ওয়ানডে ক্রিকেট বড়ই রহস্যময়, এর চেয়েও রহস্যময় সাত নম্বর পজিশন। কেননা কখনো এই পজিশনে নেমে খেলতে হয় টি-টোয়েন্টি সুলভ ঝড়ো ইনিংস কখনো আবার রয়ে সয়ে খেলে দিতে হয় ধৈর্যের পরিচয়। কিন্তু মহাগুরুত্বপূর্ণ এই পজিশনে এখনো ভরসা করার মত নির্দিষ্ট কাউকে পায়নি টিম বাংলাদেশ।
তাই তো এশিয়া কাপে এই একটা জায়গার জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে তিনজনকে – শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী আর মেহেদি হাসান মিরাজকে। যদিও একাদশে মিরাজের থাকাটা প্রায় নিশ্চিত, তবে তিনি সাত নম্বরে খেলবেন নাকি আটে সেটা বলা যাচ্ছে না।
বাকি দুজনের মধ্যে একজন অবশ্য ফিনিশারের দায়িত্ব পেতে পারেন, এছাড়া আফিফ হোসেনকেও রাখা হতে পারে ভাবনায়। সাত নম্বরে স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান খেলার সম্ভাবনা অবশ্য কম; কেননা টিম ম্যানেজম্যান্ট এমন কাউকে সুযোগ দিতে চায় যাকে ষষ্ঠ বোলার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।
তাই আট নম্বরে মিরাজকে রেখে সাতে দেখা যেতে পারে আরেক অফ স্পিনার শেখ মেহেদীকে। ইমার্জিং এশিয়া কাপে লোয়ার মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত খেলেছিলেন তিনি, পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার না হলেও ব্যাটিংটা জানা আছে তাঁর।
অন্যদিকে বোলিংয়ে একটু ছাড় দিয়ে ব্যাটিংকে গুরুত্ব দিলে নিশ্চিতভাবেই একাদশে থাকবেন শামিম হোসেন। তিনিও হাত ঘোরান মাঝে মাঝে তবে তাঁর মূল শক্তির জায়গা পাওয়ার হিটিং আর ক্ষিপ্রগতির ফিল্ডিং।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে পারফর্ম করে হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে আর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে মুগ্ধ করেছিলেন শামীম, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা হতে পারেন টাইগারদের এক্স ফ্যাক্টর৷
অন্যদিকে বাংলাদেশ যদি চার পেসারকে একসাথে খেলাতে চায় অথবা নাসুম আহমেদকে কাজে লাগাতে চায় সেক্ষেত্রে সাত নম্বরে দেখা যাবে মেহেদি হাসান মিরাজকে। বয়স ভিত্তিক দলে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর উত্থান ঘটেছিল বোলার হিসেবেই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণও দিয়েছেন মিরাজ। তাই সাত নম্বরে তাঁর উপর ভরসা রাখা হলে অবাক হওয়ার কোন কারণ থাকবে না।
যদিও এই তিনজনের কেউই এখন পর্যন্ত বলার মত কিছু করতে পারেননি। শামীম হোসেন তো আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেকের স্বাদই পাননি। শেখ মেহেদী খেলেছেন কেবল মাত্র তিন ম্যাচ, যেখানে একবার সাত নম্বরে ব্যাট করে ৭ রান করেছিলেন। বাকি দুইবার আটে খেলে করেছেন ১৪ ও ৩ রান।
তুলনামূলক বেশি ইনিংস খেললেও মেহেদী হাসান মিরাজের পরিসংখ্যানও গড়পড়তা। ১০ বার এই পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে করেছেন ১২৫ রান, গড় ১২.৫০। আর স্ট্রাইকরেট ৮০ ছুঁই ছুঁই। এর চেয়ে বরং আট নম্বরেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন মিরাজ, এখানে তাঁর ব্যাটিং গড় প্রায় দ্বিগুন, স্ট্রাইক রেটও কাছাকাছি।
এটা অন্তত স্পষ্ট যে, সংখ্যাতত্ত্বে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সাত নম্বরে কে খেলবেন সেটা তাই নিশ্চিত নয়; প্রতিপক্ষ আর গেমপ্ল্যান অনুযায়ী একেকদিন হয়তো একেকজন সুযোগ পাবেন। তবে কেউ একজন দারুণ কিছু করে ফেললে তাঁকে ঘিরেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করবে সাকিব আল হাসানের দল।