমাস ওভাল স্টেডিয়ামে এদিন চায়না ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেননি সিয়াজরুল ইদ্রাস। এক মেডেনের পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন একের পর এক উইকেট; শুধু সেরা বোলিং ফিগার-ই নয়, পুরুষ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথমবারের মত এক ইনিংসে সাত উইকেট পাওয়ার বিরল এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ইদ্রাস।
আর এতেই আরেক লজ্জার রেকর্ডের সাক্ষী হয়েছে মালয়েশিয়া-চীন ম্যাচ। ইদ্রাসের তান্ডবে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তৃতীয় সর্বনিন্ম রানে অলআউট হয়েছে চীন। বিশ্বের সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশটি মাত্র ২৩ রানেই থেমে গিয়েছে।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক অর্ধপরিচিত কোন ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের – এমন কিছু আগেও ঘটেছে। সিয়াজরুল ইদ্রাস যার রেকর্ড ভেঙেছেন, তিনি পিটার আহো। নাইজেরিয়ার এই ক্রিকেটার সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে ২০২১ সালে ছয় উইকেট শিকার করেছেন, বিনিময়ে খরচ করেছেন মাত্র ৫ রান।
নারী পুরুষ মিলিয়ে যদিও এমন বোলিং ফিগার অবিশ্বাস্য নয়। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইউরোপীয় কোয়ালিফাইং রাউন্ডে নেদারল্যান্ডস নারী দলের বোলার ফ্রেডেরিক ওভারডাইক সাতজন ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছিলেন। ফরাসি নারীদের বিপক্ষে তাঁর ৭/৩ বোলিং ফিগার এখন পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সবচেয়ে সেরা।
টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সেরা বোলিং ফিগার অবশ্য ভারতের দীপক চাহারের ঝুলিতে আছে; বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র সাত রানে ছয় উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। জয়ের পথে দারুণভাবে এগুতে থাকা টিম টাইগার্সকে সেদিন প্রায় একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন এই ডানহাতি। এছাড়া শ্রীলঙ্কার অজান্তা মেন্ডিসও পেয়েছেন এক ম্যাচে ছয় উইকেট পাওয়ার স্বাদ।
তবু নবাগত দেশের বলে সিয়াজরুল ইদ্রাসের অর্জনকে ছোট করা যায় না। পৃথিবীর কোন দেশই তো প্রতিপক্ষকে এমনি এমনি উইকেট উপহার দেয় না, বরং নিজের যোগ্যতায় অর্জন করে নিতে হয়। এছাড়া ইদ্রাসের এমন রেকর্ড নিঃসন্দেহে ছোট দলগুলোকে আরো ভাল করার অনুপ্রেরণা দিবে। তাই তো ক্রিকেটপ্রেমীদের হাত তালি এই পেসারের প্রাপ্য বটে।