অনুজ্জ্বল লিটনে অফুরন্ত অতৃপ্তি

বেশ আশা করেই লিটন দাসকে দলে ভিড়িয়েছিল সারে জ্যাগুয়ার্স। তবে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে যেন রয়ে গেছে বিস্তর ফারাক। দলের সহ-অধিনায়ক ধুকছেন রান খরায়। খানিকটা হতাশা ছেয়ে যাওয়ারই কথা। লিটন দাসের ব্যাটটা একেবারেই যেন নিষ্ফলা।

গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির তৃতীয় আসর। এ আসরে খুব একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে নেই সারে জ্যাগুয়ার্স। চার ম্যাচের একটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টির জলে। সেই ম্যাচটি বাদে একটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে জ্যাগুয়ার্স। ছয় দলের টুর্নামেন্টে তাদের অবস্থান পঞ্চম স্থানে।

গোটা দলই পারফরম করতে হচ্ছে ব্যর্থ। অধিকাংশ ম্যাচেই জ্যাগুয়ার্সদের ব্যাটিং ইনিউটের ব্যর্থতায় পরাজয় বহন করতে হয়েছে তাদের। সেখানে খানিকটা দায় তো লিটনের উপরও বর্তায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ তিনি।

তাছাড়া দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ের জন্যেও বেশ প্রশংসিত। এছাড়া গেল বছর দুরন্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। পাশাপাশি পাওয়ার প্লে-র যথাযথ ব্যবহারের একটা সুনাম রয়েছে তার। কিন্তু সেসবের কোন বাস্তবায়নই করতে পারছেন না তিনি। একেবারেই সাদামাটা এক পারফরমেন্সের দেখা মিলছে তার কাছ থেকে।

তিন ইনিংসে ব্যাট করেছেন লিটন। এর মধ্যে একটি ম্যাচে ওপেনিং করেছেন। সে ইনিংসে ১১ বলে ৯ রান করেন তিনি। বাকি দুই ইনিংসে তিনি তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। তবুও নিজের খোলসটা ছেড়ে বেড়িয়ে আসা হয়নি লিটনের।

তিন ইনিংসে ১৮ গড়ে ৫৫ রান করেছেন তিনি। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু বিষয় তার স্ট্রাইক রেট। ৯০ স্ট্রাইকরেটে লিটনের ব্যাটিংটা যেন চোখের জন্যে ভীষণ পীড়া দায়ক। শেষদিন ৩০ বলে ২৫ রান করেছেন লিটন। ৮৩ স্ট্রাইক রেটের এই ইনিংসে লিটন ডট বল খেলেছেন ১২টি ডট বল। এটাই মূলত প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে লিটনের গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে।

গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি আসরে একেবারেই অনুজ্জ্বল এক সময় তিনি পার করছেন। এখানেই সম্ভবত ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে পিছিয়ে যায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। সামান্যতম সুযোগগুলো ঠিকঠাক কাজে লাগাতে বরাবরই ব্যর্থ হন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

এর আগে ভারতের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে পাওয়া সুযোগটুকুও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন লিটন দাস। নিজের আইপিএল অভিষেকের ম্যাচটিতে ব্যাট হাতে পারফরম করতে পারেননি তিনি। তাছাড়া দৃষ্টিকটু এক রানআউট মিস করেও একাদশে নিজের জায়গা হুমকির মুখে ফেলে দেন লিটন।

তবে এখনও সারে জ্যাগুয়ার্স লিটনের উপরই ভরসা রাখছে। লিটন হয়ত নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসবেন। সেটাই বরং প্রয়োজন। তার দলের জন্যে যেমন, তেমনি নিজের জন্যেও প্রয়োজন। নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়াটা অতীব জরুরি।

এমনকি বাংলাদেশের জন্যেও বড্ড বেশি প্রয়োজন লিটনের ফর্মে ফেরা। লিটনকেই নেতৃত্ব দিতে হবে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ মিশনে। কেননা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে ঘিরে রয়েছে সংশয়। তিনি হয়ত খেলবেন, কিংবা খেলবেন না। তেমন এক পরিস্থিতিতে লিটনকেই সামলাতে হবে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের উদ্বোধনের।

এখনও সারে জ্যাগুয়ার্সের সামনে রয়েছে কোয়ালিফায়ারে যাওয়ার সুযোগ। সেই সুযোগটুকু পুরোপুরি ব্যবহারে করতেই নিশ্চয়ই চাইবেন লিটন কুমার দাস। স্বরুপের লিটন তো ভয়ংকর এক তাণ্ডব। ব্যাট দিয়ে হয় তখন জলোচ্ছ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link