জিতলে ফাইনাল, হারলে ফিরতে হবে বাড়ি – বাঁচা মরার এই সমীকরণ সামনে রেখে মাঠে নেমেছিল সাকিব আল হাসানের গল টাইটান্স; বি-লাভ ক্যান্ডির বিপক্ষের ম্যাচটির গুরুত্ব তাই বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে দল হারলেও নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন লাল-সবুজের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
তবে যথেষ্ট ছিল না সেটা। কিপ্টে বোলিং আর ব্যাট হাতে ছোটখাটো অবদান রেখেও দলকে জেতাতে পারলেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সতীর্থ ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১৫৮ রানের মাঝারিমানের টার্গেট টপকাতে পারেনি তাঁর দল; হেরেছে ৩৪ রানের বড় ব্যবধানে। ফলে ফাইনাল না খেলে বাড়ি ফিরতে হবে দাসুন শানাকাদের।
টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বি-লাভ ক্যান্ডির ব্যাটারদের প্রথম থেকেই চাপে রাখেন গল টাইটান্সের পেসাররা। লাহিরু কুমারার দুই উইকেট আর কাসুন রাজিথার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা। এরপরই আক্রমণে এসে নিজের বোলিং নৈপুণ্য দেখান সাকিব আল হাসান।
পঞ্চম ওভারে তিন বলের দুইটিতেই কোন রান দেননি এই বামহাতি। পরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে আসা সাহান আরাচ্ছিগেকে পরাস্ত করেন তিনি। প্রথম প্রচেষ্টায় কিপার সোহান ডি লিভেরা বল গ্লাভস বন্দী করতে না পারায় ক্রিজে ফিরতে কয়েক সেকেন্ড সময় পেয়েছিলেন সাহান। তবে এই ব্যাটার এতটাই বাইরে চলে গিয়েছিলেন যে এই সময়টুকু যথেষ্ট ছিল না, শেষমেশ তাই প্যাভিলিয়নেই ফিরতে হয় তাঁকে।
ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে দুই বাউন্ডারিতে এগারো রান হজম করলেও পরের ওভারে ঠিকই রানের লাগাম টেনে ধরেন। দুই সেট ব্যাটসম্যান চান্দিমাল আর হাসারাঙ্গা সেই ওভারো মাত্র চার রান নিতে পেরেছিল। নিজের শেষ ওভারে আরো ক্ষুরধার ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সতেরোতম ওভারে বোলিংয়ে এসেও দিয়েছেন চারটা ডটবল, যদিও একটা ছয়ের মার সহ্য করতে হয়েছিল।
সবমিলিয়ে চার ওভারে ২৪ রানের বিনিময়ে এক উইকেট শিকার করেছেন সাকিব আল হাসান। দলের অন্য দুই স্পিনার তাব্রাইজ শামসি আর সেকুগে প্রসান্না যেখানে রান দিয়েছেন দুই হাতে, সেখানে সাকিব উল্টো ক্যান্ডির রানের গতি আটকে দিয়েছেন।
গল টাইটান্সের হয়ে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন আরেক বাংলাদেশী লিটন দাস। তাঁর সূচনাও হয়েছিল উড়ন্ত। মুজিবুর রহমানকে এক ওভারে তিন চার হাঁকিয়ে ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি, পরের ওভারে ইনোভেটিভ শটে আদায় করে নিয়েছিলেন আরেকটা চার।
তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি; পঞ্চম ওভারে চতুরাঙ্গা ডি সিলভার বলে অফ সাইডে এসে সুইপ শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন এই ডানহাতি; ১৯ বলে ২৫ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। যদিও একটা সময় মাত্র ১৩ বলেই ২৪ করেছিলেন এই ওপেনার।
আর কোন ব্যাটসম্যানই অবশ্য ভাল খেলতে পারেননি, তাই তো নির্ধারিত বিশ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২৩ রান করতে পেরেছে গল টাইটান্স। লিটন ছাড়া কেবল সোনাল দিসুনা বিশ রানের গন্ডি পেরিয়েছেন; যদিও তাঁর স্ট্রাইক রেট নব্বইয়ের কম।
গল বাদ পড়লেও বাংলাদেশী ক্রিকেটপ্রেমীরা অন্তত খুশি হতে পারে বোলার সাকিব আল হাসানের ধারাবাহিকতায়; যদিও লিটন দাস আর সাকিব ব্যাট হাতে দারুণ শুরু কাজে লাগাতে পারলে সেই খুশি আরো বাড়তে পারতো।