শুরুটা নিয়ন্ত্রিত এক স্ট্রেইট ড্রাইভ দিয়ে। এই মুহূর্তে সম্ভবত স্বস্তির বিষয় ব্যাট হাতে তামিম ইকবালের মাঠে। বেশ লম্বা এক বিরতির পরই মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে দেখা মিলেছে এমন চিত্রের।
কতশত জল্পনাকল্পনা, কতশত প্রশ্ন। সব কিছু ছাপিয়ে তামিম নেমেছেন তার ফেরার লড়াইয়ে। মূল লক্ষ্যটা অবশ্যই বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নেওয়া। তবে এর আগে তাকে প্রস্তুত হতে হবে নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য।
দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার থাকছেন না এশিয়া কাপে। সেটা নিশ্চয়ই সবার জানা। তার বদলি হিসেবে দলে সুযোগ পেয়েছেন অনভিজ্ঞ তানজিদ হাসান তামিম। বড্ড তরুণ ক্রিকেটার। তাকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে এশিয়া কাপের মত শক্ত চ্যালেঞ্জ।
তবে বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই প্রয়োজন হবে টাইগারদের। সে লক্ষ্যেই এখনই ক্রিকেট থেকে বিদায় নেননি তামিম। শুধু তাই নয়। বিশ্বকাপ খেলার ভাবনা থেকেই তামিম অস্ত্রপচার করবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি।
বরং ইনজেকশন নিয়ে ব্যথা উপশম করবার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টার একটা সবচেয়ে বড় সতর্কতা হচ্ছে যথাযথ ফিটনেস ট্রেনিং। এতদিন ধরে তিনি সেটাই করছিলেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার শুরুতে খানিকটা দৌড়ে বেড়ানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করছিলেন তামিম ইকবাল।
এরপর তিনি ব্যাট নিয়ে অনুশীলন শুরু করলেন আজই প্রথম। সেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন তিনি। এরপর প্রায় মাস খানেকের বিরতির পর হেলমেট মাথায় পড়েছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
ব্যাটিং অনুশীলনের প্রথম দিনে স্রেফ নকিং করেছেন তামিম। থ্রোয়ার বল ছুঁড়েছেন, তিনি ব্যাট চালিয়েছেন। যেন দেখার প্রচেষ্টা ব্যাটিং করলে ব্যথা আবার মাথাচাড়া দেয় কিনা। তবে তেমনটা আর হয়নি। তিনি বেশ লম্বা সময় ধরে নকিং করেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর ব্যাট চালালেও ব্যাটে বলে সংযোগ হয়েছে তার বেশ।
এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প চলছে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। মূল দলের অনুশীলন শেষে তামিমের আগমন ঘটে। ঘড়ি ধরে মিনিট পনেরো ব্যাটিং অনুশীলন করেন তামিম। শরীরের উপর বাড়তি কোন চান এখনই দিচ্ছেন না এই ওপেনার। বরং রয়েসয়ে শরীরকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তামিম ইকবাল খান।
ধীরে ধীরে অনুশীলনের সময় বাড়বে, সেই সাথে ইন্টেন্সিটিও বাড়াবেন তামিম। তবে এদিন তামিম ছাড়াও আরও বেশ ক’জন অনুশীলন করেছেন জাতীয় দলের অনুশীলন শেষে।
এটা অবশ্য আগে থেকেই অনুমিত ছিল। জাতীয় দলের রাডারের খুব কাছে থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে হবে একটি ‘ব্যাকআপ ক্যাম্প’, সে কথা সবারই জানা। এই ক্যাম্পের প্রাথমিক সদস্য তাইজুল, সৌম্য, মোসাদ্দেক ও সাইফ।
তারা প্রথমে খানিকক্ষণ গা গরম করেছেন। এরপর তারাও নেট অনুশীলন শুরু করেন। তারাও নিজেদের প্রস্তুত রাখছেন বিশ্বকাপের জন্য। বিশ্বকাপের দীর্ঘ যাত্রায় যেকোন পরিস্থিতির উৎপত্তি ঘটতে পারে। সব রকম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে বাংলাদেশ।
তবে তামিমকে এখনও বিশ্বকাপের মূল দলের ভাবনাতেই রাখা হয়েছে। অপেক্ষা শুধু তার ফিরে আসার। প্রতাপের সাথেই হয়ত ফিরবেন তামিম। সময় হয়ত দিয়ে দেবে সকল উত্তর। শুধু দলের নয়,ওপেনিংয়ে ধুঁকতে থাকা লিটনেরও সম্ভবত তামিমকে প্রয়োজন উইকেটের অপরপ্রান্তে।